২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সন্ধ্যা ৬:৩৯/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৬:৩৯ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের পরশ পাথর শেখ হাসিনা

     

মো.ফরিদ উদ্দিন
বাংলার জনক,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।কবি ফখরুল আহমদ,সেই পাঞ্জেরী কবিতার ন্যায় দিকনির্দেশনা দিয়ে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে অবিস্মরণীয় এক সাফল্যের দিকে। টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার ফলে ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আজ বাংলাদেশ। তাঁর নেতৃত্বাধীন দেশের জিডিপির হার যেমন বেড়েছে তেমনি বহিঃবিশ্বে পরাশক্তিদের কাছে নিজেদের অবস্থান করেছে সুদৃঢ়। নদীর তলদেশ থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত বাংলাদেশকে একমাত্র শেখ হাসিনাই পৌচ্ছে দিয়েছেন।আর এ সাফল্যতা বাংলার ১৭কোটি মানুষের । পিতার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তর করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।এ জন্য দেশবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।এদেশকে উন্নয়নের গোরদোড়ায় পৌচ্ছে দিতে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে ।
জাতির পিতা স্বপ্ন দেখতেন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশের।স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ খাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। সড়ক যোগাযোগ সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ড, বিআরটিসি, বিআরটিএ এবং সেতু বিভাগের মাধ্যমে দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হচ্ছে দেশের পদ্মা সেতু। যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনে আনবে আধুনিকতার ছোঁয়া। নগরীর যানজট নিরসনে মিরপুর থেকে সেনানিবাসের উপর দিয়ে বিমানবন্দর সড়কে ফ্লাইওভার, কুড়িল ফ্লাইওভার, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, মগবাজার ফ্লাইওভার ও বনানী রেলক্রসিংয়ের ওভারপাস নির্মাণের মাধ্যমে জনগণকে দিয়েছেন স্বস্তি। যানজট নিরসনের নতুন সংযোজন মেট্রোরেল। দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ করে হচ্ছে তড়িৎ গতিতে।
বছরের প্রথম দিন প্রাইমারি, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় বিনামূল্যে বই বিতরণ করে সারা বিশ্বে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নতুন বছরের প্রথম দিন ‘বই উৎসব’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন নারী শিক্ষা ও নারী ক্ষমতায়নের ওপর। দেশের অর্থনীতিতে নারী পুরুষ উভয়েরই অবদান থাকা উচিত এই পরিপ্রেক্ষিতে নারী শিক্ষাকে আরও গতিশীল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা তহবিল গঠন করে স্নাতক পর্যন্ত উপবৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এসেছে পরিবর্তন। দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও প্রত্যেক জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের বিদ্যুৎ খাতে দিয়েছেন বিশেষ গুরুত্ব। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুতের আলো ও শিল্পোৎপাদন আরও ত্বরান্বিত করতে স্থাপন করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সাম্প্রতিক রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে নতুন রেকর্ড গড়ছে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর মান উন্নয়নেও জোর দিয়েছে সরকার। শেখ হাসিনার নির্দেশে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তারদের কমপক্ষে দুই বছর নিজ এলাকায় চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে হবে। বৃদ্ধি পেয়েছে দেশের মানুষের গড় আয়ু। বর্তমানে দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৪ বছরে উন্নীত হয়েছে। হ্রাস পেয়েছে মাতৃমৃত্যু হার ও শিশুমৃত্যু হার। এজন্যই দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে ৬ মাস করা হয়েছে। ১২৭৭৯ কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। হাসপাতালের সংখ্যা ১৬৮৩ টি থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫০১ টি। ১৫ টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
পরিবর্তন ঘটেছে প্রতিরক্ষা খাতেও। থ্রি-ডাইমেনশনাল (থ্রি-ডি) সমন্বিত প্রতিরক্ষা কৌশলে বলীয়ান হওয়ার পথে বাংলাদেশ নৌবাহিনী’কে সরকার দুটি সাব-মেরিন উপহার দিয়েছে। বন্ধু রাষ্ট্র চীন থেকে সংগৃহীত সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা পাহারা দেয়া এবং অনুপ্রবেশকারী প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
অতল সাগর থেকে রহস্যময় মহাকাশ পর্যন্ত আজ বাংলাদেশের নামাঙ্কিত হয়েছে। ১২ মে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু -১’ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ৫৭ তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট ক্লাবে প্রবেশ করে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রতি বছরে ১২৫ কোটি ডলার আয় করবে বাংলাদেশ। দেশে তৈরি বড়মাপের যুদ্ধজাহাজ জাতিকে আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান করেছে। এরকম আরেকটি ঘটনা হল খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃক নির্মিত প্রথমবারের মত বড়মাপের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ। প্রায় ৮ শত কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা শিপইয়ার্ড বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জন্য দুটি অত্যাধুনিক ‘লার্জ পেট্রোল ক্রাফট-এলপিসি’ নির্মাণ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমায় ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে প্রাপ্য জলরাশির ওপর কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়েছে। যার ফলে নীল অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত সূচিত হয়েছে বাংলাদেশের। ভারতের সঙ্গে ছিটমহল সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে ৪৭ বর্গ কি.মি. এলাকা মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং নিজ দেশের নাগরিকত্ব পেয়েছে ছিটমহলে থাকা অনেক অসংখ্য মানুষ। দেশে স্থাপিত হয়েছে হাইটেক পার্ক। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে লেনদেন, ভর্তির আবেদন, নাগরিক সুযোগ -সুবিধা ও সেবা করা হচ্ছে অনলাইনের ওপর ভিত্তিতে। এখন আর একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির জন্য দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি হতে হয় না। ঘরে বসেই ক্লিক অথবা মুঠোফোনের মাধ্যমে আবেদন করতে পাচ্ছে তারা।
কৃষকদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে তৈরী করা হয়েছে ‘কৃষি বাতায়ন।’ ৭৫ লাখের ও বেশি বেকারের কর্মসংস্থান করে দিয়েছে সরকার। নারীর ক্ষমতায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং সংসদের স্পিকার নারী। নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নারী ভিসি।পুলিশ, সেনাবাহিনী বর্ডার গার্ড নারী সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নারী শিক্ষা ও নারী ক্ষমতায়নের জন্য ‘গ্লোবাল ওমেন’স লিডারশিপ এওয়ার্ড-২০১৮’ সম্মাননা প্রদান করা হয় তাঁকে। বাংলাদেশের ব্যাংক রিজার্ভ ২৯ কোটি বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। যা রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। সরকারি ব্যাংকসমূহে চাকরি আবেদন বিনামূল্যে করে দিয়েছে সরকার। এসব উন্নয়নের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ ‘সাউথ-সাউথ এওয়ার্ড’ ইত্যাদি পুরস্কার লাভ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পার্বত্য এলাকায় শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ের মধ্যে বসবাসরত পাহাড়ী বাঙ্গালীদের মাঝে সম্প্রীতি বন্ধন সৃষ্টি করেছেন, কাধে কাঁদ মিলিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন।পাহাড়ের বনজ ও খনিজ সম্পদ রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী সংস্থাকে নিরলস ভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। পার্বত্য এলাকার সুন্দর পাহাড় গুলোকে পর্যটনের আওতায় এনে পর্যটন নগরীতে রপান্তর করার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করেছেন শেখ হাসিনা।
সফলতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও তাঁর সরকারের বিকল্প নেই। সরকারের মূল উদ্দেশ্য হলো জনগণের সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়ন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। স্বাধীনতার পর যে দেশের জনগণের খাদ্যের যোগান দেয়া ছিল সব থেকে চ্যালেঞ্জিং সেই বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। হ্রাস পেয়েছে দারিদ্রের হার। পরিবর্তিত এই বাংলাদেশের পিছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। তিনি দেশের জন্য পরশ পাথর সমতুল্য। সাংবাদিক কলাম লেখক.

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply