বিশেষ প্রতিনিধি

   গাছ পাচার বন্ধে পদুয়া ফরেস্ট চেক ষ্টেশন থাকলেও কাঠ পাচার মোটই বন্ধ হচ্ছে না। এই ষ্টেশন যেন অবৈধ চাঁদা তোলার বৈধ ঘাটে পরিণত হয়েছে। সাধারণ লোকজনসহ যেই কেউই অনুসন্ধানী দৃষ্ঠিতে লক্ষ্য কাঠ পাচার ও চাঁদা তোলার দৃশ্য সহজেই চোখে পড়বে।  বনের গাছ কাটা, জোত বিক্রি ও পারমিট সরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও অবৈধ  লেনদেনের বিনিময়ে পাচারে সহযোগিতা করছেন  খোদ ফরেস্ট চেক স্টেশন ও রেঞ্জ কর্মকর্তা দুইজনই । অন্যরা হুকুম পালন করে মাত্র।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের পদুয়া রেঞ্জের ফরেষ্ট চেক স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন অবাধে পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকার কাঠ। পদুয়া ফরেস্ট চেক স্টেশনের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাঠ চোর সিন্ডিকেটের যোগসাজশে দিনরাত পাচার হয় এসব কাঠ। কাঠ পাচারে দৈনিক অবৈধ লেনদেন প্রায় লাখ টাকা। এভাবে প্রতিমাসে অন্তত ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পদুয়া ফরেস্ট চেক স্টেশন ও রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মনুজুর মোরশেদ।

অভিযোগ উঠেছে, মাসিক মাসোহারায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য উর্ধতন কর্মকর্তারা।স্থানীয়রা জানান, মোঃ মনজুর মোরশেদ একাধারে পদুয়া রেঞ্জের কর্মকর্তা, হাংগর বিটের কর্মকর্তা এবং পদুয়া চেকপোস্টের কর্মকর্তা সহ মোট তিনটার দায়িত্ব পালন করছেন। যার কারণে চেকপোস্টের যে কোন অবৈধ কাজ করতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতির প্রয়োজন পড়ছে না। ফলে তিনি অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে সহজেই হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অংকের টাকা।

 জানা যায়, পদুয়া চেক পোস্টের উপর দিয়ে প্রতিদিন বাঁশের গাড়ি, গাছের গাড়ি, ফার্নিচারের গাড়ি, কাঠের গাড়িসহ অন্তত অর্ধ শতাধিক গাড়ি চলাচল করে। এসব অবৈধ গাড়ি চেক পোস্ট পার করতে দায়িত্বরত বন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গাড়ি প্রতি ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।  বাশের গাড়ি থেকে নেওয়া ১ হাজার টাকা, গাছের গাড়ি থেকে প্রকারভেদে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা, ফার্ণিচারের গাড়ি থেকে প্রকারভেদে ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা ও স্থানীয় কাঠ বোঝাই ট্রলি থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়। এছাড়াও পদুয়া রেঞ্জের আওতাধীন এলাকার ফার্ণিচার দোকান সমিতি থেকে প্রতিবছর কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অবস্থাদৃষ্ঠে দেখা যায় পদুয়া বন বিভাগের রেঞ্জ ও স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুর মোরশেদের দুর্নীতির মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, মনে হয় সরকার তাকে ঘুষ নেওয়ার লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে। ঘুষ নেওয়ার বাইরে যেন তার আর কোনো কাজ নেই।

এই বিষয়ে জানার জন্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও  ফোন রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। মেসেজ দিয়েও সাড়া মেলেনি।

শেয়ার করুনঃ