২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৪:৫৬/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ

২৫০টি পেরেক, ৩৫টি কয়েন গিলে ফেলেছিলেন মঈনুদ্দিন

২৫০টি পেরেক, ৩৫টি কয়েন গিলে ফেলেছিলেন মঈনুদ্দিন

     

এক্সরে প্লেট দেখেই চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকদের। কী কী না খেয়েছিলেন মঈনুদ্দিন। বড় বড় পেরেক, কয়েন থেকে শুরু করে স্টোন চিপস পর্যন্ত। তাতেই ভরে উঠেছিল তার পেট। অস্ত্রোপচার করে যুবকের পেট থেকে ২৫০টি পেরেক, ৩৫টি কয়েন ও স্টোন চিপস বের করলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা।

জানা গেছে, মঈনুদ্দিন নামে ওই যুবকের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লকের কৃষ্ণবাটি গ্রামে। তার বয়স ৩৮ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৫ বছরেরও বেশি‌ সময় ধরে মঈনুদ্দিনের মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলে। কয়েকদিন ধরে কিছু খাচ্ছিলেন না ওই যুবক।

গত শনিবার (১১ জুন) বিকেলে গ্লাসে করে কিছুটা দুধ পান করেছিলেন শুধু। তারপর আর কিছু মুখে তোলেননি মঈনুদ্দিন। পেটে হাত দিয়ে বার বার কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। পেটে যন্ত্রণা হচ্ছে মনে করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তারা বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান মঈনুদ্দিনকে। সেখানে এক্স-রে করে প্রচুর ফরেন পার্টিকল রয়েছে বলে জানানো হয়। বলা হয়, অস্ত্রোপচার করে পেরেকসহ ওইসব জিনিস বের করতে হবে। তার জন্য কয়েক লাখ টাকা খরচ হবে। কিন্তু এত টাকা দেয়ার সামর্থ ছিল না আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারটির।অগত্যা কোনো উপায় না দেখে গত বুধবার (১৫ জুন) সকালে তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা এক্সরে করেই চক্ষু চড়কগাছ। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতেই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে ২৫০টি ছোট-বড় পেরেক, ৩৫টি ১ ও ২ রুপির কয়েন এবং বেশ কিছু বাড়ি তৈরির স্টোন চিপের পাথর কুচি বের করা হয়।

ঈনুদ্দিনের বড় ভাই শেখ মসলিনউদ্দিন বলেন, ভাইয়ের মানসিক রোগ রয়েছে। সেই কারণেই এই সব খেয়ে ফেলেছিল। এখন সুস্থ রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি‌ হাসপাতালে বিনা খরচে এই চিকিৎসা হয়েছে। চিকিৎসকদের অনেক ধন্যবাদ। বেসরকারি হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচারের প্রচুর খরচ। এখানে বিনা খরচে করা হয়েছে।
হাসপাতালে সুপারেন্টেন্ড তাপস ঘোষ জানান, এর আগেও এই ধরনের অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেয়েছে আমাদের‌ হাসপাতাল। এই অপারেশন বর্ধমান হাসপাতালের এক অভূতপূর্ব সাফল্য বলে তিনি গর্বিত। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন ওই রোগী। অপারেশন সফল হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে পরিবার।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply