৩০ এপ্রিল ২০২৪ / ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:১২/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ৩০, ২০২৪ ২:১২ পূর্বাহ্ণ

বাউবিতে সহজ পদ্ধতির নামে জটিলতা

     

 

কাজী ইব্রাহিম সেলিম

শিক্ষার অগ্রগতি লক্ষ্যে শিক্ষাঙ্গন থেকে দূরে সরে যাওয়া সব শিক্ষার্থীরা যাতে পুনরায় শিক্ষাস্থলে অগ্রসর হন, দেশের সব মানুষ যেন শিক্ষার দিকে অগ্রসর হতে পারেন সেভাবে সহজ পদ্ধতিতে সুযোগ সুবিধা রেখেই বাউবি প্রতিষ্ঠা করেন সরকার। অন্যান্য বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেলেই কম মেধার শিক্ষার্থীরা বাউবিতে ভর্তি হন। তবে এ বিশ^বিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম নয় যারা দারিদ্র্যতা ও পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে ঝরে যেতে হয়েছিল, এসব শিক্ষার্থীরা শিক্ষার ক্ষেত্রে সফল হওয়ার লক্ষ্যেই পুনরায় অগ্রসর হয়েছেন। এদের উদ্দেশ্য একটাই আইএ, বিএ পাস না করেই শিক্ষাস্থল থেকে ফিরবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়তই এসব মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকেও পরীক্ষা দিলে পরীক্ষায় অনুপস্থিত দেখিয়ে হয়রানি ও ফেল দেখিয়ে কম মেধার শিক্ষার্থী হিসেবে চালিয়ে দিতে চাইছে বাউবির কতৃপক্ষ। বাউবিতে সহজ পদ্ধতিতে পড়তে এসে অনেক কষ্টে পাসের সনদপত্র ৪ বছর পর প্রকাশ হওয়ারমত ঘটনাও ঘটেছে! সনদপত্র নাম সংশোধন হয়ে ছয় মাসেও আসেনি! এটা অমানবিক। এতে দুর্ভোগ বাড়ে ও পিছিয়ে পড়ে।

প্রথম পত্রে এ পেলে দ্বিতীয় পত্রে ফেল হলে যোগ করে পাস না দেওয়া এটাতে সহজ পদ্ধতিতে পড়ার সুযোগের নামে আরও জটিলতায় নিক্ষিপ্ত করা হয় সেজন্য, এখই পরীক্ষা বারেবারে দিতে হয়। এভাবে পরীক্ষা দেওয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীকে। এরকম হলে শিক্ষার্থীরা ভেঙে পড়েন। ফলে প্রতিনিয়তই বাউবির শিক্ষাঙ্গণ থেকে আইএ, বিএ পাস না করেই শিক্ষার্থীরা দূরে সরে যাচ্ছে। ও দেশের সব মানুষ শিক্ষার দিকে অগ্রসর হচ্ছে না।

জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাস করে এসে শিক্ষকতা-প্রশাসনে ও সরকারী ভাল ভাল পদে চাকরী করছে। তাদের অনেকে আরেক ক্লাস উপরের শ্রেণীতে উঠার লক্ষ্যে বাউবিতে পড়তে এসেছে। মেধাবী এবং সরকারি চাকরীর ব্যবস্থাও হয়ে গেছে সেরকম একজন প্রশাসনের সদস্য, তাঁর শখ হল সে আরও এক ক্লাস উপরের শ্রেণীতে উঠবে। সেজন্যই বাউবিতে ভর্তি। পরীক্ষাও দিয়েছেন।কিন্তু পরীক্ষায় কোন বছর অনুপস্থিত এসেছে কোন বছর ফেল এসেছে। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে কোনো বছর আটকা না পড়লেও এবারে সে সহজ পদ্ধতিতে পড়তে এসেছেন বিধায় বাউবিতে সে বারেবারে আটকা পড়ছেন। বারবার পুন:পরীক্ষার ও পুন:নিরীক্ষণের ফি দিলেও পুন:নিরীক্ষণ হয়না। সেজন্য, সে পুন:নিরীক্ষণের ফি দিয়ে গাজীপুরে গিয়ে যুগ্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে নিজের পরিচয়টাও দিলেন, ও সমস্যার কথা জানালে যুগ্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, “পরীক্ষার আর ৫ মাস বাকি আছে এত ঝামেলায় না গিয়ে পরীক্ষাটা আবার দিয়ে দাও। সে এসে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্রের কর্মচারিদের বিষয়টা জানালে গাজীপুর থেকে বদলি হয়ে আসা এক কর্মচারি জানান, “যেসব শিক্ষার্থীদের প্রথম বার পরীক্ষা ফলাফল অনুপস্থিত বা ফেল এসে যায় সেসব শিক্ষার্থীদের পরের বছর গুলোর পরীক্ষা খাতা কোনটা কোথায় পড়ে থাকে তা অজানা থাকায়  প্রথম বারের ফেল ফলাফলটা প্রতিবার এসে যায়। ও ফি নিলেও পুন:নিরীক্ষণ করা হয়না।” ওই শিক্ষার্থী পাশে থাকা শিক্ষার্থীদের বলেন, “আমি প্রতিবারই পাস করার মত লিখার পরও এ সমস্যা, পাঁচ মাসপর আবার পরীক্ষা দিতে হবে কিন্তু আবারও যে এখই সমস্যা হবেনা এর নিশ্চিয়তা কি? সে বলেন, “আমরা প্রশাসনের লোকসহ বিভিন্ন পদের লোক আছি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, একটা মামালা করে দিলে হয়তো বাউবির অব্যবস্থাপনা রোধ হবে। একজন প্রশাসনের সদস্য ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থী, সে দক্ষ-মেধাবী ও সচেতন, তার এ অবস্থা হলে যারা কম মেধার ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে পা রাখার সুযোগও হয়নি তাদের কি অবস্থা হতে পারে। এ অবস্থায় শিঘ্রীই শিক্ষামন্ত্রাণালয় ও সরকারি নজরদারি দরকার।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply