চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি (সহ-সভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ও জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত চারটার দিকে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের অনানুষ্ঠানিকভাবে চাকসুতে ঘোষিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চাকসুর ১৪টি হলের ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২২১টি আর জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২৯৫টি। অন্যদিকে এজিএস পদে আইয়ুবুর রহমান তৌফিক ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪১টি। বুধবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়েছেন ৪৯৩ জন। চাকসু নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত একটার পর দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অধ্যাপক কামাল মুক্ত হন। এর আগে দিনভর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের বাইরে ছাত্রদলের সমর্থনে বিএনপি ও ছাত্রশিবিরের সমর্থনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা আশেপাশে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার পাশে থাকলেও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাত একটা পর্যন্ত তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাতেই ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

২৬ পদের ২৪টিতেই শিবিরের জয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। কেন্দ্রীয় সংসদের মোট ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতেই জয় পেয়েছেন তাদের প্রার্থীরা। বাকি দুটি পদে একটি ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল থেকে এবং অন্যটি ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল থেকে প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর ৪টায় চবির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ভিপি পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ইব্রাহিম হোসেন রনি ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।
জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের শাফায়েত হোসেন পেয়েছেন ২ হাজার ৭১৪ ভোট। এজিএস পদে একমাত্র ব্যতিক্রম ঘটেড়এ পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের আইয়ুবুর রহমান তাওফিক, যিনি পেয়েছেন ৭হাজার ১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রশিবিরের সাজ্জাত হোছন মুন্না পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট। অন্য পদে বিজয়ীরা হলেন- খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক: মোহাম্মদ শাওন, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক: তামান্না মাহবুব প্রীতি (বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য)।
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক: হারেজ মাতব্বর, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃ তি ও প্রকাশনা সম্পাদক: জিহাদ হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক: আব্দুল্লাহ আল নোমান (৩,২৫৮ ভোট)- কাছাকাছি প্রতিদ্বন্দ্বী তাহসান হাবিব (৩ হাজার ২৩৬ ভোট), সহ-দপ্তর সম্পাদক: জান্নাতুল আদন নুসরাত, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক: নাহিমা আক্তার দ্বীপা, সহ-ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক: জান্নাতুল ফেরদৌস রিতা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক: মো. মাহবুবুর রহমান, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক: তানভীর আঞ্জুম শোভন, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক: তাহসিনা রহমান, স্বাস্থ্য সম্পাদক: আফনান হোসাইন ইমরান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক: মো. মোনায়েম শরীফ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক: মেহেদী হাসান সোহান, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক: মো. ইসহাক ভূঞা, সহ-যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক: ওবায়দুল হক।

শেয়ার করুনঃ