নওগাঁর আত্রাইয়ে শীতের প্রস্তুতি, লেপ-তোষক তৈরিতের ব্যস্ত কারিগররা
বুলবুল চৌধুরী
নওগাঁর আত্রাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। রাত শেষে ভোরে আলো ফুটলেও কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে থাকে চারপাশ। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত শীত অনুভব হলেও গত দুইদিন যাবত শীতল ঠান্ডা হাওয়া বইছে। সন্ধ্যা হলেই গরম কাপড় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনকে। সব মিলিয়ে বর্তমান আবহাওয়া তীব্র শীতের আগাম বার্তা জানাচ্ছে। উত্তারাঞ্চলে শীতের আগমনী বার্তায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছে লেপ–তোষক তৈরির কারিগররা। উপজেলা সদরের কয়েকটি লেপ–তোষকের দোকান ঘুরে এমন প্রস্তুতির চিত্রই দেখা যায়।
শীতের প্রস্তুতি হিসেবে আগেই লেপ–তোষক তৈরির অর্ডার দিয়ে রাখছেন অনেকে। নওগাঁর আত্রাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লেপ–তোষক তৈরির কারিগরদের ব্যবসায়ীক মৌসুম শীতকাল হওয়ায় নিজেদের কাজে সার্বক্ষণিক ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। আর সাধারণ মানুষ শীত থেকে রক্ষা পেতে অগ্রিম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ–তোষক তৈরির অর্ডার দিচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এবার লেপ তৈরির কাপড় ও তুলার দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
আত্রাই উপজেলার মালিপুকুর এলাকার মোহম্মাদ আলী লেপ তৈরির অর্ডার দিতে এসে বলেন, সারা দিনে হালকা কাপড় পড়লেও সন্ধ্যার পর গরম কাপড় পড়তে হয়। আর বর্তমানে রাতে কাঁথা বা চাদর গায়ে জড়িয়ে ঘুমাতে হয়। কয়েকদিন আগেও রাতে ফ্যান চালিয়ে ঘুমাতে হয়েছে। এবার শীতের শুরুতেই যে দাপট দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে প্রচুর ঠান্ডা পড়বে। তাই শীতের অগ্রিম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ তৈরির অর্ডার দিতে এসেছি।
আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার লেপ–তোষক তৈরির কারিগর রফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় এবার কাপড় ও তুলার দাম বেশি। এ কারণে লেপ–তোষক তৈরিতে অতিরিক্ত টাকা লাগছে। বর্তমানে প্রকার ভেদে লেপ–তোষক তৈরির কাপড় প্রতি গজে ১০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪শ থেকে ৪৫০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩শ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কালো রাবিশ তুলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, সাদা তুলা ৯০ থেকে ১শ টাকা করে দাম চলছে। আকার অনুযায়ী লেপ–তোষক তৈরিতে ৩শ টাকা থেকে ৭শ টাকা পর্যন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে একটি ভালো মানের লেপ তৈরি করতে খরচ হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।
এছাড়া ভালো মানের তোষক তৈরিতে গত বছর দেড় থেকে দুই হাজার টাকা লাগলেও এবারে তা বেড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০টি লেপ–তোষকের অগ্রিম অর্ডার পেয়েছি। তাই সার্বক্ষণিক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।