রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধের আহ্বান মিয়ানমার সেনাপ্রধানের
রোহিঙ্গা বলে কোনো জাতিসত্ত্বা মিয়ানমারে কখনোই ছিল না দাবি করে এ বিষয়ে নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তিনি বলেছেন, বিদেশি সংস্থাগুলো যা বলতে তাতে কান দেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের উচিৎ হবে না। বরং তাদের গোপন আঁতাতের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
শনিবার ডিফেন্স সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্কুলের এক ডিপ্লোমা বিতরণ অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য আসে। দেশটির নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানসহ শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া তার বক্তব্য তার ফেইসবুক পেইজেও প্রকাশ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জেনারেল লাইং বলেন, আইন মেনে যথাযথভাবে কর্ম-কর্তব্য পালন করতে হবে। মিয়ানমারের সব নাগরিককে তাদের দেশের স্বার্থে এক হতে হবে। গণমাধ্যমকেও এক হতে হবে।
সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে লড়াই করতে এবং মিয়ানমারের সব নাগরিককে এই লড়াইয়ে অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের পেছনের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত এই সামরিক জান্তা বলেন, তারা (বিশ্ব সম্প্রদায়) রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি চায়। অথচ রোহিঙ্গারা কখনোই মিয়ানমারের জাতিগোষ্ঠী ছিল না। বাঙালি ইস্যু জাতীয় বিষয় এবং আমাদের উচিত সত্য প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সিনিয়র জেনারেল লাইং রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার পর সেখানে অন্য জাতিগোষ্ঠীর লোকদের দখলবাজিতে উৎসাহিত করে বলেন, স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীকে রাখাইনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা রাখতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সার্বিক সহযোগিতা দিতে হবে।
পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর (কার্যত সরকারপ্রধান) অং সান সু চিকে কথিত গণতান্ত্রিক সরকারের পুতুলপ্রধান করে রেখে মূলত গণহত্যায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন কুখ্যাত এই সেনাপ্রধান। তার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কাচিন ও শান রাজ্যেও গণহত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলছে জাতিসংঘে।
পুলিশের ওপর হামলার অজুহাতে মিয়ানমার সরকার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কথা বললেও জাতিসংঘ বলছে, গত ২৫ আগস্টের ওই ঘটনার পর থেকে সেখানে জাতিগত নিধন চলছে। এই নিধনযজ্ঞে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে। স্বদেশ ছেড়ে কেবল বাংলাদেশেই শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে প্রায় সোয়া ৪ লাখ মানুষ।