২৯ এপ্রিল ২০২৪ / ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১০:৪৭/ সোমবার
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরতদের ভাতা দেওয়া ঘোষণা

     

মুক্তিযুদ্ধের সময় সশন্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সীমন্তরক্ষা বাহিনীর যে সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের ভাতা দেওয়া ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকেই এই ভাতা প্রযোজ্য হবে।
আজ মঙ্গলবার সশস্ত্র দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধের ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠর উত্তরাধিকারী এবং খেতাবপ্রাপ্ত ১০১ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন।
সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন বাহিনীতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের আগে কর্মরত অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের পর তারা পুনরায় বাংলাদেশের নিয়মিত বাহিনীতে যোগ দেওয়ায় কোনো ভাতা পাননি, যদিও বাকি মুক্তিযোদ্ধারা নির্দিষ্ট হাতে ভাতা পেয়ে আসছেন।
এ কারণে তাদের ভাতা দিতে বিভিন্ন সময়ে দাবি জানানো হাচ্ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের প্রায় সবাই এখন অবসরে চলে গেছেন। অনেকের পরিবার বেশ কষ্টে আছেন। আমরা সে জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাহিনীতে যারা ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর ভাতার ব্যবস্থা আমরা করব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা ৯০০ টাকা থেকে পর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লাখ থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে বাড়ানো হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তদের জন্য ২৫ হাজার টাকা, বীর বিক্রমদের জন্য ২০ হাজার এবং বীর প্রতীকদের ভাতা ১৫ হাজার টাকায় টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
এ ছাড়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের মাসিক সম্মানী ভাতা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ হাজার টাকা করার কথাও শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য শিক্ষা ভাতা, কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে বিবাহ ভাতা, উৎসব ভাতা, দেশে বিদেশে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা সরকার দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব সভায় জাতি হিসেবে আমরা মর্যাদার একটা আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছি এবং যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার শক্তি আমরা অর্জন করেছি। আমি চাই, এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারগুলোর মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠর উত্তরাধিকারী এবং খেতাবপ্রাপ্ত ১০১ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের হাতে চেক ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া সেনাবাহিনীর ১০ জন, নৌ বাহিনীর একজন ও বিমান বাহিনীর একজনকে ২০১৬-১৭ বছরের জন্য শান্তিকালীন পদক এবং সেনাবাহিনীর ১০ জন, নৌ বাহিনীর দুইজন ও বিমান বাহিনীর ২ জনকে ২০১৬-১৭ সালের পদক তুলে দেন সরকারপ্রধান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) তারিক আহমদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply