২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৭:২৯/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ

সাংবাদিকতা কার স্বার্থে!

     

 

মাহমুদুল হক আনসারী

 

সংবাদ ও সাংবাদিকতা জনস্বার্থে।সংবাদ যারা তৈরী করে তারা সাংবাদিক।আর যে মাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয় সেটি সংবাদপত্র।সাংবাদিকতা আর সংবাদপত্র অঙ্গাগীভাবে জড়িত।সংবাদপত্র সমাজের আয়না।রাষ্ট্রের ভালো মন্দ দিক তুলে আনে সাংবাদিকগণ।সাংবিধানিকভাবে সংবাদ ও সংবাদপত্র বৈধ একটি সামাজিক প্রতিষ্টান।সংবাদপত্রের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন দুর্নীতি জনসম্মুখে প্রকাশ পায়।রাষ্ট্রের উন্নয়নে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার প্রয়াস খাটো করে দেখার মতো নয়।দেশে বিদেশে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মোকবিলা করে সংবাদিক তাদের এ পেশাকে জাতির স্বার্থে অব্যাহত রেখেছে।প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী বহু সাংবাদিক নানাভাবে নির্যাতন ও জুলুমের শিকার হচ্ছে।বর্তমান বিশ্বে আধুনিকতার পরিবেশেও এ নির্যাতন কোনো ক্রমেই কমছে না।তারা নির্যাতিত হচ্ছে কখনো রাষ্ট্রের কর্ণধার থেকে,কখনো আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে,কখনো রাজনৈতিক ক্যাডারদের হাতে।আবার কখনো মাস্তান,ভূমিদস্যু,জলদস্যু,মাদক ও চোরা কারবারিদের হাতে।ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিবেদন অথবা বস্তুনিষ্ট সংবাদ তাদেরকে ব্যাথিত করলে সেক্ষেত্রেও সাংবাদিক ওসংবাদপত্রের বিরোদ্ধেনেমে আসে মামলা হামলা ও নির্যাতন।তথ্য প্রযুক্তির আধুনিক এ সমাজে কোনো তথ্য গোপন করে রাখার উপায় নেই।যেকোন ভাবেই তথ্য বেরিয়ে আসবেই।সঠিক ভাবে তথ্য উপাত্ত পেলে সেক্ষেত্রে নিউজ প্রতিবেদন তৈরী করা অথবা প্রচার করতে দোষের কী?সাংবাদিক ও মিড়িয়া এ সংবাদ প্রচার করলে কারো না কারো গায়ে তো লাগবেই।সেক্ষেত্রে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা থেমে থাকতে পারে না।সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক নির্যাতনের বেশ কয়েকটি ঘটনা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে।সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় বরিশালের ডিবিসির ক্যামরা পার্সন সাংবাদিক সুমন হাসানকে স্থানীয় গোয়েন্দা পুলিশ অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করেছে।সংবাদে জানা যায় তিনি তার একজন নিকট আত্নীয়ের সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।পেশাগত দায়িত্ব পালন করতেগিয়ে পুলিশের সাথে তার কিছু কথা কাটাকাটি হয়।এতে পুলিশ দলবদ্ধভাবেতার উপর চরমভাবে মধ্য যুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়।চট্টগ্রামে একজন তরুণ সাংবাদিক আফসার উদ্দিন লিটননামের সাপ্তাহিক চাটঁগা সংবাদের প্রতিবেদক পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সরকারিকতিপয় কর্মকর্তার হাতে হেনস্থা হন বলে জানা যায়।নগরীর কতিপয় ভূমিদস্যু অব্যাহতভাবে পাহাড় কাটা সরকারি জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করার কারণে কতিপয় সাংবাদিককে হুমকি দিচ্ছে বলে জানা যায়।এসব ভূমিদস্যুরা প্রশাসন ও রাজনৈতিক চত্রছায়ায় এভাবে পাহাড় ও পরিবেশকে ধ্বংস করছে।এভাবে বর্তমান সময়ে দেশ মাটি মানুষ ও পরিবেশের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকগণ পেশাগত দায়িত্ব পালনে অনেক ঝুঁকিতে।তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্রের আগামী দিনের ভবিষৎ কী দাঁড়ায়?কার কাছে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের নিরাপত্তা সে প্রশ্ন ছোড়ে দিলাম জাতির সামনে।মানবাধিকার নাগরিক অধিকার জন অধিকার কে দেখবে?সমাজের তৃণমূলের চিত্র সাংবাদিক সমাজ তুলে না আনলে এ দায়িত্ব কারা পালন করবে।জাতির বিবেক ও সমাজের আয়না হিসেবে দেখে সংবাদপত্রকে।তাহলে কেনই বা বারবার অব্যাহতভাবে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টর সাংবাদিককে হয়রানি করবে।অবশ্যই এ ধরনের গর্হিত সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধিএবং প্রচলিত দেশের সংবিধান বিরোধি জঘন্য অপরাধ বন্ধ করতে হবে।ক্ষমতার বাইরে থাকলে সংবাদ ও সাংবাদিক বান্ধব বক্তব্য,আর ক্ষমতায় থাকলে সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বিরোধি দমন নিপিড়ন আর নির্যাতন কখনো মেনে নেয়া যায় না।রাষ্ট্রের কর্তাদের সুন্দর সুন্দর বক্তব্য আর কথার সাথে সাংবাদিকতার নিরাপত্তা মিল পাওয়া যাচ্ছে না।কথা ও কাজে মিল চায় সাংবাদিক সমাজ।স্বাধীনভাবে এ পেশার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করা গ্রহনযোগ্য নয়।যেকোন সময় যেকোন পরিস্থিতিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সংবাদকর্মীকে অবশ্যই প্রশাসনকে সাহায্য করতে হবে।তথ্য অধিকার আইনের সমস্ত ধারা বাস্তবায়ন চাই।সাংবাদিক নির্যাতন মামলা হামলা ও এ ধরনের অপরাধের সাথে যারা সম্পৃক্ত অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোরভাবে শাস্তি চায় জনগন।তবেই দেশে আইনের শাসন অব্যাহত থাকবে।মনে রাখতে হবে সংবাদপত্র ও সাংবাদিক নির্যাতন করে কখনো কোনো জালিম বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply