২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:৩১/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৫:৩১ অপরাহ্ণ

অবশেষে পৌর মেয়র মুক্তার’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

     

মাজহারুল ইসলাম চপল, ব্যুরো চীফঃ

অবশেষে সমালোচিত আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলীকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানাধীন ফুরফুরা এলাকার নিকট আত্নীয়র বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সংশ্লীষ্ট সূত্রে জানাযায়, গত ৬ জুলাই ( মঙ্গলবার) রাত ৯ ঘটিকার সময় বাঁশবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও পল্লীচিসিৎসক মনোয়ারুল ইসলামকে মারধর করে আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলী। পরে মনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী ছুটে আসলে তাকেও শ্লীলতাহনী করে মেয়র মুক্তার। পরবর্তীতে বাঘা থানায় মনোয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করে। এরপর পৌর মেয়র মুক্তার আলীর বাড়িতে অভিযান চালাই পুলিশ। অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারসহ মেয়রের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০), ভাতিজা সোহান (২৫) ও শান্তকে (২৩) গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। এবং এ ঘটনায় আরও দুইটি মামলা করে। এই মেয়রের বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা হয়েছে। এবিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখ্যপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদক এবং প্রায় এক কোটি টাকাসহ মেয়রের স্ত্রী ও দুই ভাতিজাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় মেয়রকে প্রধান আসামি করে বাঘা থানায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অপরাধে মেয়র মুক্তার আলী ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে একটি মামলার আসামি করা হয়েছে। অপর মামলায় টাকা, মাদকসহ অবৈধ মালামাল রাখায় মেয়র ও তার ছেলে রাজু আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। মারামারির ঘটনায় আরেকটি মামলা করেছেন পল্লী চিকিৎসক মনোয়ারুল ইসলাম। এই মামলায় মেয়রের দুই ভাতিজাকে আসামি করা হয়েছে। ইফতেখায়ের আলম আরও বলেন, মেয়র ও তার সহযোগীদের ধরতে বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। তার বাড়ি থেকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি, মাদক, নগদ টাকা এবং মেয়রের স্বাক্ষর করা চেক উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, পিস্তলের চারটি ম্যাগাজিন, ১৭ রাউন্ড তাজা গুলি, চারটি গুলির খোসা, একটি ওয়ান শুটার গান, একটি দেশি বন্দুক, রাইফেল, শটগানের ২৬ রাউন্ড গুলি, ১০ গ্রাম গাঁজা, সাত পুরিয়া হেরোইন, ২০ পিস ইয়াবা, ১৮ লাখ টাকার স্বাক্ষর করা চেক এবং নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। বুধবার দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেয়র মুক্তার আলী মদ্যপ অবস্থায় সহযোগীদের নিয়ে পৌরসভার জয়বাংলা মোড়ে বাগাতিপাড়ার বাঁশবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন মজনুর বাড়ি সংলগ্ন ওষুধের দোকানে গিয়ে হট্টগোল শুরু করেন। মেয়র ও তার সহযোগীদের ভয়ে মজনু বাড়ির ভেতরে চলে যান। মেয়র ও তার সহযোগীরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে মজনুকে মারপিট করেন। কলেজপড়ুয়া ছেলে এবং স্কুলশিক্ষক স্ত্রী মজনুকে রক্ষা করতে এলে তাদেরও মারপিট করে আহত করেন মেয়র ও তার সহযোগীরা। প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, মজনু গত পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষ নিয়ে মেয়রের বিপক্ষে নির্বাচনে কাজ করেছিলেন। মেয়র মুক্তারকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু সালেহ মো. আশরাফুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সনাতন চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. ইফতে খায়ের আলম, সহকারী পুলিশ সুপার (গোদাগাড়ী সার্কেল) আসাদুজ্জামান এবং বাঘা থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম। এঘটনার পর থেকে মেয়র মুক্তার আলী পলাতক থাকে। অবশেষে চারঘাট থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) রুবেল আহমেদের নেতৃত্বে ৯ তারিখ মধ্যরাতে পাবনার ঈশর্দী উপজেলায় মেয়র মুক্তারের আত্নীয়র বাড়ি থেকে বিষেশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের টিম।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply