বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমরা ছাত্রদের পক্ষে ছিলাম এবং আন্দোলন চলাকালীন সময়েও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নানা জুলুম ও অত্যাচারের শিকার হই। তারপরও আমরা স্ব-শরীরে এই আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহন করি,অন্তর্বতীকালীন সরকারের সময় এসেও পুনরায় আমরা বৈষম্যের শিকার হই। আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক বলে এই মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর এ্যাসোসিয়েশন আহবায়ক কাজী গোলাম কিবরিয়া।

সোমবার ৪ নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অডিটোরিয়াম হলে বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর এ্যাসোসিয়েশন এর আলোচনা সভায় তিনি এই দাবী জানান।

কাজী গোলাম কিবরিয়া বলেন,আমরা বিগত ১৫ বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নানা ভাবে নির্যাতিত হয়ে বৈষ্যমের শিকার হয়েছি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমরা ছাত্রদের পক্ষে ছিলাম এবং আন্দোলন চলাকালীন সময়েও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নানা জুলুম ও অত্যাচারের শিকার হই। তারপরও আমরা স্ব-শরীরে এই আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহন করি। অন্তর্বতীকালীন সরকারের সময় এসে ও পুনরায় আমরা বৈষম্যের শিকার হই। আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক। নিম্নোক্ত কারণ গুলোর কারণে আমাদেরকে পুনরায় স্ব স্ব পদে বহাল করার জন্য বিনয়ের সহিত সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।

১। সকল কাউন্সিলর সতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছেন।
২। নির্বাচিত কাউন্সিলরগণ প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের অভিভাবক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
৩। কাউন্সিলরদের পরিপূরক নির্বাচিত কাউন্সিলরই হতে পারে, অন্য কেউ নয়।
৪। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি শুধুমাত্র দাওন্ত্রিক কাজ করেন না, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের প্রতিটি বিষয়ে তরাকৃতি ও সমাধান করেন।
৫। কাউন্সিলরগণ শুধুমাত্র সরকারের যত ধরনের নাগরিক সেবা আছে এবং সরকার নাগরিকদের জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা দিতে চাই, সেগুলোই বাস্তবায়ন করাই কাউন্সিলরদের কাজ।
৬) একজন কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার পুরো মেয়াদ পর্যন্ত কাউন্সিলর হিসাবে যে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন, সেই দায়িত্ব পালন করেন, এখানে কোন প্রকার ছুটি বা ব্যাক্তি স্বাধীনতা থাকে না। যখন যে অবস্থায় ওয়ার্ড বাসীর প্রয়োজন হয় তখনই সে বিষয়ে কাউন্সিলরদের পদক্ষেপ নিতে হয়।
৭। কাউন্সিলরগণ স্ব-স্ব ওয়ার্ডের আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সর্বাদক ভূমিকা পালন করে থাকেন।
৮। দেশের যে কোন জরুরী অবস্থায় সরকারী আদেশ অনুযায়ী কাউন্সিলরগন সেই আদেশ পালন করে ।
৯। কাউন্সিলরগনদের নাগরিক সেবা শুধুমাত্র স্বাক্ষরের মাধো সাঁমাবদ্ধ নয়। নাগরিকদের প্রত্যেকটি সমস্য কাউন্সিলরগণ স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সমাধান করে থাকেন।
১০। সরকারের যতগুলো ওয়ার্ড পর্যায়ে সেবা মূলক কার্যক্রম আছে সেগুলো  দেখভাল করে থাকেনা । যেমন-ওএমএস, টিসিরি, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, শিশুভাতা, সকল   প্রকার টাকা কার্যক্রম ও সরকারী নির্দেশ অনুযায়ী সকল প্রকার সেবামূলক পরিচালনা করে থাকেন।
১১।কাউন্সিলরগণ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। যেমন- সিডিসি, পিসক্লাব, রূপান্তর ওয়ার্ড ভিশন, আশ্রয় ফাউন্ডেশন ও ব্রাক সহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।
১২। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি দলমত নির্বিশেষে সকলের জন্য সেবা দিয়ে থাকেন।
১৩। কাউন্সিলরদের অপসরনের পর থেকে নাগরিক সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হয়েছে। যার ফলে ওয়ার্ডবাসী নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন যাপন করছে। যার ফলে সরকারের ভাব মূর্তি নগরবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা এই সরকারের সফলতা দেখতে চাই। এ সরকারের ভাব মূর্তি ব্যর্থতা দেখতে চাই না। তাই সরকারের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার জন্য অপসারণকৃতদের পুণ বহালের  দাবী জানাচ্ছি।
১৪।কাউন্সিলরদের অপসারণের সুযোগে রোহিঙ্গারা ভোটার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
১৫। কাউন্সিলরদের পুনর্বহাল করা হলে তারা এই সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দিবে ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
১৬। ঢাকা উঃ এবং ঢাকা দঃ সিটি কর্পোরেশনেকে ব্যাতিত বাকী ১০ টি সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদেরকে পুনর্বহাল করার জন্য বিনয়ের সহিত সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি। ১০ টি সিটি কর্পোরেশনের ৫২৪ জন কাউন্সিলর বর্তমান সরকারের সকল কাজ ও সিদ্ধান্তে ঐক্যমত পোষণ করে এবং আগামীতে সকল উন্নয়নমূলক কাজে অংশীদার হতে চায়।
১৭। কাউন্সিলরদের অপসারণের পর দেশে বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা সুযোগে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ইভটিজিং ও মাদক সেবন ও বেচাকেনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমাতবস্থায় পূনর্বহাল অতীব জরুরী।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন  এডঃ নজরুল ইসলাম,প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, আহবায়ক কাজী গোলাম কিবরিয়া, মাহবুবুর রশিদ, মনিরুজ্জামন মুকুল,কাজী মাহবুবুর রহমান, আয়েশা আক্তার নিসা চাষী মামুন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার করুনঃ