২৯ এপ্রিল ২০২৪ / ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৭:১৯/ সোমবার
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ৭:১৯ পূর্বাহ্ণ

কোভিড উপসর্গ চেনার উপায় থেকে সুশ্রুষা ঘিরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

     

আরটি পিসিআর টেস্টেও ধরা পড়ছে না করোনার নতুন স্ট্রেইন। এদিকে, দেশে হু হু করে ছড়িয়ে যাচ্ছে করোনা। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ জ্বর নাকি সত্যিই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে শরীরে তা বোঝা নিয়ে রীতিমতো সংশয়ে দেশবাসী। দেশে করোনার জেরে ইতিমধ্যেই দৈনিক সাড়ে তিন লাখের গণ্ডি ছাড়িয়েছে করোনা। এদিকে উপসর্গ বলতে জ্বর, সামান্য মাথা ধরা, শুকনো কাশি, ডাইরিয়া, গন্ধ-স্বাদ চলে যাওয়ার মতো ঘটনা কোভিডের জেরে সামনে আসতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে এমন উপসর্গ হলেই চিকিৎসকরা আগে আইসোলেশনে গিয়ে কোভিড টেস্ট করানোর বার্তা দিচ্ছেন। এদিকে, আইসোলেশনে থেকে কীভাবে বোঝা যাবে যে আদৌ কোভিড হয়েছে কী না, তার কিছুটা বিবরণী দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির রেডিক্স হেল্থ কেয়ারের সিএমডি চিকিৎসক রবি মালিক এই বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর পরামর্শগুলি নিম্নে বর্ণিত হল।

 

২থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ইনকিউবেশন পিরিয়ড শুরু হয়। এই সময়ে ১ থেকে ৪ দিনের মধ্যে কোভিডের জ্বর দেখা দিচতে পারে। হাচি, কাশি শুরু হবে ১ থেকে ৩ দিনে। উপসর্গ ধীরে ধীরে দেখা দিতে থাকবে। শুরু হতে পারে কাশি, শ্বাসকষ্ট। এরই সঙ্গে থাকতে পারে জ্বর, দুর্বলভাব, নাকে অস্বস্তি। এই সমস্ত পরিস্থিতি সহ একাধিক বিষয় জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যা করোনার সঙ্গে সম্পর্কিত। আর তার জেরে সতর্কবার্তা থেকে সুশ্রুষার বহু পদক্ষেপ জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

যদি কোনও উপসর্গ দেখা যায়, প্রথমেই তাঁকে আইসোলেট করতে হবে। প্যানারয়েড হওয়াটাই সেরা কৌশল। কোভিড খুবই সংক্রামক ব্যাধি। মনে রাখতে হবে, প্রথম উপসর্গেই আলাদা করতে হবে। যদি কোনও উপসর্গ দেখা যায়, প্রথমেই তাঁকে আইসোলেট করতে হবে। প্যানারয়েড হওয়াটাই সেরা কৌশল। কোভিড খুবই সংক্রামক ব্যাধি। মনে রাখতে হবে, প্রথম উপসর্গেই আলাদা করতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

অবশ্যই সঙ্গে একটা পালস্ অক্সিমিটার রাখুন। থার্মোমিটার যেমন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা মাপে, ঠিক একই ভাবে এই যন্ত্রটি আমাদের শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা মাপে। পালস্ অক্সিমিটারে আপনার আঙুল রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যে দু’টো সংখ্যা দেখা যাবে। এর মধ্যে একটা এসপিওটু- মানে আপনার শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা। দ্বিতীয়টা আপনার পাল্‌স রেট। • অক্সিজেন সম্পৃক্ততা ৯৪র নীচে নেমে গেলে চিন্তার বিষয়। সে ক্ষেত্রে পেটের উপর ভর দিয়ে শুতে পারেন। পাল্স অক্সিমিটার ফের মেপে দেখুন। হয়ত অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তেও পারে। অন্যথায় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। • যখন কোনো ব্যক্তি ঘুমোচ্ছেন, তখন অক্সিমিটারে রিডিং নেবেন না। যাঁদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, বা তাঁদের ঘুমনোর সময় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় অনেকক্ষেত্রেই।

শরীরের তাপমাত্রার ওঠা-নামার বিষয়েও সতর্ক থাকুন .. • সাধারণ থার্মোমিটারেই শরীরের তাপমাত্রা সহজেই মা

পা যায়। তবে ডিজিটাল বা ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের থেকে পারদ যুক্ত থার্মোমিটারে তামপাত্রার ওঠা নামা অনেক বেশি

 

ঠিকঠাক দেখায় বলে মনে করা হয়•

সাধারণত মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৭.৫৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে ৯৯.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। গড়ে তা দাঁড়ায় ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তাই ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে কোনও ব্যক্তির তাপমাত্রা উঠলে তখনই মনে করা হয় তার জ্বর হয়েছে। তাই শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে থার্মোমিটারের পারাপতনের দিকে লক্ষ্য রাখা আশু কর্তব্য। • শরীরের ব্যথার ক্ষেত্রে মেফেনামিক অ্যাসিড যেমন মেফটাল ৫০০ গ্রহণ করতে পারেন। কোনও রকম শারীরিক সমস্যার ক্ষেত্রে ওষুধের খাওয়ার আগে অনুগ্রহ করে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। • অ্যান্টিপাইরেটিকস গুলি নেওয়ার পরেও জ্বর না কমে বা ওষুধ ৪ ঘন্টার মধ্যে আবার জ্বর আসে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে দয়া করে কোল্ড কম্প্রেশন \ টেপিড স্পঞ্জিং করুন। সঙ্গে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। • যদি শরীরে কোনও উপসর্গ দেগেন তবে অবশ্যই করোনা পরীক্ষা করান। বর্তমানে গোটা দেশেই আরটি-পিসিআর টেস্টে কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকী কিটও অপ্রতুল। তবুও চেষ্টা করুন আরটি-পিসিআর টেস্ট করাতেই। • যদিও একান্তই আরটি-পিসিআর টেস্ট করানো সম্ভব না হয় তবে ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টও করাতে পারেন। তবে সেই রিপোর্টের উপর পুরোপুরি নির্ভর না করে আরটি-পিসিআর টেস্ট ও অবশ্যই সিটি স্ক্যান করান। • তবে সিটি স্ক্যানে করোনা সংক্রমণের ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া গেলেও ডাক্তাররা প্রাথমিক ভাবে আরটি-পিসিআর টেস্টেই ভরসা করছেন। প্রাথমিক টেস্টে কাজ না হলে তখনই সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, জ্বর এলে প্যারাসিটামল,ডোলো, ক্রোসিন,ক্যালপল খাওয়া শুরু করুন। যদি ক্লান্তি ভাব দেখা দেয় তবে এগুলি দিনে একবার আর রাতে একবার করে নিতে পারেন প্রতিদিন। তবে দুটো ডোজের ওষুধ খাওয়ার পর অন্তত ৪ ঘণ্টার বিরতি দিতে হবে।এই ওষুধ এবং খাবারগুলি দ্রুত শুরু করতে হবে যদি করোনা পরীক্ষা না হয়ে থাকে। অথচ তার উপসর্গ দেখা দেয়- ১.জিঙ্কোভিট ১০ নিতে হবে। তার সঙগে মাল্টি ভিটামিন এবং মাল্টি মিনারেল খেতে হবে। ২.দিনে তিনবার ভিটামিন সি লিমসি ট্যাবলেট চিবিয়ে খেতে হবে। ৩. দিনে তিনবার গরম জলের ভাপ নিতে হবে। ৪. ১২ ঘণ্টা অন্তর গরমজলে বেটাডিন দিয়ে গারগল করতে হবে। ৫. প্রচুর পরিমানে তরল খাবার খেতে হবে। লেবুর রস, হলুদ দেওয়া দুধ, ডালিমের রস, মুসমবি লেবুর রস, জল,স্যুপ, মেথি ভেজানো জল, কাড়া, ডাবের জল। ৬. পুষ্টিকর খাবার খান। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন টাটকা সবজি, ফল, অশ্বগন্ধা, আমলকি, চবনপ্রাশ। তারসঙ্গে প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি খান(ডাল, ছানা, সোয়াবিন, দুধ, বাদাম)। কতটা পরিমানএই খাবার খেসে হবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও পরিমাপ এখনও জানা যায়নি। তবে যার শরীরের অবস্থা যেমন থাকবে তেমন খাবার খেতে হবে পরিমাপ করে। কারণ এই খাবারগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোক শক্তি বাড়িয়ে তুলতে কাজ করে। ৭. প্রাণায়াম এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের যোগাভ্যাস নিয়মিত রাখতে হবে।

 

 

 

 

করোনা পজিিটভ হলে কী করবেন তার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি

কোভিড আসনে একটি ভাইরাল সংক্রমণ। এই ভাইরাস নিধনের ক্ষমতা নেই কোনও অ্যান্টিবায়োটিকের। তবে চিকিৎসকরা অ্যাজিথ্রোমাইসিন ৫০০ পাঁচ দিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। ডক্সিসাইউক্লিন ১০০ ৫ দিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার পর কোন কোন ওষুধ প্রয়োজন? কোভিড একটি ভাইরাল অসুখ। তার জন্য নির্দিষ্ট কোনও অ্যান্টিবায়োটিক নেই। তবে ব্যাক্টেরিয়াল সুপার ইনফেকশান থাকলে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের ৫০০ এমজি ওডি ৫ দিনের জন্য নেওয়া যাবে।

 

 

 

 

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply