২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১২:৪০/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ১২:৪০ অপরাহ্ণ

নরসিংদীতে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ চাই

     

 

আমাদের নরসিংদীবাসী স্বয়ংসম্পূর্ণ। অর্থাৎ ছয়টি মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে অন্যকোন জেলার সাহায্য ছাড়াই আমরা চলতে সক্ষম। মানুষ মাত্রই সীমা অতিক্রম করে নতুন সীমানায় পৌঁছাতে চায়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা অন্যকোন জেলা থেকে এগিয়ে। শিল্প সংস্কৃতি, শিক্ষা, খেলাধুলা সব জায়গায় সরব অবস্থান থাকা সত্ত্বেও আমরা পরিচয় দিতে পারি না, আমরা নরসিংদীবাসী-আমাদের পরিচয় হয়ে যায় আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আর অন্যসব জেলার মানুষের মত নরসিংদীবাসীও চায় কলেজের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বমানের সীমায় পৌঁছাতে।

ঢাকা জেলার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকার করে ঢাকাই অবস্থিত তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি সরকারি মেডিকেল কলেজসহ অসংখ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে পড়াশুনার সুযোগ পায়, তবে আমরা নরসিংদীর শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করে নিজেদের জেলায় কেন একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পাব না?

এরপর আসছে ‘প্রস্তাবিত’ নরসিংদী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ খরচ সম্পর্কে। প্রথমেই বলতে হয় অর্থনীতির চাকার ৭% নরসিংদী থেকে আরছে। আমাদের অনবদ্য পরিশ্রমের উপাজর্নে অন্যজেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ হচ্ছে, যেখানে ‘ওয়ারী বটেশ্বর’ বাংলাদেশের আদিভূমিতে, একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার একই সাথে পর্যটনশিল্পে উন্নয়ন করতে পারে। অনেকেই বলছে ‘‘ প্রস্তাবিত নরসিংদী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’’ একটি উদ্ভট স্বপ্ন। কিন্তু আমি বলছি এই স্বপ্ন উদ্ভট স্বপ্ন নয়। এটি প্রস্তাবিত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশ সরকারের যে পরিমান খরচ হবে সে পরিমান টাকা দিয়ে অন্যান্য বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো হতে পুরো ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একতৃতীয়াংশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এছাড়াও আরও অনেক জায়গা রয়েছে যেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের খরচ সহজেই আসতে পারে।

নরসিংদী জেলা অতি প্রাচীনকাল হতেই বাংলাদেশের ইতিহাসের কৃতি সন্তানদের জন্ম দিয়ে আসছে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আজ নরসিংদী জেলা তার সম্মান হারাতে বসেছে। কারণ এখন বিশ্বমানের চর্চার সময় এসেছে, এই সময় কলেজের গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকার জন্য নয়। নরসিংদী জেলার শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানে চর্চা করার সুযোগ খুবই কম পাচ্ছে, নিজেদের জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই বলে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদেরই নয়, নিজ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় থাকলে কলেজে অধ্যয়নরত অনার্স, মাষ্টার্স এর শিক্ষার্থীদেরও মিলনমেলা হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়েও অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিশ্বমানের জ্ঞান পেতে পারে শুধু নিজ জেলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকার কারণে। এই ধারণার উৎকৃষ্ট উদাহরণ রাখছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা সারাদিন ক্লাস শেষ করে গাজীপুর থেকে টিএসসি তে আসে কিছু জ্ঞান লাভের আশায়।

আমার মতে প্রত্যেক জেলাতেই আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববদ্যিালয় স্থাপন করা উচিত, একটি শহরেই সব বিশ্ববিদ্যালয় না করে সমানভাবে সবজেলায় শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেয়া উচিত। নিজ জেলায় নিজ সংস্কৃতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। এই ধারায় নরসিংদী জেলাই হোক প্রথম দৃষ্টান্ত, এটা আমাদের নরসিংদীবাসীর কাম্য।

কাজী আসমানী
ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ,
চট্টগাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়
মোবাইল: ০১৭৯১৯৬২৯০৬

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply