২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:৪৬/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৫:৪৬ অপরাহ্ণ

কাশিপুর লাইড়াদিগা গ্রুপ-এ জলমহাল ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকতে বাদীপক্ষে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট

     

আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কাশিপুর লাইরাদিগা গ্রুপ-এ জলমহালটি ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকার আবেদনের প্রেক্ষিতে বাদীপক্ষে স্থগিতাদেশ দিয়েছে মহামান্য হাইকোর্ট। সে সাথে বাদী ডালাস চৌধুরীর আবেদনটি ৩০ দিনের মধ্যে নিস্পত্তি করারও আদেশ দেয়া হয়েছে। রবিবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের অবিকল নকল কপিসহকারে লিখিত আবেদন মাধ্যমে উচ্চ আদালতের আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করার দাবী জানিয়েছেন তিনি। গত ১৪ মে ৫৯৭৪/২০১৭ নং রীট পিটিশন মামলায় বিজ্ঞ বিচারপতি মোছাঃ নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মামলায় ভুমি মন্ত্রণালয়ের সচিব,সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার,সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক,দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার,উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি),দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়। জানা যায়,গত ২৬ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় শাল্লা উপজেলার আটগাও ইউনিয়নের ৪ গ্রামের প্রায় ৫০ জন লোক বেআইনী জনতাবদ্ধে মিলিত হয়ে দেশীয় নৌকাযোগে অস্ত্রসস্ত্র সহকারে হামলা করে প্রাণে হত্যার ভয় দেখিয়ে জলমহালের ম্যানাজার ও পাহাড়াদারসহ মোট ৫ জনকে হাতপা বেধে আটক করে ঐ জলমহাল হতে বিপুল পরিমাণ মৎস্য সম্পদ লুটতরাজ করে নিয়ে যায়। মাছ লুটতরাজকারীদেরকে বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা জলমহালটির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত একই গ্রামের এখলাছ মিয়ার পুত্র ফজল মিয়া,ডেন্ডু মিয়ার পুত্র মিন্টু মিয়া,মৃত মছদ্দর মিয়ার পুত্র রানা মিয়া,মৃত আলী হোসেন এর পুত্র নুরুজ্জামান ও মৃত হারুন চৌধুরীর পুত্র পলাশ চৌধুরীকে আটক করার পাশাপাশি বেদম মারপিঠক্রমে আহত করে। স্থানীয় শসারকান্দা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের পুত্র আবুবক্কর মিয়াগং এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়। জলমহালটিতে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের এমন প্রকাশ্য হামলা ও লুটতরাজের ঘটনায় থানায় মামলার অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ প্রশাসন ইজারাদার ডালাস চৌধুরীর মামলাটি আমলে নেয়নি। ফলে অপুরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হন বাদীপক্ষ। অথচ শাল্লা উপজেলার আটগাও গ্রামের মৃত হারুন চৌধুরীর পুত্র ডালাস চৌধুরী ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা দিয়ে ঐ জলমহালটি ১৪২৩ বাংলা সনের ৩০ শে চৈত্র পর্যন্ত খাস কালেকশন প্রাপ্ত হয়ে সরকারী খাজনা পরিশোধক্রমে দখলদেহী সমজিয়ে নিয়ে বহু অর্থ ব্যয়ে জলমহালে দল কাটা বাঁশ স্থাপনক্রমে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় মাস সংরক্ষণ করে থাকেন। প্রতিপক্ষ আবুবক্কর মিয়াগং খাস কালেকশনে জলমহালটি ভাগিয়ে নিতে ব্যর্থ হন। তিনি জলমহালটি ফিসিং না করার জন্য খাস কালেকশন গ্রহীতা ডালাস চৌধুরীকে হুমকী দেন। এরই ধারাবাহিকতায় রামদা, লোহার রড,লাঠি,রুইল,চাকু,ছুরী ইত্যাদি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে জলমহালে জাল ফেলে মাছ লুটতরাজ করে নেয়। একদিনে এচক্রটি ঐ জলমহাল হতে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকার মৎস্য সম্পদ লুটতরাজ করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ডালাস চৌধুরী আটগাও ইউনিয়নের দাউদপুর ও শ্যামারচর গ্রামের ৩৬ জনের বিরুদ্ধে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের লিখিত আদেশ সহকারে মামলার অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ তার দায়েরকৃত মামলাটি এফআইআর না করায় তিনি অপুরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হন। পরবর্তীতে গত ২/৩/২০১৭ইং আগামী ১৪২৪ বাংলা সনের জন্য পুণরায় তাকে ঐ জলমহালটি খাস কালেকশন প্রদানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম তার ঐ মানবিক আবেদনটির অনুকুলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। ফলে বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের আশ্রয় নিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ ডালাস চৌধুরী।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply