চট্টগ্রামে জমজমাট চসিক নির্বাচনী প্রচারনা ইসির নিরেপক্ষতা চাইলেন ডাঃ শাহাদাৎ : উন্নয়নের নব দুয়ার খুলার ঘোষনা রেজাউলের
হোসেন বাবলা
জুমার নামাজ শেষে হযরত আমানত শাহ (রাঃ) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন বিএনপির দলীয় মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। পরে নেতাকর্মী, সমর্থকদের বিশাল বহর নিয়ে তিনি নগরীর আন্দরকিল্লাহ এলাকায় সমাবেশ করেছেন।বিএনপির আহবায়ক ও চসিক মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা সমুন্নত রাখতেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বিগত নির্বাচনগুলোতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট চুরির যে মহোৎসব দেখেছে তাতে ভোটারেরা আতংকিত। তাই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় জনগণ ভোট কেন্দ্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে এই নির্বাচন কমিশন কবে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। তিনি প্রশাসন ও ইসিকে চসিক নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভুমিকা রাখার আহবান জানান।
নগরীর জেল রোড মাজার গেট থেকে প্রচারণা শুরু হয়ে বান্ডেল রোড, বংশাল রোড, ফিরিঙ্গিবাজার মোড়, কোতোয়ালী মোড়, লালদিঘিরপাড়, বক্সিরহাট হয়ে আন্দরকিল্লার মোড়ে পথসভায় মাধ্যমে শেষ হয়।এ সময় ধানের শীষের প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে বিশ্বের কাছে অন্যতম পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তুলবো। কর্ণফুলী নদীকে পরিবেশ বান্ধব করে চট্টগ্রামকে হেলদি সিটিতে রূপান্তরিত করবো। জনগণের পাশে থাকবো এবং জনগণের পরামর্শ নিয়ে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত নগর হিসেবে গড়ে তুলবো। যত বাঁধা বিপত্তি আসুক সকল বাঁধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে বিজয় অর্জন করবো সকল ভেদাভেদ ভুলে ভয় ভীতি উপেক্ষা করে ঐক্যবন্ধ হয়ে তার জন্য কাজ করতে হবে। তিনি ৪১ ওয়ার্ড ও ১৪ সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে বিএনপির একক কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ কাজ করতে নেতাকর্মীদের আহবান জানান।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া সময় মেনে শুক্রবার বাদে জুমা থেকে নিজ এলাকা বহাদ্দার বাড়ী এলাকা থেকে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।এসময় তিনি মসজিদে জুমার নামাজ আদায় ও পারিবারিক কবর স্থানে পিতা-মাতার কবর জেয়ারত ও শাহ আমানত এর মাজার জেয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন । বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন এবং ফুলেল শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানিয়ে নৌকায় ভোট চেয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ।
মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মহা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, সদস্য সামশুল আলম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদসহ নেতাকর্মীরা। স্বচ্ছ ও স্মার্ট চট্টগ্রাম সিটি গড়ার অংগীকার নিয়ে প্রচারণার শুরুতে মেয়র পদপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদানে চট্টগ্রাম এখন উন্নয়নের মহা সড়কে অবস্থান করছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রাকে অধিকতর মসৃণ ও গতিশীল করতে আমি আমার দলীয় প্রতীক নৌকায় আপনাদের ভোট প্রত্যাশা করছি। পাহাড়, সমতল, সাগর, নদীর অপূর্ব সমাহারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অর্থনীতির অপার সম্ভাবনাকে জাতিরজনক ও তার কন্যা শেখ হাসিনা যথাযথ মূল্যায়ন করেছেন। আর কেউ সেভাবে চট্টগ্রামকে মূল্যায়নে কেবল ব্যর্থ হয়েছে তাই নয়, বরং চট্টগ্রামকে তারা অবহেলাই করেছে।
চট্টগ্রামের মানুষের ভালবাসা ও রায় নিয়ে প্রয়াত জননেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথমে মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নের নব দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন। তৎকালীন বিএনপি সরকারের চরম অসহযোগিতা সত্বেও তিনি কর্পোরেশনে আয়ের খাত সৃষ্টি করে নিজস্ব বাজেটে চট্টগ্রামের অভাবনীয় উন্নয়ন সূচিত করেছিলেন। আমি মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ট সহচর হিসেবে কথা দিলাম, মেয়র নির্বাচিত হয়ে জনগণের শক্তি ও মতামতকে পাথেয় করে আধুনিক সুযোগ সুবিধার শতভাগ প্রয়োগের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে একটি স্বচ্ছ ও স্মার্ট সিটিতে পরিনত করব। তিনি নগরীর ১ নং দক্ষিন পাহাড়তলী, ২নং জালালাবাদ ও ৩নং পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে গণসংযোগের কথা রয়েছে।
করোনার কারনে স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৭ জানুয়ারী।