২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৮:৩০/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৮:৩০ পূর্বাহ্ণ

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী

     

ইয়া নবী সালাম ‘আলাইকা, ইয়া রসুল সালাম ‘আলাইকা
আজ ১২ রবিউল আউয়াল। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স)। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে সাইয়িদুল মুরসালিন খাতামুন নাবিইন হযরত মুহাম্মদ (স) জন্মগ্রহণ করেন পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশে। তাঁহার পিতার নাম আব্দুল্লাহ এবং মাতার নাম আমিনা। আরবি ‘ঈদ’ অর্থ আনন্দ বা খুশি। আর ‘মিলাদুন্নবী’ অর্থ নবীর (স) জন্ম। অর্থাত্ মহানবীর (স) জন্মদিনের আনন্দোত্সবের নামই ঈদে মিলাদুন্নবী (স)। একই দিনে তিনি ৬৩ বত্সর বয়সে মদীনা মোনাওয়ারায় ইন্তেকাল করেন। এইজন্য সারা বিশ্বের মুসলমানগণ তাঁহার এই জন্ম-ওফাতের দিনটিকে অত্যন্ত মর্যাদার সহিত উদযাপন করিয়া থাকেন। বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা, প্রতিষ্ঠান ও বাসায় বাসায় মিলাদ মাহফিল, আলোচনা ও নানা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পালিত হয় এই পুণ্যময় দিবসটি।
সকল দিবসই আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি। তবে কোনো কোনো দিবস আছে যাহার মর্যাদা অপরিসীম। ১২ রবিউল আউয়াল যেই দিন ও যেই মুহূর্তে মহানবী (স) এই ধূলির ধরায় তাশরিফ আনেন, সেই দিন ও মুহূর্তটি বিশ্বজগতের জন্য মহানন্দের দিন। কেননা তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ। আল্লাহ তায়ালা তাঁহাকে রহমাতুল্লিল আলামিন বা সমগ্র বিশ্বের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করিয়াছেন। তিনি বিশ্ব মানবতার প্রতীক ও সত্য-সুন্দরের বাণীবাহক। তাঁহার পরশপাথরে যাযাবর ও বর্বর আরবজাতি একটি সুমহান জাতিতে পরিণত হয়। তিনি উত্পীড়িত-নির্যাতিত মানুষ, অনাথ, দাস, কন্যাশিশু, বিধবা নারী ও গরিব-দুঃখী—সকলের ছিলেন অকৃত্রিম বন্ধু। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে হেরা গুহায় নবুয়ত লাভের পর তিনি ইসলামের বাণী প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। একসময় তিনি অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে আল্লাহর নির্দেশে মদীনায় হিজরত করেন। তাঁহার তাওহীদের বাণী প্রচারে আরব জাহানে নবজীবন সঞ্চারিত হয়, নূতন সভ্যতা-সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটে এবং উদ্ভব ঘটে এক নূতন জীবনব্যবস্থার। অচিরেই এই নূতন সভ্যতা এবং ঐক্য, শান্তি, সাম্য ও মানবকল্যাণের চিন্তাচেতনা এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের সার্বিক চিন্তা ও জীবনধারাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। নবুয়ত প্রাপ্তির মাত্র ২৩ বত্সরের ব্যবধানে এত বড় সাফল্য আর কোনো নবী-রাসূল বা মহাপুরুষ অর্জন করিতে পারিয়াছেন—ইতিহাসে এমন কোনো নজির নাই।
মহান আল্লাহ কুরআনুল কারীমের সূরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াতে বলেন, ‘(হে নবী) আপনি বলুন, মানুষের উচিত আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁহার রহমতের জন্য আনন্দ প্রকাশ করা। কারণ তাহারা যাহা কিছু সঞ্চয় করে (জ্ঞান ও সম্পদ), ইহা তাহার চাইতে উত্তম।’ অনেকে মনে করেন, আল্লাহর হাবীব হুজুর আকরামের (স) আগমনই হইল সর্বোচ্চ নিয়ামত। এইজন্য ঈদে মিলাদুন্নবীতে (স) খুশি ও আনন্দ প্রকাশের নির্দেশ দিয়াছেন তিনি। তাঁহার মর্যাদা এতই সমুন্নত যে, স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ও ফেরেশতাকূল তাঁহার প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করিয়া থাকেন (৩৩ : ৫৬)। অতএব, ঈদে মিলাদুন্নবীতে (স) আমরা বেশি বেশি করিয়া দরুদ শরীফ পাঠ করিব। তাঁহার অনুপম আদর্শে গড়িয়া তুলিব নিজেদেরকে। আমরা সবুজ শ্যামল বাংলার প্রান্তর হইতে সেই মহামানবের উদ্দেশে জানাই লাখো কোটি দরুদ ও সালাম—ইয়া নবী সালাম ‘আলাইকা, ইয়া রসুল সালাম ‘আলাইকা।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply