জুলাই-২৪ ছাত্র জনতার রক্তাক্ত বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা ও সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল ১৪ অক্টোবর (২০২৪) সোমবার বিকেল ৫ টায় নগরীর চেরাগী পাহাড় চত্বরে সংগঠনের আহ্বায়ক প্রবীণ সাংবাদিক কামরুল হুদার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এবিএম ইমরান ও খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব অন্তর্বর্তী কালীন কমিটির আহ্বায়ক, ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশন অব প্রেস কাউন্সিলস্ নির্বাহী পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সাবেক সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত। প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক কাউন্সিলর ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী। বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউজগার্ডেন ২৪ এর প্রধান সম্পাদক, প্রবীণ সাংবাদিক ইসকান্দর আলী চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের সভাপতি জাহিদুল করিম কচি, আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আইএইচআরসি প্রেসিডেন্ট ও বিএনপি নেতা এম এ হাশেম রাজু।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এনডিএম এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির জনসংযোগ এবং সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি মোহাম্মদ এমরান চৌধুরী, চট্টগ্রাম এডিটর্স ক্লাব সহ-সভাপতি ও পূর্ব বাংলা সম্পাদক এম আলী হোসেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের এম্বাসেডর লায়ন ইলিয়াস সিরাজী, বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্য চট্টগ্রামের সমন্বয়ক আরিয়ান লেনিন, অপর্ণা চরণ স্কুল এন্ড কলেজের (চসিক) শিক্ষক প্রতিনিধি অধ্যাপক আব্দুল হক, খুলশী থানা মহিলা দলের সভানেত্রী মনি আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী কমলা, কোতোয়ালি থানা মহিলা দলের সভানেত্রী খালেদা আক্তার, সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী, ইসমাইল ঈমন, আশরাফ উদ্দীন, সালাউদ্দিন আহমেদ, সাদ্দাম হোসেন খালেদা আক্তার কল্পনা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিদায় হলেও তাদের সহযোগী, দুর্নীতিবাজ, নীতিগ্রস্ত সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের অপতৎপরতা এবং ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত দুই মাস আগে ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য, সম্পাদক-সাংবাদিক ও বৈষম্যবিরোধী সাংবাদিক জনতার বিশাল সমাবেশে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে যে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠিত হয় সেই কমিটিকে ফ্যাসিবাদের দোসর, আজ্ঞাবহ ও সহযোগী বিলুপ্ত সাবেক কমিটি কাজ করতে বাধাগ্রস্ত করে আসছে। সাংবাদিক জনতার রায়ে ফ্যাসিবাদের দোসর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সম্প্রতি বিলুপ্ত কমিটির কর্মকর্তারা কতিপয় দালাল ও নীতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের একজন উপদেষ্টা এবং বিএনপি-জামাতসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রধান দলগুলোর আনুকুল্য নিয়ে টিকে থাকতে চাইছে। এই ফ্যাসিস্ট সাংবাদিকরা অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র এবং গুজব-অতিরঞ্জন অব্যাহত রেখেছে। যেখানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন- সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসর, গত ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বিলুপ্ত সাবেক কমিটি কিভাবে এখনো অপতৎপরতা বন্ধ না করে টিকে থাকার সাহস দেখাচ্ছে তা রহস্যাবৃত। এই রহস্য উদ্ঘাটন করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসর বিলুপ্ত কমিটির অপতৎপরতা বন্ধ করে অন্তর্বর্তী কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ার কারণে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব গত দুই মাস ধরে বন্ধ হয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে শতাধিক সিনিয়র সদস্য সহ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য শত শত সাংবাদিক ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বক্তব্যে কাদেরী শওকত আরো বলেন, চট্টগ্রামে সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকতা এখনো পুরোপুরি ফ্যাসিবাদের প্রভাবমুক্ত হয়নি। তিনি ফ্যাসিবাদের দোসর, সুবিধাভোগী, নীতিহীন সাংবাদিকদের ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শরিক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শরিক ছাত্র জনতাকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান এবং এখনো ফ্যাসিবাদের দোসর যে সকল সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যম গুজব-অতিরঞ্জনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার, দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে অবিলম্বে তাদের বিচার দাবি করা হয়।
প্রধান আলোচক জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী বলেন, জুলাইয়ে রক্তাক্ত বিপ্লবের সুফল পেতে হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ও সাংবাদিকসহ সকল পক্ষকে মতভেদ ভুলে নিজেদের মধ্যে ঐক্য সংহতি বাড়াতে হবে। আলোচনা সভা শেষে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন নেজাম ইসলামী পার্টি বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রব্বানী।