সুন্দরগঞ্জে ভেঙে পড়া ব্রিজের স্থলে কাঁঠের সাঁকো নির্মাণ
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
২০১৫ সালে বন্যার স্রোতে গাইান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌর সভার রামডাকুয়া মহল্লার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার শাখা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি সম্পন্ন রুপে দেবে যায় এবং ভেঙে পড়ে। তখন থেকে চরাঞ্চলবাসি অতি কষ্ট করে যাতায়াত করে আসছে। দীর্ঘদিনেও ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় জনদুর্ভোগ এড়াতে চরাঞ্চলবাসি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাঁঠের সাঁকো নির্মাণ করছে। আসন্ন বন্যা মৌসুমে চরাঞ্চবাসিকে যাতে কষ্ট করতে না হয় সে লক্ষে এলাকবাসি সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
২০০৮ সালে তৎকালিন সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের খান নিজ অর্থায়নে ইঞ্জিনিয়ারিং প্লান ছাড়াই রামডাকুয়া খেয়াঘাটের উপর ৯৯ মিটার লম্বা ব্রিজটি নির্মাণ করে। নির্মাণের পর থেকে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটির উপর দিয়ে উপজেলার হরিপুর, বেলকা, তারাপুর পাশ্ববর্তি উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ প্রতিদিন চলাচল করত। এছাড়া হাজারও স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ী প্রতিদিন উপজেলা শহরে আসা যাওয়া করছিল। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর জেলা পরিষদের অধিনে খেয়াঘাটের জন্য ইজারা দেয়া হয়। বছরের প্রায় ৮ মাস নৌকা দিয়ে পারাপার করতে হয় চরাঞ্চলবাসিকে। ঘন্টার পর ঘন্টা নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয় পথচারিদের। সে কারণে চরাঞ্চলের অনেক চাকরিজীবি, শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ী যথাসময়ে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছতে পারছেনা। বেলকা চরের ব্যবসায়ী মফিদুল হক মন্ডল জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আমরা চরাঞ্চলবাসি অত্যন্ত কষ্ট করে নদী পারাপাড় হয়ে আসছি। নৌকা না থাকলে কাপড় ভিজে নদী পার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের প্রসূতি মা এবং গুরুতর অসুস্থ রোগিদের উপজেলা শহরের হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া চরাঞ্চরের উৎপাদিত পণ্য যথাসময়ে বাজারে নিয়ে আসা যাচ্ছে না। হরিপুর চরের শিক্ষার্থী স্মৃতি আক্তার জানান, নৌকা দিয়ে পাড় হয়ে কলেজে আসার জন্য ১ ঘন্টা আগে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। তারপরও নৌকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ক্লাস মিস হচ্ছে। পৌর সভার মেয়র আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় জনগণ চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ব্রিজটি নির্মাণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জোর তাগাদা দেয়া হচ্ছে। আপাতত এলাকাবাসি এবং পৌর সভার সহায়তায় রামডাকুয়া খেয়াঘাটে কাঁঠের সাঁকো নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল মুনছুর জানান, ব্রিজটির নির্মাণ কাজ অতিদ্রুত শুরু হবে। বর্তমানে ব্রিজটির দরপত্র মূল্যায়নে কাজ চলছে। এরপর ঠিকাদার নির্ধারণ পূর্বক কাজ শুরু হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ব্রিজটি নির্মাণ হলে চরাঞ্চলবাসির সাথে উপজেলা পরিষদের যোগাযোগ সুর্গম হবে।