প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে মব সৃষ্টি করে নৃশংস হামলাকে ভিন্ন মত ও চিন্তা দমনের লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ৩৮ জন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নাগরিক।
নাগরিকবৃন্দ আজ ৩০ মে,২০২৫ গণমাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,“যে কায়দায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে “শাহবাগবিরোধী ঐক্য মঞ্চ’ এর নামে মব সৃষ্টি করে হামলা করা হয়েছে,তিনজন গুরুতর আহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে,তা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়মুক্ত পরিবেশে স্বাধীন মত প্রকাশ ও চর্চা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে,তা নস্যাতেরই অপচেষ্টা এ হামলা ভিন্ন মত ও চিন্তা দমনের লক্ষ্যে একটি পরিকল্পিত ও কাপুরোষিত ফ্যাসিবাদী আক্রমণ। আমরা জেনেছি,গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার ক্রুটিপূর্ণ বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের প্রতিবাদ জানাতে এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর যদি এটিকে সঠিক মনে না হয়,তাদের আলাদাভাবে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ নামে উচ্ছৃঙ্খল মব সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের উপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। বাস্তবে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ নামের ব্যানারের আড়ালে ’৭১ এর স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র এ হামলার সাথে যুক্ত বলে ইতোমধ্যে প্রতীয়মান হয়েছে।হামলার সময় তারা জুলাই আন্দোলনে লড়াই করা ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্যে ‘ফ্যাসিবাাদের দোসর’,”আওয়ামীলীগের দোসর’,’শাহবাগী’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দেয়,অথচ গুরুতর আহত রিপা মজুমদার ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের সামনের সারির নেতা,আরেকজন গুরুতর আহত শ্রীকান্ত বিশ্বাস আন্দোলন চলাকালীন ৪ আগস্ট নিউমার্কেটে ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন। গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মতো বামপন্থী ছাত্র সংগঠনসমূহ দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে,বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বার বার হামলার শিকার হয়েছে।আজ যারা ফ্যসিবাদের দোসর ট্যাগ দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের উপর হামলা চালালো,তারা ছাত্রলীগের মতোই ফ্যাসিবাদী চেহারা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। ”
নাগরিকবৃন্দ বিবৃতিতে আরো বলেন,,“জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছিলো গণতান্ত্রিক অধিকার,ভিন্ন মত-চিন্তা-কথা বলার অধিকার, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য। কিন্তু ভিন্ন মত- সংগঠনের উপর এ ধরণের বর্বর হামলা জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।
দুঃখজনক হলো, ছাত্রনেতা এ্যানি চৌধুরী,রিপা মজুমদারদের উপর ঘৃণ্য হামলাকারী জামাতকর্মী আকাশ চৌধুরীসহ চিহ্নিত হামলাকারীদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ”
বিবৃতিতে নাগরিকবৃন্দ অবিলম্বে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ও চট্টগ্রাম পুলিশ প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
বিবৃতি দাতারা হলেন লেখিকা ফেরদৌস আরা আলীম, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান,চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতিসাবেক সাধারণ সম্পাদক এড.আখতার কবির চৌধুরী, গণতান্ত্রিক অধিকার আন্দোলনের আহবায়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জি এইচ হাবীব, সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ মুনির, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, কবি ও লেখক ডাঃ ঋষিন দস্তিদার,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর রাজী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েমা আলম,বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিঞা,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুনমুন নেছা, সাবেক ছাত্রনেতা ও ব্যাংকার নুরুল আরশাদ চৌধুরী,চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য্য সোমা,
স্বপ্ননগর বিদ্যানিকেতন সমন্বয়কারী, ধ্রুব জ্যোতি হোড়,কবি ও লেখক সৈকত দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক জিহান করিম, ,লেখক মেহেরুন্নেসা নিপীড়ন বিরোধী আইনজীবি মঞ্চের আহবায়ক এড ভুলন ভৌমিক, মোহছেন আওলিয়া ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক জুলেখা আক্তার গবেষকড.ঈশিতা দস্তিদার,আইনজীবি ও লেখক মুজিবুল হক,,সমাজ সমীক্ষা সংঘের পরিচালক শিহাব চৌধুরী বিপ্লব,নিপীড়ন বিরোধী আইনজীবি মঞ্চের এড.বিশুময় দেব,বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের প্রকৌশলী সিঞ্চন ভৌমিক,শিক্ষা করিকুলাম আন্দোলন অভিভাবক ফোরামের মাসুদ মুন্না,আইনজীবি আমির আব্বাস তাপু ও শফি উদ্দিন কবির আবিদ,গণঅধিকার চর্চা কেন্দ্রের সদস্য সচিব মশিউর রহমান খান, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি আসমা আক্তার, সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, শিক্ষক প্রবাল মজুমদার, মিশু দত্ত,বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ও কলিন চাকমা , পরিবেশ আন্দোলন কর্মী ঋতু পারভীন, ছাত্রনেতা হামিদ উদ্দিন,বাচিক শিল্পী এম কাইছার উদ্দীন,স্বপ্ন বাগিচা বিদ্যানিকেতনের সমন্বয়ক জাহেদ আহমেদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা অধিকার রক্ষা পরিষদের সদস্য সচিব জ্যোতি বড়ুয়া।



