রূপসা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গ্রাহকের আমানতের শতকোটি টাকা লোপাটের পাঁয়তারা
বিশেষ প্রতিবেদক
নগরীর সিইপিজেডস্থ রূপসা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের লক্ষাধিক গার্মেন্টস্ শ্রমিকের কষ্টার্জিত আমানতের শতকোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। রক্ষিত টাকা আদায়ের দাবী নিয়ে শুক্রবার ২৭ আগষ্ট সকাল সাড়ে দশটায় সিইপিজেড মোড় বিমানবন্দর সড়কটি প্রায় দু’ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, রূপসা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় সিইপিজেড এর চৌধুরী মার্কেটের ২য় তলায় রূপসা অফিসে পূর্বের নির্ধারিত গ্রাহকদের আমানতের টাকা ফেরত দেয়ার দিন ধার্য থাকলেও অফিস সম্মূখে হাজার হাজার গ্রাহকরা ভীড় জমায়। কিন্তু অফিসে কোন কর্মকর্তা কর্মচারীর উপস্থিতি না পেয়ে গ্রাহকরা উত্তেজিত হয়ে ইপিজডে মোড়ে রাস্তায় নেমে প্রধান সড়ক অবরোধ করে।
পরবর্তীতে ইপিজেড থানা পুলিশ তদন্ত (ওসি) নুরুল বাশার ঘটনাস্থলে এসে গ্রাহকদের টাকার সাত্বনা দিয়ে বলেন যে, আপনারা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেন বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন এবং উপস্থিত গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঘটনা সূত্রে আছমা নামক এক ভুক্তভোগী গ্রাহক জানায়, রূপসা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চাকচিক্যপূর্ণ বিলাস বহুল অফিস লোভনীয় প্রলোভনে পড়ে আমরা নিরীহ গার্মেন্টস শ্রমিকরা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় আমাদের জীবনের সর্বস্ব উপার্জিত শেষ সম্বলটুকু রূপসায় জমা রাখি। কিন্তু এখন আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। যার কারণে আমাদের অনেক নিরীহ গ্রাহকের সংসার ভেঙ্গে গেছে, দেউলিয়া হয়ে গেছে অনেক ক্ষুদে ব্যবসায়ী, পথে বসেছে অনেক সাধারণ মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী গ্রাহক জানান; ইপিজেড এর বিভিন্ন শ্রেণীর শ্রমিক, হতদরিদ্র দিনমজুর, রিক্সাচালক, সরকারী অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা- কর্মচারী, ক্ষুদে ব্যবসায়ী ও গার্মেন্টস্ শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অর্থ রূপসায় জমা রয়েছে।
তিনি আরো জানান, তাদের এমন লোভনীয় প্রলোভনে পড়ে হাজার হাজার গ্রাহকদের দিশহারা হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, রূপসার পরিচালকদের মধ্যে রয়েছে চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান (রিক্সা কোম্পানী), ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন হাওলাদার, পরিচালক এজাজ, রাসেল হাওলাদার, মোঃ মুছা ও পলাশসহ এক সিন্ডিকেট। যাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনে রূপসার আজ এই পরিণতি। সর্বদায় তারা মেতে থাকেন মদ, জুয়া, ও নারী আসক্তে, মাত্র ৪ বছর পূর্বেও রিক্সা ও পায়ে হেঁটে অফিসে আসলেও বর্তমানে প্রত্যেক পরিচালক, চেয়ারম্যান ও ম্যানেজারের নামে-বেনামে রয়েছে প্লট-প্ল্যাট, ব্যাংকে মোটা অংকের টাকা, প্রিমিও গাড়ী ও আলিশান বাড়ী। যার কারণে রূপসা এখন দেউলিয়ার পথে। সড়ক অবরোধের সময় গ্রাহকদের আমানতের টাকা সঠিক সময়ে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের দাবী জানান। গ্রাহকের টাকা সঠিক সময়ে ফেরত না দেয়ায় এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। যার কারণে যে কোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের অঘটন। তাই দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের দাবী, তাদের আমানতের টাকা ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানায়।