আহমদ শফীর বক্তব্য রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’: নওফেল
মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে হেফাজত আমীর শাহ আহমদ শফীর বক্তব্য রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
শনিবার সকালে চট্টগ্রামে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আগের দিন হাটহাজারী মাদ্রাসায় নারী শিক্ষা বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীর শাহ আহমদ শফীর বক্তব্য বিষয়ে জানতে চাইলে নওফেল বলেন, যিনি এ মন্তব্যটা করেছেন তিনি তার ব্যক্তিগত মত দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের শিক্ষানীতি প্রণয়ন বা শিক্ষা ব্যবস্থাপনা অথবা শিক্ষাখাতের কোনো নির্বাহী দায়িত্বে নেই। যেহেতু বাক স্বাধীনতা আছে, যে কোনো নাগরিক তার মনের ভাবনা বহিঃপ্রকাশ করতে পারেন। তিনিও দেশের একজন নাগরিক হিসেবে নিজের একটা বিশ্লেষণ দিয়েছেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, তবে এটা আমাদের রাষ্ট্রনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমরা যারা বাক স্বাধীনতার কথা বলছি, মনে রাখতে হবে আমাদের সংবিধানে সকলের সমান অধিকারের কথা বলা আছে। আমরা যেন বৈষম্যমূলক কোনো মন্তব্য না করি। তিনি ব্যক্তিগত অভিমত দিয়েছেন। তার অভিমত যে রাষ্ট্রীয় নীতিতে প্রতিফলন ঘটবে এরকম মনে করার কোনো কারণ নেই। এরকম অনেকেই নিজস্ব অভিমত দেন।
শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটাহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় ১১৮ তম বার্ষিক মাহফিলে মাদ্রাসার পরিচালক আহমদ শফী মেয়েদের স্কুল-কলেজে না দিতে এবং দিলেও সর্বোচ্চ ফোর-ফাইভ পর্যন্ত পড়ানোর জন্য ওয়াদা করান।
পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণ বিষয়ে জানতে চাইলে নওফেল বলেন, কোমলমতিদের যদি ছোট বয়স থেকেই বিভাজনের মানসিকতা আমরা দিয়ে দিই তাহলে দীর্ঘমেয়াদে সমাজে স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস করে। সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে আমাদের বাধ্য করেছে।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই যার যার ধর্মীয় অনুসাশন মেনে চলব। তবে সংবিধান অনুসারে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ কারিকুলাম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে মানের উন্নয়ন ও ধর্মীয় শিক্ষার যে বিশেষায়িত ব্যবস্থাপনা আছে সেখানে সার্বিক মানের উন্নয়ন হলে সামাজিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে না। পড়াশোনার মধ্যে সাম্প্রদায়িকীকরণ যদি করা হয় অদূর ভবিষ্যতে তা আমাদের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়াবে, এটা আমরা সকলেই বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, আগামীতে আমরা প্রথম থেকেই সর্তক থাকব। যাতে এ ধরণের কার্যকলাপ না ঘটে। আমরা আগে থেকে জানি, অগ্রিম ব্যবস্থা নিব।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন, বেদারুল আলম চৌধুরী, ডা. শেখ শফিউল আজম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, তপন চক্রবর্তী, আলমগীর সবুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।