২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১:০৪/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ১:০৪ পূর্বাহ্ণ

বর–কনে এলেন পালকি-ঘোড়ায়, অতিথি হয়ে সংসদ সদস্য নামলেন হেলিকপ্টার থেকে

     

স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিকভাবে ফারহানা আঁভির সঙ্গে মতিউর রহমানের বিয়ে ঠিক হয়। মতিউর রহমান চীন থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে এসেছেন। কনে ফারহানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। দুই পরিবারের সম্মতিতে আজ শনিবার তাঁদের বিয়ের দিন নির্ধারণ হয়।

এদিকে বিয়ের কয়েক দিন আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিল মতিউরের পরিবার। গ্রামের একজন প্রবীণ কাঠমিস্ত্রি তিন দিন ধরে একটি পালকি তৈরি করেছেন। পাশাপাশি বরকে কনের বাড়িতে নেওয়ার জন্য একটি ঘোড়াও ভাড়া করা হয়। উপজেলার শেরকোল শিমলা এলাকার এক ব্যক্তির কাছ থেকে এক দিনে জন্য ঘোড়াটি ভাড়া করা হয় বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে ভরট্ট গ্রাম থেকে ঘোড়ায় চড়ে মতিউর প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কনের বাড়িতে যান। সঙ্গে নেন পালকি ও বরযাত্রীদের। কনের পরিবার থেকে তাঁদের গ্রামীণ পুরোনো রীতি অনুসারে বরণ করে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার নিয়ে এসেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক। দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটে হেলিকপ্টারটি স্থানীয় ফুটবল মাঠে অবতরণ করে। স্থানীয় প্রবীণ লোকজন বলছেন, তাঁদের গ্রামে আগে কখনো হেলিকপ্টার নামতে দেখা যায়নি।

বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার নিয়ে এসেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক

বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার নিয়ে এসেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক

সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী আতাউর রহমান বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে সংসদ সদস্য স্থানীয় দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে তিনি হেলিকপ্টারেই ঢাকা ফিরে যাবেন।

মতিউরের মা হালিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর একমাত্র ছেলের ইচ্ছা ছিল দাদার মতো ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করার। ছেলের শখ মেটাতে ও পরিবারের ঐতিহ্য ফিরে আনতে তাঁরা এ আয়োজন করেছেন। সবাইকে চমক দিতে কিছুটা গোপনেই এসব আয়োজন করা হয়েছে।

মতিউরের চাচা ভবানীগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রভাষক মামনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ছেলের দাদা আহম্মদ হোসেনও ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করেছিলেন। পরে পালকিতে নববধূকে বাড়িতে আনা হয়েছিল। তবে এরপর আর পরিবারে এ ধরনের আয়োজন হয়নি। মতিউরের বিয়ের মাধ্যমে এটা আবার শুরু হলো।

কনের বাবা ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল হক বলেন, তাঁর একমাত্র মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন পেশার প্রায় তিন হাজার লোকজনকে নিমন্ত্রণ করেছেন। বরপক্ষের ব্যতিক্রম আয়োজনে তিনিও মুগ্ধ।

যোগিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে এমন বিয়ের আয়োজন প্রথম দেখলাম। পুরোনো ঘোড়া পালকি আর আধুনিক হেলিকপ্টার বাহন থাকায় আয়োজনটি বেশ আকর্ষণীয় হয়েছে।’ সৌজন্য প্রথম আলো অনলাইন

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply