২৫ এপ্রিল ২০২৪ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১১:২২/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

সুন্দরগঞ্জে নারী শ্রমিকের চাহিদা দিন-দিন বেড়েই চলছে

     

মোঃ হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
দিন যতই যাচ্ছে ততই মাঠে ময়দানে নারী শ্রমিকের চাহিদা বেড়েই চলছে। বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেতে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকের সংখ্যা একেবারেই কম নয়। ইদার্নিং নারী শ্রমিকের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেড়ে গেছে। কৃষি কাজ থেকে শুরু করে রাজমিস্ত্রী এবং ব্যবসা বাণিজ্যের কাজেও নারী শ্রমিকদের অংশ গ্রহণ সমানভাবে লক্ষ্য করা গেছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নারী শ্রমিকের পদচারণা চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। চরাঞ্চলের পুরুষ শ্রমিকরা বছরের বেশিভাগ সময় বিভিন্ন জেলায় কাজে সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। অনেকেই রাজমিস্ত্রী, রিক্সা, ভ্যান ও অটোবাইক চালিয়ে রুজি-রোজকার করে থাকেন। এরই ফাঁকে নারী শ্রমিকরা সংসার পরিচালনার জন্য এলাকায় ধান ক্ষেত, সবজি ক্ষেত, মাটি কাটা, রাজমিস্ত্রী, রাস্তার কাজ, বিভিন্ন ফসল পরিচর্যা এমনকি বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে থাকেন। তবে বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে অনেকেই এখন নারাজ। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফিরে লক্ষ্য করা গেছে মাঠে-ময়দানে কৃষি কাজে এখন নারী শ্রমিকরা অনেক এগিয়ে রয়েছে। কথা হয় হরিপুর চরের নারী শ্রমিক জয়গুন বেওয়ার সাথে। তিনি বলেন, তার পুত্র সন্তান থাকলেও তাকে ভরনপোষণ দেয় না। সে কারণেই তিনি বছরের বেশিভাগ সময় উচ্চ এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির কৃষকের বাড়িতে কাজ করে থাকেন। তিনি আরও বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি এবং ঝিয়ের কাজ তার পছন্দ নয়। যার জন্য তিনি বিভিন্ন মাঠে-ময়দানের ক্ষেত খামারে কাজ করে জীবিকা নিরবহ করেন। তবে তিনি দুঃখ করে বলেন, পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে নারী শ্রমিকের মজুরি অনেক কম। একজন নারী শ্রমিককে দিন হাজিরা দেয়া হয় ২০০-২৫০ টাকা এবং পুরুষ শ্রমিক দেয়া হয় ৩৫০-৪০০ টাকা। উপজেলার শান্তিরাম গ্রামের কৃষক তাঁরা মিয়া জানান, পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে নারী শ্রমিকরা কাজ কর্মে অনেকটা আন্তরিক। কাজে ফাঁকি দেয়ার মানসিকতা তাদের নাই। তিনি বলেন, তুলনামূলকভাবে নারী শ্রমিকরা ক্ষেত খামারে পুরুষের চেয়ে বেশি কাজ করে। বর্তমানে নারী শ্রমিকরা ইরি-বোর ধান ক্ষেত পরিচর্যা এবং আলু, সরিষা, পিঁয়াজ, মরিচ, বেগুন, ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আলু তোলার কাজে নারী শ্রমিকদের ব্যবহার করেছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশিভাগ ক্ষেতের আলু উঠানো হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৬০ হতে ৭০ মণ আলু উৎপাদন হয়। যার মূল্য ২৮ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি খরচ হয় ১৫ হতে ১৭ হাজার টাকা এবং লাভ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই- মাহমুদ জানান, বর্তমানে কৃষি কাজে নারী শ্রমিকরা এগিয়ে রয়েছে। পুরুষরা বিভিন্ন পেশা নিয়ে বাহিরে থাকার কারণে নারীরই বিভিন্ন কাজে জড়িয়া পড়েছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply