২৯ এপ্রিল ২০২৪ / ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৯:৪২/ সোমবার
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ৯:৪২ অপরাহ্ণ

ঢাকায় পোপ ফ্রান্সিস

     

শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী নিয়ে এবং ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে সেবা করার আহ্বান জানাতে তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছেন ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা এসে পৌঁছান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের ক্যাথলিক বিশপের আমন্ত্রণে নেপিদো সফররত পোপ সেখান থেকেই বিমানে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
ঢাকায় পোপকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান, মর্যাদা ও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। তিনি ভিভিআইপি প্রটোকল ও নিরাপত্তা পাচ্ছেন। সফরসঙ্গীদের মধ্যে প্রায় ১০০ সাংবাদিক-সহ তিন শতাধিক সদস্য রয়েছে। ১৯৮৬ সালে পোপ জন পল দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার পোপের
পোপের বাংলাদেশ সফর বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ। যে কোনো দেশে পোপের সফরকে মর্যাদাপূর্ণ বলে মনে করা হয়। গত তিন বছরে পোপের তিন দেশ সফরের মধ্যে একটি বাংলাদেশ। গত দেড় বছর ধরে পোপের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলোচনা চলছিল। পোপও বাংলাদেশে আসার সুবিধাজনক সময় খুঁজছিলেন। অবশেষে আজ তার সফরটি হচ্ছে। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ও উদার বহুত্ত্ববাদী বৈশিষ্ট্য পোপ’কে বাংলাদেশ সফরে আগ্রহী করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন আর ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্য দেখতে আগ্রহী। ঋতুর বৈচিত্র্য বিবেচনায় সবচেয়ে অনুকূল সময় হিসেবে নভেম্বরকেই বেছে নেওয়া হয়। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্যে রোম ত্যাগের আগে এক ভিডিও বার্তায় পোপ বলেন, বাংলাদেশ সফরের প্রস্তুতির লগ্নে আমি দেশটির গোটা জনগোষ্ঠীকে শুভেচ্ছা ও বন্ধুত্বের বার্তা দিতে চাই। আমি এমন একটি মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছি যখন আমরা সবাই একত্রিত হব। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় চার লাখ ক্যাথলিক খ্রিষ্টান বসবাস করছে এবং একজন কার্ডিনাল রয়েছেন।
অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব পোপ ফ্রান্সিস
পোপ ফ্রান্সিস ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন। বর্তমান পোপ ফ্রান্সিসের প্রধান কার্যালয় রোম শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত ভ্যাটিকান সিটি। রোমের বিশপ হিসেবে, তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটি উভয়েরই প্রধান। খ্রিষ্টানদের সোসাইটি অব জেসাস নামক ধর্মসংঘের প্রথম পোপ হলেন ফ্রান্সিস। একইসঙ্গে তিনি পুরো আমেরিকান অঞ্চলের প্রথম পোপ, দক্ষিণ গোলার্ধের প্রথম পোপ এবং অষ্টম শতকে সিরীয় নাগরিক তৃতীয় গ্রেগরির পর ইউরোপের বাইরে থেকে হওয়া প্রথম পোপ-ও তিনি। পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সেইন্ট ফ্রান্সিস অব অসিসি’কে সম্মান দেখিয়ে নিজের নাম বেছে নেন।
পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনেস আইরেসে। জন্মের পর তার নাম রাখা হয় জর্জ মারিও বেরগোগলিও। রোমান ক্যাথলিক যাজকদের প্রশিক্ষণ কলেজে পড়াশোনার আগে তিনি কিছুদিন রাসায়নিক প্রযুক্তিবিদ ও নাইট ক্লাবের ‘বাউন্সার’ হিসেবে কাজ করেন। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৯ সালে। বুয়েনোস আইরেসের আর্চবিশপ হন ১৯৯৮ সালে এবং পোপ জন পল দ্বিতীয় তাকে ২০০১ সালে কার্ডিনাল করেন। কার্ডিনাল হওয়ার মাধ্যমে তিনি ক্যাথলিক ধর্মসঙ্ঘে পোপের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকারী হন।
পোপ হওয়ার পর তিনি তাঁর বিনয়ী ভাবমূর্তির জন্য সারা বিশ্বের নজর কেড়েছেন। তিনি দায়িত্বহীন উন্নয়নের যেমন বিরোধিতা করে আসছেন তেমনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপেও সমর্থন যুগিয়েছেন। আন্তর্জাতিক কূটনীতির অংশ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করেছেন। একইসঙ্গে অভিবাসন সংকট নিয়েও সোচ্চার তিনি।সৌজন্য ইত্তেফাক

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply