২৯ এপ্রিল ২০২৪ / ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৬:৫৫/ সোমবার
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

মেলার নামে লটারী পতেঙ্গায় পতিতালয় বন্ধের পর এবার চলছে জুয়া

     

পতেঙ্গা প্রতিনিধি

পতেঙ্গায় পতিতালয় বন্ধের পর এবার চলছে জুয়া । মেলার নামে লটারী দিয়ে জাত জুয়ারুরা সাধারণ মানুষকে পুরুষ্কারের লোভ  দেখিয়ে দিন দিন নিঃস্ব করে দিচ্ছে ।প্রতি রাতে অনুষ্ঠিত হয় লটারীর ড্র  ।                                                             

৫০০ টাকা থেকে ৫ ও ১০ হাজার টাকার টিকেট কিনে গভীর রাতে খালি হাতে ফেরার পর অশান্তি শুরু হয় ওই ঘরে ।   তারপরও পরের দিন আবারো মোটর সাইকেল, গরু ও মহিষ  পাবার আশায় প্রতিদিন টিকেট কিনে প্রতিদিন খালি হাতে ফিরে ওরা।।এই দশা পতেঙ্গা এলাকায় ।

জানা গেছে, আজ থেকে মাসখানিক আগে পতেঙ্গায় নিরিবিলি হোটেলসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় পতিতাবৃত্তি হতো। পুলিশ পেত মাসোহারা ।স্হানীয় এলাকাবাসীর সাথে হোটেল মালিকের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।হোটেল মালিক মিথ্যা অজুহাতে দূর্নীতিবাজ পুলিশের সহায়তায় মামলাও করে। এই কারণে এলাকাবাসী ক্ষোভে ও বিক্ষোভে ফুঁসে উঠে। এলাকাবাসী এই অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে পতেঙ্গায় মানববন্ধন ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করে।এই ঘটনার জের ধরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  বদলি হন ও অবশেষে মামলাটিও প্রত্যাহার করা হয়।

একমাস আগে পতেঙ্গা থানার পূর্ব কাটগড় কন্ট্রোল মোড়ে শুরু হওয়া হস্তবস্ত্র কুটির শিল্প মেলা । প্রথমে প্রবেশ টিকেটের উপর লটারি থাকলেও গত ৮দিন ধরে গোটা এলাকায় বিক্রি হচ্ছে লটারির কুপন। সেখানে দেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন ৪৭টি পুরস্কার। শতাধিক গাড়ীর মাধ্যমে প্রকাশ্য মাইকিং করে শব্দদুষণ করে প্রচারের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে এই টিকেট। প্রতিটি টিকেটের মূল্য ২০ টাকা। প্রতিটি গাড়িতে বিক্রি হচ্ছে কম পক্ষে ১৫০০-২০০০ টিকেট। এভাবে দৈনিক ১০ থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র।

পতেঙ্গা ও ইপিজেড এই দুই থানা এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ‘লটারি’। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নগরের পতেঙ্গা ও ইপিজেড এলাকায় অলি গলিতে বিক্রি হচ্ছে এসব লটারির টিকেট।প্রচারের জন্য অনুমোদনও নেই এসব গাড়ীর ।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে , মেলার শুরু থেকে প্রবেশ কুপনের উপর লটারিতে পুরস্কার দেয় মেলা কর্তৃপক্ষ। কিন্ত গত ৮ দিন ধরে হঠাৎ শতাধিক প্রচার গাড়িতে করে পতেঙ্গা-ইপিজেডের অলি গলিতে বিক্রি শুরু হলে হাজার হাজার কুপন কিনছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।দিনমজুর, রিকশার ড্রাইভার, গার্মেন্টস কর্মী থেকে শুরু করে এলাকার যুবক, এমনকি ছাত্র/ছাত্রী পর্যন্ত সবাই মেতে উঠেছে এই লটারি নামক খেলায়।

পতেঙ্গা- ইপিজেড গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকা। এরা সবাই নিম্ন আয়ের এবং অল্প শিক্ষিত মানুষ। এটাকে কাজে লাগিয়ে কিছু দুষ্ঠচক্র এই এলাকায় মেলা ও লটারির নামে জুয়ার আয়োজন করে। আকর্ষনীয় পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। চক্রগুলো প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসব করছে বলে আয়োজক দাবী করে থাকে। গত বছরও এলিট হলে একটি চক্র মাসব্যাপি মেলা ও লটারির নামে জুয়ার আসর বসিয়েছিল।কানা মাসুদ এটি তখন পরিচালনা করছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর এটি মাঝপথে বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ।

কন্ট্রোল মোড়ের এই মেলাটি বসিয়েছে জাবেদ ও মাসুদ নামের দুই যুবক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পতেঙ্গা থানার পূর্ব কাটগড় এলাকার কন্ট্রোল মোড়ে বিমান বাহিনীর খালি জায়গায় ‘হস্তবস্ত্র কুটির শিল্প মেলা’ নামের একটি মেলা করার অনুমতি নেয় স্থানীয় জাবেদ ও মাসুদ নামের দুই যুবক। এ মেলায় আজিম নামক এক ব্যাক্তি অর্থ জোগান দেয়। সুলতান, শাহ আলম ও রাজুও এই সিন্ডিকেটে জড়িত। এরা সবাই জাত জুয়ারু বলে একটি সুত্র দাবী করছে ।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, লটারি বিক্রির বিষয়টি আমি জানিনা। আমার জানামতে তারা প্রবেশ কুপনে লটারি করে। গাড়ি দিয়ে কুপন বিক্রির বিষয়টি আমি খবর নিয়ে দেখছি।

সিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সুলতানা বলেন, বিষয়টি সত্য হলে বন্ধ করতে এখনই ওসিকে নির্দেশ দিচ্ছি।

 

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply