২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৮:০২/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ৮:০২ পূর্বাহ্ণ

উচ্চ শিক্ষায় সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে ব্রিকসভূক্ত দেশগুলো

     

উচ্চ শিক্ষা তথা কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যোগসূত্র আরও নিবিড় করার পাশাপাশি গবেষণাধর্মী কাজকর্মে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত পাঁচটি দেশের (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা) শিক্ষামন্ত্রীরা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এক যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।

গত ০৬ জুলাই, মঙ্গলবার, ১৩ তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত ব্রিকস শিক্ষামন্ত্রীদের অষ্টম বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেগুলো যথাক্রমে, প্রথমত, সার্বিক এবং সুসামঞ্জস্যপূর্ণ গুণগত মানের শিক্ষা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে ডিজিটাল ও কারিগরি পন্থা-পদ্ধতির প্রয়োগ এবং দ্বিতীয়টি হল, গবেষণাধর্মী কাজকর্মে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো।

গুণগত মানের শিক্ষা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য ডিজিটাল ও কারিগরি পন্থা-পদ্ধতির প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সদস্য দেশগুলি নিজেদের মধ্যে জ্ঞান-ভিত্তির পরিধি আরও বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। এই লক্ষ্যে একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে সদস্য দেশগুলি ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে এবং স্থির হয়েছে যে, পরস্পরের মধ্যে জ্ঞান ও সেরা পন্থা-পদ্ধতিগুলি বিনিময় করা হবে। এজন্য সেমিনার, আলোচনাসভা, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মতবিনিময় কর্মসূচি আয়োজিত হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গবেষণাধর্মী কাজকর্মে সহযোগিতা আরও বাড়াতে ব্রিকস ভূক্ত দেশগুলির শিক্ষামন্ত্রীরা শিক্ষার্থী বিনিময়ে সম্মত হয়েছেন। এছাড়াও ব্রিকস দেশগুলিতে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যৌথ ভাবে ডিগ্রী প্রদানের বিষয়েও কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে।

ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত প্রতিটি সদস্য দেশই কারিগরি তথা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত ক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। এই ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়েও সদস্য দেশগুলি নিজেদের অঙ্গিকার ব্যাক্ত করেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী সঞ্জয় ধোত্রে। তিনি বলেন, “বর্তমান মহামারীর প্রভাব ন্যূনতম করতে ভারত অন্যান্য দেশের যাবতীয় প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি জানায়।”

বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও সরকারের প্রচেষ্টা এক নমনীয় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম। তিনি বহুপাক্ষিক, বিশেষ করে ব্রিকসভূক্ত দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে শিক্ষা ব্যবস্থার পূর্ণ সম্ভাবনাকে সদ্ব্যবহার করা যেতে পারে।

শ্রী ধোত্রে আরও বলেন, “শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলো পূরণে এবং ব্রিকস দেশগুলির পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে অনলাইন শিক্ষণ এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা পরিচালনা ব্যবস্থা বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তাই, এটা অত্যন্ত জরুরী যে আমাদের সার্বিক এবং সকলের জন্য গুণগত মানের শিক্ষা সুনিশ্চিত করতে প্রযুক্তি প্রয়োগের বিষয়টিকে স্বীকার করতেই হবে।”

শিক্ষা ক্ষেত্রের ওপর কোভিড-১৯ মহামারীর কুপ্রভাব কমাতে ব্রিকস শিক্ষামন্ত্রীরা নিজ নিজ দেশে গৃহীত পরিকল্পনা ও উদ্যোগের কথা ভাগ করে নেন। ভারতের কথা উল্লেখ করে শ্রী ধোত্রে জানান, “মাল্টি মোডাল উপায়ে গুণগত মানের শিক্ষার সুবিধা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই ই-বিদ্যা কর্মসূচি চালু হয়েছে।”

শ্রী ধোত্রে আরও বলেন, “ভারত যখন একদিকে সকলের জন্য গুণগত মানের শিক্ষার উদ্দেশ্য পূরণে ডিজিটাল ও কারিগরি পন্থা-পদ্ধতির প্রয়োগের সম্ভাবনাটিকে উপলব্ধি করছে, একই সঙ্গে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতেও নিরন্তর কাজ করে চলেছে। ডিজিটাল ভারত কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে ডিজিটাল পরিকাঠামোর দ্রুত সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, শিক্ষামন্ত্রীদের এই বৈঠকের পূর্বে গত ২৯ জুন ব্রিকস রাষ্ট্রসমূহের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গড়ে উঠা নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে সদস্য দেশগুলো ইতিমধ্যেই গৃহীত উদ্যোগের প্রেক্ষিতে যে অগ্রগতি করেছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়।

এছাড়াও, গত ০২ জুলাই শিক্ষা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা সচিব অমিত খয়েরের সভাপতিত্বে সিনিয়র ব্রিকস অফিসারদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে ইউপিসি চেয়ারম্যান ডিপি সিং, এআইসিটিই চেয়ারম্যান অনিল সাহসবুদ্ধে এবং আইআইটি পরিচালক প্রফেসর সুভাষিস চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply