স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে চট্টগ্রামে এক কর্মচারীর ‘আত্মহত্যা’
স্ত্রী ও ২ সন্তানকে হত্যা করে পরে নিজেই ‘আত্মহত্যা’ করেছে চট্টগ্রামের বিস্কুট ফ্যাক্টরির কর্মচারী মাইনুদ্দীন (২৬)।
জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী ফাতেমা আক্তারকে (২৫) বিষপানে, কন্যা মিথিলা ফারজানা (৫) ও পুত্র সিয়ামকে (১) শ্বাসরোধে হত্যার পর মো. মাইনুদ্দিন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে নিজেও ‘আত্মহত্যা’ করেছে।
চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ আজ সোমবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করেছে। গভীর রাতে ওই ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাইনুদ্দিন সরদার বাড়ীর মিয়াজী সরদারের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।
মাইনুদ্দিনের মা ফিরোজা বেগম জানান, গত কয়েকদিন আগে মাইনুদ্দিনের স্ত্রীর কানের দুল হারিয়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ দেখা দেয়। এর পরে মাইনুদ্দিন চট্টগ্রাম তার কর্মস্থলে চলে যায়। পরে তার স্ত্রীকে তার পিতা এসে মতলব দক্ষিণ উপজেলার করবন্দ গ্রামে পিত্রালয়ে নিয়ে যায়। স্ত্রী কেন শ্বশুর বাড়িতে চলে গেছে এ নিয়েও মাইনুদ্দিন স্ত্রীকে গালি গালাজ করে।
মাইনুদ্দিনের বড় ভাই কালাম সরদার জানান, শনিবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি আসে মাইনুদ্দিন । পরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে আসে। শ্বশুরবাড়িতেও কথা কাটাকাটি হয় হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণের গহনা নিয়ে।
সোমবার ভোর চারটার দিকে মালয়েশিয়া প্রবাসী মাইনুদ্দিনের বড়ভাই জসিম উদ্দিন তার মা ফিরোজা বেগমকে ফোন দেন। মাকে বলেন, মাঈনুদ্দিন তার ফেসবুকে সে মরে যাবে তার কবর ঠিক করার জন্য এবং স্ত্রী, সন্তানদের ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে। জসিম মা ও ভাইকে তার ঘরে গিয়ে দেখার জন্য বলে।
পরে মা ফিরোজা বেগম ও ভাই কালাম সরদার ঘরে গিয়ে দরজা খুলে প্রথমে দুই শিশুকে লেপের নিচে মৃত পড়ে থাকতে দেখেন এবং মাইনুদ্দিনকে ঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান । এ সময় তারা চিৎকার করলে বাড়ির লোকজন আসে এবং পরে খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পুকুরে খুঁটির মধ্যে ফাতেমার লাশ বাঁধা অবস্থায় পায়। ধারণা করা হচ্ছে ফাতেমাকে বিষপান করে হত্যা করা হয়েছে।
চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. নাছিম উদ্দিন জানান, লাশগুলোর সুরতহাল করা হয়েছে এবং উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
