১৫ মে ২০২৪ / ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১২:০১/ বুধবার
মে ১৫, ২০২৪ ১২:০১ পূর্বাহ্ণ

তাহিরপুরের বালিয়াঘাট সীমান্তে চোরাচালানের সময় ট্রলির নিচে পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু

     

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্তে চলছে চোরাচালানী ও চাঁদাবাজদের রামরাজত্ব। এই সীমান্তের লাকমা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও পাথর পাচাঁর করার সময় ট্রলির নিচে পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম শাহ আলম (৩৫)। তিনি উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের নবাবপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়,প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (আজ ২৬.০৮.১৭ইং) সকাল ৬টা থেকে লাকমা,টেকেরঘাট ও লালঘাট এলাকা দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁর শুরু করে চাঁদাবাজি মামলার (জিআর-১৬৩/০৭ইং) জেলখাটা আসামী দুধের আউটা গ্রামের চোরাচালানী জিয়াউর রহমান জিয়া,একাধিক কয়লা চোরাচালান মামলার আসামী বালিয়াঘাট গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক,চাঁদাবাজি,চোরাচালান,হুন্ডি ও মদ পাচাঁরসহ বিজিবির ওপর হামলার মামলাসহ ৬টি মামলার জেলখাটা আসামী লালঘাট গ্রামের আবুল কালাম ও তাদের একান্ত সহযোগী লাকমা গ্রামের চোরাচালানী আব্দুল হাকিম ভান্ডারী,তিতু মিয়া ও রতন মহলদার,মানিক মিয়া গং। তাদের পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল ট্রলি যোগে পরিবহণ করে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে নিয়ে যাওয়ার সময় দুপুর ১২টায় বড়ছড়া গ্রামের আলতো মিয়ার ছেলে আহাদ মিয়ার ট্রলির নিচে পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয় শাহআলম। পড়ে এলাকার লোকজন তাকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ইঞ্জিনের নৌকা যোগে নদীপথে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় বিকাল ৩টায় তার মৃত্যু হয়। আর পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লার প্রতি বস্তা থেকে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নামে ৭০টাকা,টেকেরঘাট কোম্পানী কমান্ডারের নামে ৩০টাকা,থানার নামে ৫০টাকা,কাস্টমসের নামে ৫০টাকা,স্থানীয় দুই সাংবাদিকের নামে ৪০টাকা ও রাস্তা মেরামতের নামে ৫০টাকাসহ মোট ২৮০টাকা এবং চুনাপাথর পাচাঁর করে প্রতিট্রলি চুনাপাথর থেকে বিজিবির ২ ক্যাম্পের নামে ২৫০টাকা,থানার নামে ১২০টাকা,সাংবাদিকদের নামে ১৫০টাকা,কাস্টমসের নামে ১০০টাকাসহ ৫৫০টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করাসহ টেকেরেঘাট ও লাকমাছড়া দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শত ট্রলি বল্ডার ও সিংগেল পাথর পাচাঁর করার জন্য প্রতিট্রলি পাথর থেকে বিজিবির ২ ক্যাম্পের নামে ১০০টাকা,থানার নামে ৭০টাকা,সাংবাদিকের নামে ৪০টাকাসহ ২৫০টাকা চাঁদা উত্তোলন করে উপরের উল্লেখিত চোরাচালানীরা। এর আগে গত ২৩.০৮.১৭ইং বুধবার দুপুর ১টায় ভারত থেকে চোরাই কয়লা পাচাঁর করার সময় লালঘাট গ্রামের মতিউর রহমান (৪৫) নামের এক চোরাচালানীকে ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় বিএসএফ। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিকাল ৩টায় ওই চোরাচালানীকে ফেরত এনে তার বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ছেড়ে দেয় বিজিবি। গত বছরের এই সময় বালিয়াঘাট গ্রামের চোরাচালানী আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে লালঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করার সময় চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে বশির মিয়া (২৮) নামের এক চোরাচালানীর মৃত্যু হয়। তার আগে লাকমা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করার সময় চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে আরো ২ চোরাচালানীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় বালিয়াঘাট সীমান্ত চোরাচালানীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
এব্যাপারে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার ফিরোজ বলেন,যারা কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁর করে তারা আপনাদের এলাকার মানুষ,এসব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে তাদের সাথে কথা বলে আসুন মিলে মিশে কাজ করি।
তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর ট্রলির নিচে পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply