২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:৩৩/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ২:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া নাঈমের পড়া লেখার দায়িত্ব নিলেন রুবেল

     

রৌমারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি 
সারা বাংলাদেশে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া নাঈমের পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাধীনতা প্রজন্মলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এস এম সাকিব আল হাসান রুবেল। । রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে আকাশচুম্বী ফারুক রূপায়ণ (এফ আর) টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে পাইপ ধরে রাখা একটি শিশুর ছবি। অধিকাংশ মানুষ যেখানে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিল সেখানে যেন ব্যতিক্রম শিশুটি। অনেকে ফেসবুকে শিশুটির ছবি শেয়ার দিয়ে তার কাজের প্রশংসা করেছেন। শিশু নাঈমের এই মানবিক কাজে খুশি হয়ে তাকে  উপহার স্বরূপ পড়ালেখার খরচ দেওয়ার ঘোষণা দিলেন রুবেল। পাশাপাশি তার যাবতীয় পড়ালেখার দায়িত্ব গ্রহণেরও কথা জানালেন তিনি। বাংলাদেশ স্বাধীনতা প্রজন্মলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাকিব আল হাসান রুবেল  জানান, ‌’আমি নাঈমের কাজে খুবই খুশি হয়েছি। নাঈম খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করছে, সে পুলিশ অফিসার হতে চায়। তার ইচ্ছে পূরণ করতে আজ থেকে তার পড়ালেখার দায়িত্ব নিচ্ছি। নাঈম কড়াইল বস্তির বড় নৌকাঘাট আরবার স্লাম আনন্দ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। একই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে নাইমের ছোট বোন। নাঈমের মা নাজমা বেগম স্বপ্ন দেখেন তার ছেলেমেয়েরা তার মতো কষ্টের জীবন কাটাবে না। সমাজের আর সব সাধারণ মানুষের মতো ভালো স্কুলে-কলেজে পড়াশোনা করে সম্মানের জীবন কাটাবে। স্বপ্ন থাকলেও দারিদ্র্যের কষাঘাত বাধা হয়ে দাঁড়ায় স্বপ্নগুলোর মাঝে।বৌবাজারের আনন্দ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাইম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাইপের লিকেজে পলিথিন পেচিয়ে ধরে বসে ছিল। বৃহস্পতিবার বনানীতে আগুনকবলিত এফআর টাওয়ার ঘিরে হাজারো মানুষের হাহাকার, আর্তনাদ। কারও সহকর্মী আটকা পড়েছে জ্বলন্ত ভবনে, কারও বা স্বজন-পরিচিত। কারও হয়তো পরিচিত কেউ নেই, তবু তার মধ্যেও হাহাকার। এক অশ্রুসিক্ত আবেগময় পরিবেশ।অগ্নিকাণ্ডে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ২১টি ইউনিটের ১৩৩ জন কর্মী। আগুনের ভয়াবহতা যখন প্রতিকূলে তখন সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী, বিমানবাহিনীর সদস্যরাও যোগ দেন উদ্ধারকাজে। সাহায্যে এগিয়ে আসে স্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা। মানুষকে বিপদের মুখে দেখে নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছে স্থানীয় অনেকেই। এগিয়ে এসেছিল ১০ বছরে এক বালকও। ছোট মনে হয়তো তাড়না বোধ করছিল বিপদে পড়া মানুষের জন্য কিছু করার। কিন্তু কী করবে সে, তাকে তো কেউ কাছাকাছি ঘেঁষতেই দেবে না। তারপর যা করল, তা তাকে বীর বানিয়ে দিয়েছে। এই বালকের নাম নাঈম। তার একটি ছবি সামাজিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ছবিতে দেখা যায় নাঈম এফআর টাওয়ারের  আগুন নেভানোরত ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপের ফাটা অংশের ওপর পলিথিন পেঁচিয়ে তার ওপর সর্বশক্তি দিয়ে আটকে রেখেছে, যাতে ঠিকমতো পানি সরবরাহ হয় অগ্নিনির্বাপন মেশিনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি আসার পর কিছু সময়ের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র ১৪ বছর বয়সের বালকের এই প্রাণপ্রাণ চেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সব পর্যায়ের মানুষ। কেউ কেউ তাকে দিয়েছেন বীরের খেতাব। ফাটা পাইপ দিয়ে পানি বেরিয়ে যাওয়ার কারণে দমকল কর্মীরা ঠিকমতো পানি পাচ্ছেন না এটেই মাথায় এসেছিল নাঈমের। আর কোনো কোনো কিছু ভাবেনি সে। নাঈম জানায়, যখন ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য সংস্থা ও সাধারণ মানুষ আগুন নেভাতে কাজ করছিল, তখন বারবার পানি শেষ হয়ে যাচ্ছিল। ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ এক জায়গায় ফাটা ছিল। ফাটা অংশ দিয়ে অনেক পানি নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তখন পাশ থেকে একটি পলিথিন নিয়ে পাইপের ফাটা অংশটি চেপে ধরে সে। নাঈম বলে, ‘আমি আর কোনো কিছু না ভেবেই এটা করেছি। আমি দেখতে ছিলাম পানি বের হচ্ছিল। আমি পাইপটারে পলিথিন দিয়ে চেপে ধরেছি, যাতে পানি বাইরে নষ্ট না হয়।’

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply