২৭ এপ্রিল ২০২৪ / ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১২:৫০/ শনিবার
এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে জাপার লাঙ্গল ঠেকাবে ইসলামী ফ্রন্ট

     

মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে কোনো আসন না পেয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোট ছাড়ছে এম এ মান্নানের ইসলামী ফ্রন্ট। এমনকি চট্টগ্রামে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর জয় ঠেকানোর কথাও বলেছে দলটি।

মহাজোটের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি পাঠানো শুরু হয় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে। ওইদিন জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে এসে ইসলামী ফ্রন্টের নেতারা জানতে পারেন, মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে ১টি আসনও পাননি তারা।

এ বিষয়ে দলটির মহাসচিব এম এ মতিন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সম্মিলিত জাতীয় জোটের সঙ্গে চূড়ান্ত প্রতারণা করেছে জাতীয় পার্টি। সম্মিলিত জাতীয় জোটের সব চুক্তি তারা ভঙ্গ করেছে। আমরা এ জোটে আর নাই।

পরে তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ইসলামী ফ্রন্ট একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোমবাতি প্রতীক নিয়ে ২৭টি আসনে এককভাবে লড়াই করবে।

এর মধ্যে দলের মহাসচিব এম এ মতিন চট্টগ্রাম-১১, চট্টগ্রাম-১২, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দলটির যুগ্ম-মহাসচিব স ম আব্দুস সামাদ চট্টগ্রাম-৮ ও চট্টগ্রাম -১৪ আসন থেকে; দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ সাঈফুদ্দিন আহমেদ চট্টগ্রাম-২; সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইসলাম উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে; প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আবু সুফিয়ান আবেদীন চাঁদপুর-৫ আসন থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ ছাড়াও কক্সবাজার-২, ফেনী-১, চাঁদপুরের ৩ থেকে ৬ নম্বর আসন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, কিশোরগঞ্জ-৩ আসন ছাড়াও ঢাকার ৪টি, হবিগঞ্জের ২টি, মৌলভীবাজারের একটি আসন থেকে ইসলামিক ফ্রন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে জানান তিনি।

মতিন বলেন, নির্বাচনে কোনোভাবে চট্টগ্রাম থেকে জাপাকে জয়ী হতে দেব না আমরা। এ ছাড়া বাকি আসনগুলোতেও আমরা নিজেদের শক্তি অনুযায়ী লড়াই করব।

নতুন কোনো জোটে না গিয়ে দলটি আপাতত এককভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির ইস্যুতে দলটির সঙ্গে কখনও কোনো আলোচনা হয়নি এমন অভিযোগও আনেন তিনি।

ইসলামী ফ্রন্ট মহাপ্রতারিত হয়েছে উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, জাপা মহাজোটে যাবে, এ নিয়ে আমাদের সাথে কোনো আলোচনা করেনি। আসন বণ্টন ইস্যুতে যখন কথা বলতে (মহাজোটের সঙ্গে) গেল, তখন তারা সম্মিলিত জাতীয় জোট হিসেবে গেল নাকি তারা শুধু জাতীয় পার্টি হিসেবে গেল, তা আমাদের জানানো হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৫ মে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সম্মিলিত জাতীয় জোট গঠন করলে, তাতে যোগ দেয় নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল ইসলামিক ফ্রন্ট। এ ছাড়া ৩৪টি ইসলামপন্থি সংগঠনকে নিয়ে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় ইসলামী মহাজোট এবং ২০১৫ সালে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করা (পরে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়) ৩১ সংগঠনের বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ) অন্তুর্ভুক্ত হয় নতুন জোটে।

জোটগতভাবে জাতীয় ও সব পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ, সরকার গঠন এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করা এ জোটের উদ্দেশ্য বলে তখন এরশাদ জানিয়েছিলেন।

জোটের শর্তে বলা হয়েছিল, জোটের স্থায়ীত্বের জন্য রাজনৈতিক বিপদ-আপদে, সুদিন-দুর্দিনে শরিকরা একে-অপরের পাশে থাকবে। স্বার্থের কারণে কোনো দল জোট ছেড়ে যাবে না। এই অঙ্গীকার থাকবে।

সম্মিলিত জাতীয় জোটের একমাত্র নিবন্ধিত শরীক দল ইসলামী ফ্রন্টের এমন সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে জাপা মহাসচিব বলেন, তাদের জন্য মহাজোটের কোনো আসন নেই। মহাজোট সকলের আসন বণ্টন করছে। সেখানে তাদের সুযোগ নেই।

কিন্তু সম্মিলিত জোটের ভাঙনের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব রাঙা।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply