প্রসংগ আনোয়ারার সিইউএফএল সড়ক : অভিজ্ঞমহলের অভিমত এলজিইডির কাছে সড়কটি হস্তান্তর দরকার
এম.আলী হোসেন
আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ও ক্লীন ইমেজে ভর করেই পূর্ণ মন্ত্রীত্ব হয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ চট্টগ্রামবাসীর হ্রদয়ে স্হান করে গোটা দেশেই পরিচিত লাভ করে চলেছেন।কিন্তু নিজ এলাকা আনোয়ারায় একটি সড়ককে কেন্দ্র করেই বিরুদ্ধীবাদীরা তাঁর ক্লীন ইমেজকে দিন দিন ক্ষুন্ন করে দিচ্ছে।সাধারণ জনগণ বিষয়টি বুঝে উঠতেও পারছেন না। ফলে স্হানীয় সাধারণ জনগণও বিরুদ্ধবাদীদের তালে পড়ে মন্ত্রী মহোদয়কে ভুল বুঝছে। যারা দূর – দুরান্ত থেকে সিইউএফএল সড়ক হয়ে যাতায়াত করছে তারাও না বুঝে মন্ত্রীর উপর নাখোশ মনোভাব প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে।বিষয়টি দ্রুত আমলে নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়কে কার্যকর ভুমিকা নিতে হবে বলে সচেতন মহল এই প্রতিনিধিকে জানান ।
আনোয়ারা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন – বিষয়টি খুবই জরুরী ।আনোয়ারার সড়ক উন্নয়নের জন্য সবসময় মন্ত্রী মহোদয় আন্তরিক।কিন্তু সড়কটি সিইউএফএলের হওয়ায় আমাদের যতসব সমস্যা। সমাজসেবক ও রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষ মূল সমস্যা কোথায় তা জানেন না কিন্তু সড়কটি বেহাল অবস্হায় আছে তা তাদের চোখে পড়ছে।তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন অতি দ্রুত সড়কটি সড়ক জনপদ বিভাগে নিয়ে নেয়া দরকার।তাহলে মন্ত্রী মহোদয় সহজেই সড়কটির উন্নয়ন করতে পারবেন। সড়কটি সিইউএফএলের অধীনে থাকলে বছর বছর এই সমস্যা থাকবে এবং মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হবে।
আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতি শুক্রবার জেলা ও শহর থেকে বহু লোক শাহ মোহছেন আউলিয়ার মাজার জেয়ারত করতে যান।তাদের অধিকাংশই এই সিইউএফএল সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। পুরা আনোয়ারার সার্বিক অবস্হা না জেনেই তাদের কাছে ভুল ধারণার জন্ম হয়। তারা মনে করেন পুরো আনোয়ারার চিত্রই এই রকম।আনোয়ারা ঘুরে এসেই তাদের কাছে আনোয়ারা সম্পর্কে মহা ভুল ধারণা কাজ করে।এইরকম অনেক ব্যাক্তির সাথে আলোচনাকালে এই প্রতিনিধি এই চিত্রটি বুঝতে পারেন।
এ বিষয়ে সিইউএফএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস জানান, আমরা শিগগির সড়কটির কাজ শুরু করব। এটি আমাদের নিজস্ব সড়ক, তারপরও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ভারী গাড়িগুলো যাতায়াতের কারণে সড়কটি অল্প দিনে নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং আমরা এরই মধ্যে কাফকো, কেইপিজেড, ট্যানেল কর্তৃপক্ষসহ মিলে সড়কটি মেরামতে ফান্ড গঠন করা হয়েছে। স্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে অভিজ্ঞ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে সড়কটি সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করব।
সুত্রমতে, সামান্য কিংবা অতি বৃষ্টিতে বড় বড় গর্তে পরিনত হয় আনোয়ারার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিইউএফএল সড়ক। বৈদেশিক বহুজাতিক কোম্পানী ও বাংলাদেশের যৌথ পরিচালনায় সিইউএফএল , ডিএপি সার কারখানা, কাফকো সার কারখানা, কোরিয়ান ইপিজেড,আনোয়ারা পাওয়ার প্ল্যান্ট, সর্বোপরি বঙ্গবন্ধু টানেলের মত হেভি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়াতে যাওয়ার প্রধান এই সড়কটি। চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে কেএসআই শিল্প কারখানার গেইট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের অধিক সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের ও খাদের সৃষ্টি হয়ে সামান্য বৃষ্টির পানিতে তা যেন এক একটি খালে পরিণত হয়। পানিতে আটকে যায় সিএনজি থেকে হেভি ট্রাক সহ যে কোন ধরনের যানবাহন, একটি গাড়ি আটকে গেলে হয় বিশাল লম্বা জ্যাম, কোরিয়ান কেইপিজেডে কর্মরত ২২ হাজার শ্রমিক যাদের অধিকাংশই নারী তারা চলাফেরা করেন এই সড়ক দিয়ে।
শিক্ষার্থী, পথচারী, চাকরিজীবীসহ নানা পেশার মানুষ চলাফেরা করেন এই সড়ক দিয়ে। বাজারের যানজট নিরসনের জন্য গত বছরে প্রায় ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে গোল চত্বর, ফুটপাত সড়ক ও গাড়ি পার্কিং এর মেরামত করা হলেও সরেজমিন দেখা যায় চাতরী চৌমুহনী বাজারের পশ্চিমাংশের উত্তর পাশে মেরামতের অর্ধেক সড়কে বৃষ্টি ও নালায় ময়লা জমে দুর্গন্ধ পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে থাকে ,যাতে চলাফেরা করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী তছলিমা জাহান বাংলাপোস্টবিডিডটকম কে জানান, সড়কটি যেহেতু সিইউএফএল কর্তৃপক্ষের নামে সেহেতু এলজিইডির মাধ্যমে সড়কটির সংস্কার কাজ করা সম্ভব নয়,কর্তৃপক্ষ যদি এলজিইডির কাছে সড়কটি হস্তান্তর করে তাহলে অতি দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া সক্ষম হবে। তিনি ফুটপাতের বৃষ্টির পানিতে জমে থাকা পানির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন নালাতে পলিথিন ও ময়লা আবর্জনা ফেলাতে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং এর জন্য বাজারের কিছু ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার কারণ বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান আমাদের প্রতিনিধিকে জানান , সম্প্রতি সড়কটি সংস্কারের জন্য ট্যানেল কর্তৃপক্ষ, সিইউএফএল, কাফকো, কেইপিজেডসহ বিভিন্ন কারখানার কর্মকর্তাদের যৌথ সভায় ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে কিন্তু যথাসময়ে সংস্কার কাজ শুরু না হওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ হয়ে আছে।