২৯ এপ্রিল ২০২৪ / ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:৫৩/ সোমবার
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ২:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের বন্যাকবলিত অসহায় দুঃস্থ মানুষের পাশে এগিয়ে আসুন

     

মাহমুদুল হক আনসারী
বিরতিহীন বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, পটিয়া, বোয়ালখালী, ফটিকছড়িসহ পুরো চট্টগ্রাম জেলার উপজেলার লাখ লাখ মানুষ পানি বন্দী। তাদের বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। গবাদিপশু জমির চারা সবকিছু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কৃষক বৃষ্টির পানির জন্য কান্না করেছিল। আল্লাহ বৃষ্টি দিয়েছেন, প্রচুর বৃষ্টির পানি আর জোয়ারের পানিতে বীজ আর জমি একাকার হয়ে গেছে। কৃষকের মাথায় হাত। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অলিগলির দোকানে পানি। বাড়িঘর ডুবে গেছে, চুলা জ¦লছেনা। এদিকে শহরের চেয়ে গ্রামের হাট বাজারের সমস্ত নিত্য পণ্যের মূল্য ৩-৪ গুণ বেড়ে গেছে। জমির তরিতরকারি শাকসবজি সবাই পানির নিচে।
তাই সবজির দাম ডাবল। পুকুর জলাশয় ডুবে মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষক দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের দিন যাচ্ছে খুবই কঠিনভাবে। চাল ডাল মরিচ মসলা পিয়াজ রসুন সব ধরনের মুদি দোকান আইটেমের মূল্য চড়া। খেয়ে না খেয়ে হাজার হাজার পরিবার এখন রাত কাটাচ্ছে। পরিবারের শিশুদের অন্ন জোগাতে দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষরা চরমভাবে অভাব অনটন পার করছে। এই সুযোগে স্থানীয় সুধী মহাজন স্বর্ণালংকার বন্ধক নিয়ে চড়ামূল্যে সুদ লাগাচ্ছে। গ্রামের পঁচানব্বই ভাগ মানুষ এখন চরমভাবে খাদ্যাভাব ও অর্থ সংকটে পরে গেছে। কক্সবাজার, বান্দরবান চট্টগ্রাম শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। যান চলাচল বন্ধ। বৃহত্তর চট্টগ্রামের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পাহাড়ি পানি জোয়ারের পানিতে বৃহত্তর চট্টগ্রাম এখন পানিবন্দী। মানুষ ঘর হতে বের হতে পারছে না। কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের খাবার জোগাড় করতে পারছে না। এ অঞ্চলের মানুষ এখন চরমভাবে প্রাকৃতিক বন্যার শিকার। এই মুহূর্তে সরকারি বেসরকারি সাহায্য সংস্থাকে ভুক্তভোগী জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে অসহায় পানিবন্দী মানুষের পাশে এগিয়ে আসতে হবে। ত্রাণ কার্যক্রম অবশ্যই স্বচ্ছতার মাধ্যমে করতে হবে। রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় না রেখে প্রকৃত অভাবী ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের ঠিকানায় পৌঁছাতে হবে।
স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় অতি দ্রæততার সাথে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হোক। চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। চট্টগ্রামে অনেক বড় বড় শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, ব্যাংক চেয়ারম্যান আছে। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক ধনী ব্যক্তি আছে। সরকারের পাশাপাশি নিজ এলাকায় এই মুহূর্তে বন্যায় মানুষের পাশে এগিয়ে আসুন। মানব সেবায় আপনার অর্থ ব্যয় করে সম্পদ আরো বৃদ্ধি করুন। মহান সৃষ্টিকর্তা ধনী গরীবের মধ্যে একটি তফাৎ রাখেন। ধনীরা প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক গরিব মানুষ দিনে এনে দিনে খায়। উপার্জন করে খুব কষ্ট আর পরিশ্রম করে। তারা পরিশ্রমে বিশ্বাসী।
কিন্তু যখন পরিশ্রম বন্ধ হয়ে যায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর বন্যার খরায় তখন তাদের দিন কাটে অনাহার ও অর্ধাহারে। কিন্তু ধনীদের অর্থের পাহাড় নানাভাবে তাদের প্রচুর অর্থ আছে। সেই জমাকৃত অর্থ থেকে এগিয়ে আসুন। সকলকেই নির্দিষ্ট একটি সময় অতিবাহিত করে পার করে চলে যেতে হবে। তাই অর্থের প্রাচুর্য সঞ্চয় না করে অসহায় মানুষের পাশে থাকি।
সেখানে আপনার আমার জন্য পরকালের আশ্রয় হবে। মুক্তির পথে হবে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে। উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ, মেরামত করতে হবে। শহর ও গ্রামের বৃষ্টির পানি যাতায়াত বিজ্ঞানভিত্তিক পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। স্থানীয়ভাবে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকান্ড সঠিকভাবে টেকসই মাত্রায় বুঝে নিতে হবে। উন্নয়নের অর্থ লুটপাট বন্ধ করতে হবে। কাজের মান তদারকী বিল পাশ ইত্যাদির মধ্যে শতভাগ স্বচ্ছতা থাকা চাই। আসুন ধনী গরিবের পর্দা তুলে মানবসেবায় অসহায় বন্যার্থ জনগণের পাশে দাঁড়াই।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply