শীতে পিঠাপুলির উৎসব যেমন জমে ওঠে তেমনি সর্দি-কাশির প্রবণতাও বাড়ে। চিকিৎসকদের মতে, ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াতেও আনতে হবে বাড়তি সতর্কতা।

এ ঋতুতে খাবারে পাতে তুলে নিতে পারেন রসুন। তাতে সুস্থ থাকবেন পুরো শীতকালই।

রান্নায় হামেশাই ব্যবহার হয় রসুন। কিন্তু শুধু স্বাদের জন্য নয়, শরীর সুস্থ রাখতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো এ উপকরণ। এতে রসুনে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৯ ও সেলেনিয়াম রয়েছে। এছাড়া রসুনের মধ্যে রয়েছে এলিসিন নামে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই উপাদান ক্যানসারসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করতে কার্যকর। এছাড়া  এলিসিন নামক উপাদান থাকার কারণে রসুনকে ‘সুপারফুডে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শীতকালে রান্নায় রসুন ব্যবহার করলে নানাভাবে উপকার পেতে পারেন। জেনে নিন সেসব—
শীতকালে গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রসুন। এছাড়া সাইনাসের সমস্যা, জ্বর, ফলু সারানোর জন্য চিকিৎসকরা অনেক সময়েই রসুন খাওয়ার পরামর্শ দেন।

বিভিন্ন কারণে পুরুষের যৌনক্ষমতা কমে যেতে পারে। সকালে খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খেলে এই সমস্যা বাড়বে। এ বিষয়ে উৎসুক মানুষের মধ্যে দুই ধরনের মতামত আছে। পুরুষের ক্ষমতার মূল উৎস হচ্ছে রক্তের সাবলীল গতি। আর রসুনে থাকা উপাদান এই কাজ করে বলেই যৌনক্ষমতার কথা বলা হয়ে থাকে।

আলসেমির কারণে ওজনের দিকে নজর রাখা একটু কঠিন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে চিন্তামুক্ত করতে পারে রসুন। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা অনেক বেশি থাকায় বিপাকের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে রসুন। ওজন কমানোর জন্য প্রতি সকালে কাঁচা রসুন আর মধু খেতেই পারেন।

রসুন শ্বাস-প্রশ্বাসের সুবিধার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময়েই শীতকালে সর্দির জন্য বা অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার ফলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেই সময় রসুন নিয়মিত খেলে ফুসফুসের জন্য তা খুবই উপকারী হতে পারে। বিপুল পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে রসুন।

শীতে ত্বক ও চুল রুক্ষ দেখায়। খাবার পাতে নিয়মিত রসুন রাখলে কিন্তু ত্বক ও চুল, দুই-ই ভালো থাকে। শীতকালে ত্বকে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। রসুনের অ্যান্টিবায়োটিক গুণাগুণ সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখে।

শীতকালে বাতের ব্যথা বাড়ে। গাঁটে গাঁটে শুরু হয় যন্ত্রণা। নারীদের ক্ষেত্রে এস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমাতে পারে রসুন। এছাড়াও রসুন চায়ের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে—

* শরীরে অ্যামিনো অ্যাসিড হোমোসিস্টাইনের পরিমাণ কমিয়ে আনে; যা ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী।

* রসুন চা হলো শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক পানীয়; যা রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যতম উদাহরণ।

* ডায়াবেটিসের কারণে শরীরে অনেক সময় জ্বালা পোড়া হয় যা দূর করতে পারে রসুন চা।

* কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে আনে।

* রসুনে রয়েছে ভিটামিন-সি, যা শরীরের কর্মদক্ষতাকে বুস্ট করে এবং শরীরের অঙ্গ গুলোকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।

শেয়ার করুনঃ