২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১০:২২/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ১০:২২ অপরাহ্ণ

ঢাবিতে ডেঙ্গু আতঙ্ক : আক্রান্ত প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী

     

সারা দেশে ডেঙ্গুর ছড়িয়ে পড়লেও রাজধানী ঢাকায় এর মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এই ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাদ যায়নি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। ইতিমধ্যে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিটি হলেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে । ক্রমশই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমের শিক্ষার্থীরা। গণরুমে চার জনের রুমে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী বসবাস করে। স্বাভাবিকভাবেই ময়লা-আবর্জনা জমা হয় এই রুমগুলোতে। ফলে রুমেই বংশ বিস্তার করে মশা। সবমিলিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। হলগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় ফজলুল হক মুসলিম হলে ১৭ জন, মাস্টার দা’ সূর্যসেন হলে ১৩ জন, কবি জসীম উদদীন হলে ৭ জন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ১৯ জন, জগন্নাথ হল ৭ জন,সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ১৫ জন,হাজ্বী মুহম্মদ মু্হসীন হলে ১৫ জন, স্যার এফ রহমান হলে ১১ জন,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হলে ৭ জন, বিজয় ৭১ হলে ২৬ জন, রোকেয়া হলে ৩ জন, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৩ জন,শামসুন্নাহার হলে ৪ জন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে ১ জন এবং সুফিয়া কামাল হলে ৯ জন শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মত, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডেঙ্গু প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ স্যাতসেতে ময়লা পরিবেশ, যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ প্রভূতি। এছাড়া প্রশাসনের উদাসীনতা ও দায়িত্বে অবহেলাকেও দায়ী করেছেন অনেকে। তাছাড়াও যেখানে সেখানে ছড়িয়ে থাকা ওয়ান টাইম প্লেট মশা বংশবৃদ্ধির কারণ বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ডেঙ্গু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এক আতঙ্ক হয়ে দাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে মাস্টার দ্যা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মামুন বলেন, ‘আমি খুবই আতংকে আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চলার কারনে বাড়িতে যেতে পারছি না। এদিকে মা-বাবা বলেছেন, আগে জীবন,পরে পড়াশোনা। না বাঁচলে কীসের পড়াশোনা। আমরা তাদেরকে বুঝাতেও পারছিনা আবার ক্লাস থাকার কারণে বাড়িতেও যেতে পারছি না।’ ডেঙ্গু আক্রান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইমান হাসান বাংলাপোষ্ট বিডি ডটকমকে বলেন, আমি গত আটদিন থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের আছি। তিনি ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ অবস্থার জন্য গণরুমের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং প্রশাসন এর অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে মনে করেন।তিনি বলেন, মেডিকেলে রক্তের প্লাটিলেট পরিক্ষার সময় আমাদেরকে লম্বা লাইনে দাড়াতে হয়।
উদ্বেগজনক এ ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরু দৈনিক বাংলাপোষ্ট বিডি ডটকমকে জানান, হল সংসদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে মশার ওষধ ছিটানোর পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর জন্য। তিনি বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে ইতোমধ্যে রক্তের প্লাটিলেট পরিক্ষার মেশিন স্থাপন করেছি এবং ঢাকা মেডিকেলসহ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে চিকিৎসারত ঢাবি শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবায় যেন কোন ত্রুটি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে তাড়াতাড়ি ক্যাম্পাস বন্ধ করাকে আমি সমর্থন করি। যাতে ডেঙ্গুর এই মহামারী প্রবণতা থেকে শিক্ষার্থীরা রক্ষা পায় । তাছাড়াও ঈদ পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গুর এই প্রকোপ যেন কমিয়ে আনা যায় তার জন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply