২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:১১/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ২:১১ পূর্বাহ্ণ

ভাসানচরে ১০ হাজার ১৬ জন রোহিঙ্গা

     

       হাতিয়ার ভাসানচরে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের কাছে ইতিবাচক ধারনা পেয়ে মুগ্ধ হয়েছে কক্সবাজারে থাকা অনেক রোহিঙ্গা। এখন নিজেদের (রোহিঙ্গা) ইচ্ছায় অনেকে আসতে চায় ভাসানচরে। তারই ধারাবাহিকতায় চতুর্থ ধাপে মঙ্গলবার আরও ১ হাজার ১১ জন রোহিঙ্গা ভাসানচর পৌঁছেছে। এ নিয়ে মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা হল ১০ হাজার ১৬ জন।

মঙ্গলবার সকালে চট্রগ্রামের বোটক্লাব থেকে ছেড়ে আসা রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌ-বাহিনীর তিনটি জাহাজ দুপুর আড়াইটার সময় পৌছায় হাতিয়ার ভাসানচরে। এই যাত্রায় এলেন ২৮৮ জন নারী, ২৩৭ জন পুরুষ ও ৪৮৬ জন শিশুসহ ১ হাজার ১১ জন রোহিঙ্গা। এটা রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ভাসানচর আসার চতুর্থ ধাপের দ্বিত্বীয় অংশ। এর আগে চতুর্থ ধাপের প্রথম অংশে সোমবার ২ হাজার ১০ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছেছে।

ভাসানচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহে আলম জানান, নিয়মানুযায়ী মঙ্গলবার আসা রোহিঙ্গাদের প্রথমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। এর পর নিয়ে যাওয়া হয় রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি আশ্রায়ন প্রকল্পের ওয়্যার হাউজে। সেখানে তাদের ভাসানচরে বসবাসের বিভিন্ন নিয়মকানুন সম্পর্কে ধারনা দেন নৌ-বাহিনীর সদস্যরা।

বরাবরের মতো মঙ্গলবারও ভাসানচর অভিমুখী রোহিঙ্গাদের চোখেমুখে ছিল আনন্দের ঝিলিক। কারণ আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় গড়ে ওঠা পরিকল্পিত এই অস্থায়ী আবাসনের বিষয়ে বিস্তারিত জেনেই তারা ছেড়েছে উখিয়ার শরণার্থী ক্যাম্প। ভাসানচরে পৌঁছানোর পরে তাদের গ্রহণ করে নেওয়া হয় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে।

জানা যায়, ভাসানচরে প্রথম দফায় এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা স্থানান্তরিত হয় গত বছরের ৪ ডিসেম্বর। এরপর ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় সেখানে পৌঁছায় আরও এক হাজার ৮০৪ জন। তৃতীয় দফায় ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি দুই ধাপে স্থানান্তরিত হয় তিন হাজার ২৪৩ জন। সাগরপথে অন্য দেশে পাড়ি দিতে ব্যর্থ হওয়া বোটে ভাসমান ৩০৬ রোহিঙ্গার আশ্রয় মিলেছিল আগেই। সবশেষে গতকাল সোমবার চতুর্থ ধাপের প্রথম অংশে এলেন ২হাজার ১০জন রোহিঙ্গা। সবমিলিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাসানচরে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ হাজার ১৬জন।

ভাসানচর নেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের

কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা বলেন, স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক এরকম রোহিঙ্গাদের শুধু ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। তবে গত কিছু দিন থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নিকট ভাসানচরের উন্নত পরিবেশের কথা শুনে এখন অনেকে রোহিঙ্গা যেতে ইচ্ছা ব্যক্ত করছেন।

রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরের বসতি

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো ইমরান হোসেন বলেন, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ইতিমধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৫শত কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে। যাতে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা শুরু হলে পরের কয়েক মাসে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এর আগে আসেন আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply