২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১:০২/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ১:০২ পূর্বাহ্ণ

অধিকাংশ প্রার্থীই ব্যবসায়ী স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদ বেশি

     

প্রথম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র প্রার্থীদের অনেকেরই রয়েছে অঢেল সম্পদ। নামে-বেনামেও সম্পদের পাহাড়। অনেকেই নিজের নামের চেয়ে স্ত্রী-সন্তানের নামেই বেশি সম্পদ দেখিয়েছেন। এ ধাপের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী। শিক্ষাগত যোগ্যতায় ‘স্বশিক্ষিত’ ও ‘সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ থেকে পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থীও রয়েছেন। মামলা বেশি বিএনপির প্রার্থীদের। আওয়ামী লীগের এক-দুজনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনে মেয়র প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. তারিকুল ইসলাম। এমএ পাশ। পেশায় শিক্ষক হলেও পাটের ব্যবসাও করেন। ব্যবসা ও কৃষি থেকে তার বার্ষিক আয় আড়াই লাখ টাকা। পেশা হিসেবে শিক্ষকতা দেখালেও তিনি চাকরি থেকে আয় দেখাননি। তবে তার ওপর নির্ভরশীলদের চাকরি থেকে আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্ত্রীর নামে জমা রয়েছে ৩৬ লাখ টাকা। স্ত্রীর রয়েছে ৬ ভরি স্বর্ণ। নিজের নামে রয়েছে ডিপিএস। টিনশেড বাড়ি রয়েছে একটি; কৃষিজমি ৫৫.০৬ শতাংশ এবং অকৃষিজমি ৮ শতাংশ। সিসি ঋণ রয়েছে ২০ লাখ টাকার।

এ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী রাজু আহম্মেদ। বিএ পাশ। পেশায় ব্যবসায়ী। বর্তমানে তার নামে মামলা রয়েছে আটটি। আগে ছয়টি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকা।

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডু পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদিউল আলম। এইচএসসি পাশ। পেশায় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৪ টাকা। কৃষি খাতে আয় ৩ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৫ লাখ ১০ হাজার ৪৩০ টাকা, মেয়র পদের সম্মানী ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ব্যাংক সুদ ৪১ হাজার ১৪ টাকা আয় রয়েছে। সম্পদের মধ্যে নগদ ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮০৩ টাকা, ব্যাংকে জমা ৪ লাখ ৭ হাজার ২৯৭ টাকা, বিভিন্ন মেয়াদে জমা ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৯০০ টাকা ও অলঙ্কার রয়েছে দেড় লাখ টাকা মূল্যমানের। ছেলের কাছ থেকে রেমিট্যান্স হিসেবে পেয়েছেন ৯ লাখ ৯২ হাজার ১৬১ টাকা। এ পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল মুনছুর। তিনি নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ দাবি করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা বিচারাধীন। পেশায় ব্যবসায়ী ও দলিল লেখক। তার বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ পৌরসভার অপর স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জহিরুল ইসলাম। এইচএসসি পাশ। পেশায় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা।

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মাসুদউজ্জামান মাসুক। তিনি নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ দাবি করেছেন। তার পেশা বাড়ি ভাড়া ও দোকান ভাড়ার ব্যবসা। তার বার্ষিক আয় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার নগদ টাকা রয়েছে ৪৫ হাজার। কাউন্সিলর থেকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এ প্রার্থীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে ২০ শতক কৃষিজমি, আট শতক অকৃষি জমি ও চার শতক জমির ওপর একতলা বিল্ডিং রয়েছে। ব্যাংক ঋণ রয়েছে ১০ লাখ টাকা।

এ পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী এম এফ আহমেদ অলি। তিনি নবম শ্রেণি পাশ। পেশার বিবরণীতে তিনি লিখেছেন গৃহসম্পত্তি ও কৃষি আয়। কিন্তু তিনি এই পেশা থেকে কোনো বার্ষিক আয় দেখাননি। তার নামে মামলা রয়েছে ১০টি। তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ২৮ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১ লাখ ৫১ হাজার ৫৮৫ টাকা। স্ত্রীর নামে জমা রয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার ৬২৬ টাকা। তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে একটি পাকা ঘর রয়েছে। যৌথ মালিকানায় ১৩ দশমিক ৯১ একর কৃষি, ১০৫ শতক কৃষি ও ১৮০ শতক (৫০ লাখ) জমি আছে। এসব জমির ৪৮/৭ অংশের মালিক তিনি।

এ পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ছালেক মিয়া। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। এই প্রার্থীর বার্ষিক আয় ৫২ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে কৃষি/মত্স্য খাতে আয় ৪০ লাখ ৫ হাজার টাকা, ভাড়া থেকে আয় ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ৩ লাখ ৩০ হাজার। এছাড়া (উপস্বত্ব, রয়্যালিটি) ও মেয়র হিসেবে প্রাপ্ত ভাতা থেকে আয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ পৌরসভার অপর স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবুল কাশেম। তার বার্ষিক আয় ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। নির্ভরশীলদের আয় ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার কাছে নগদ টাকা রয়েছে ২ লাখ। কৃষি জমি ১০১ শতাংশ, অকৃষি জমি ৭১.৭৫ শতাংশ। এছাড়া যৌথ মালিকায় কৃষি জমি ৪৯৪ শতাংশ, অকৃষি জমি ২৩৬.১ শতাংশ ও ৬টি বাড়ি রয়েছে। নিজের নামে ঋণ ৯ কোটি ৫০ লাখ ও স্ত্রীর নামে ঋণ ৩০ লাখ টাকা। এ পৌরসভার অপর স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফজল উদ্দিন তালুকদার। তিনি নিজেকে স্বশিক্ষিত দাবি করেছেন। অপর স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ইমদাদুল ইসলাম। স্নাতক পাশ তিনি। পেশায় ব্যবসায়ী।

ঢাকার ধামরাই পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম কবির। তিনি বিএ পাস। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা চলমান। আগে তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হলেও সেগুলোতে নিষ্পত্তি হয়েছে। তার বার্ষিক আয় ১০ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে ব্যবসা থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সম্মানীভাতা থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

বিএনপির প্রার্থী দেওয়ান নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা রয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে চারটি বিচারাধীন ও একটি উচ্চ আদালত স্থগিত করেছেন। তিনি বিএ পাশ। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫২ টাকা। এ পৌরসভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী শওকত আলী। তিনি এইচএসসি পাশ। পেশায় তিনি শিক্ষক।

খুলনার চালনা পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী সনত কুমার বিশ্বাস। শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। পেশায় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. আবুল খয়ের খানের শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন’। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একটি মামলা। তবে সেটি ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে স্থগিত। পেশায় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ১১ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ১ লাখ টাকা ও ব্যাংকে জমা ৫ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১১ একর কৃষি জমি, দশমিক ৮১ একর অকৃষি জমি, এক তলাবিশিষ্ট দালান ও বাড়ি একটি। এ পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মন্ডল। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসসি পাস, পিএইচডি ডিগ্রিও রয়েছে তার। পেশায় তিনি শিক্ষক। এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী গৌতম কুমার রায়। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি পাশ। পেশার বিবরণীতে তিনি লিখেছেন, কৃষিকাজ, গো-সেবা, ভক্তসেবা।  সবটুকু খবর পড়তে ক্লীক করুন

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply