২ মে ২০২৪ / ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১২:১৪/ বৃহস্পতিবার
মে ২, ২০২৪ ১২:১৪ অপরাহ্ণ

পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতা

     

মাহমুদুল হক আনসারী
পরাধীনতা আর স্বাধীনতা এক কথা নয়। একটি জাতির জন্য স্বাধীনতা অর্জন ও প্রাপ্তি অনেক কিছু। ১৯৭২ সাল হতে প্রতিবছর ২৬শে মার্চ জাতীয়ভাবে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। সরকারী-বেসরকারী সব ধরনের প্রতিষ্ঠান এই দিবসটি গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে। স্কুল, কলজে, শক্ষিা প্রতষ্ঠিান দবিসটি পালন করা হয়। আলােচনা সভা, সাংস্কৃতকি অনুষ্ঠান, সমাবশে, কুচ-কাওয়াজ, ডসিপ্লে ও শরীরর্চচা প্রর্দশন করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।
প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদ্যাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যুবসমাজকে তৈরি করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সুশৃংখল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের সিলেবাস রাখতে হবে। শিক্ষা সিলেবাসে স্বাধীনতার আদর্শ মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এই মহান স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।
কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।
কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।
কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাঙ্খাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তান বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।
সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।
স্বাধীনতা কত বড় গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি সেটি পরাধীন জাতি বুঝতে পারে। আজকের ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ, বার্মার জাতিগত দাঙ্গা, আসামে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হামলা, নির্যাতন, চীনের উইঘুর মুসলমানদের ওপর ধারাবাহিক নির্যাতন অত্যাচার বলে দেয় স্বাধীনতা কত বড় মাপের অর্জন।
বাঙালী জাতি গণতন্ত্র, রাজনীতি অর্থনীতি আর ভৌগোলিকভাবে স্বাধীন। এদেশে সরকার আছে, প্রশাসন আছে, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৈৗমত্বের অতন্দ্র প্রহরী সেনা, নৌ, বিমান-বাহিনী রয়েছে। বাংলাদেশ তলা-বিহীন ঝুড়ি নয়। চিন্তা চেতনায় বুদ্ধি গবেষণায় এদেশের সফলতা আশাব্যাঞ্জক। বিজ্ঞান তথ্য প্রযুক্তি উদ্ভাবনি শক্তিতে বাংলাদেশের সফলতা প্রশংসিত হচ্ছে। শিক্ষিত মেধাবী, যোগ্য, দক্ষ, যুবকরা দেশে বিদেশে কর্ম-সংস্থান পাচ্ছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনকে এগিয়ে নিতে পারছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেধাসম্পন্ন শিক্ষিতদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে বলে মনে হয়। সঠিক সময়ে দিক নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষিত-মেধাবী যুবকদের ব্যাপকহারে কর্ম-সংস্থান করা চায়। সেইক্ষেত্রে ধর্ম-গোত্র, রাজনৈতিক বিবেচনায় যেনো মেধার প্রতি অবিচার না হয় সেই বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখা চায়।
আমাদের স্বাধীনতা গৌরব ও অহংকারের স্বাধীনতাকে হেলায় ফেলায় চিন্তা করলে হবে না। মর্ম-চেতনা, দায়িত্ববোধ থাকতে হবে সবার কাছে। স্বাধীনতা এই সময়ে দেশের আরো বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল কিন্ত তা হয়নি কেন অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে। রাজনীতি, অর্থনীতি, বিদেশনীতি সব জায়গাতে স্থিতিশীল পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার রাজনীতির নামে অপরাজনীতি, ধর্মের নামে দলাদলি, জঙ্গিবাদ প্রশ্রয়, দেয়া যাবে না। বহু গোত্র ধর্ম পেশা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসাবে দেশের স্বাধীনতাকে দেখতে ও রাখতে চায় দেশের জনতা। সব সেক্টরে স্বাধীনতার চেতনা সমন্বয় রাখতে হবে। স্বাধীনতা অর্থ যা মনে চায় তা করা ঠিক নয়। দেশ, জনগণ, স্বাধীনতা বিরোধী যেকোনো তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সংবিধান বিরোধী রাষ্ট্র বিরোধী জাতির আন্তর্জাতিক সব ধরনের অপতৎপরতা কঠোর ভাবে দমন করতে হবে।
মাতৃভূমি জনগণ দেশের সম্পদ আগ্রাসি যেকোনো শক্তি থেকে নিরাপদ রাখতে হবে। ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের চিন্তা চেতনায় মাতৃভূমির প্রতি কল্যাণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকা চায়। তবেই আমাদের স্বাধীনতা আমাদের গৌরব দীর্ঘজীবি হবে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

অবৈধ ব্যাটারী রিকশা বন্ধ না করে প্যাডেল রিকশা বন্ধ করার গভীর ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে চট্টগ্রাম মহানগরী রিক্সা মালিক চালক ঐক্য পরিষদের এক সভা আজ সন্ধ্যা ৭ টায় লালখান বাজারস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে সংগঠনের আহŸায়ক আব্দুল কাদের মজুমদারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা আমজাদ হোসেন হাজারী। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা বাবু টিটু মহাজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা আব্দুল জাহেদ জসিম, রিকশা মালিক পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম। সভায় বক্তারা বলেন, প্রশাসন উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য করে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ না করে প্যাডেল রিকশা বন্ধ করার যে পাঁয়তারা চালাচ্ছে তা আগামী দিনে চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে রিকশা উচ্ছেদের এক গভীর ষড়যন্ত্র। তাই আগামী দিনে চট্টগ্রাম মহানগরীর রিকশা মালিকদের এক প্রতিনিধি সভার ডাক দিয়ে পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করে এ ধরণের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, প্রশাসন উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য করে চট্টগ্রাম মহানগরীতে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিকশা চলাচলে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। আগামীতে এধরণের কর্মকাÐ রুখে দিতে আমরা আবারও উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব। তাই সময় থাকতে এ ধরণের অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের নিকট উদাত্ত আহŸান জানাচ্ছি। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-মহানগরী রিকশা মালিক পরিষদের সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিম কোম্পানী, মোঃ করিম কোম্পানী, মোখলেচুর রহমান, সিটি রিকশা মালিক পরিষদের সদস্য মোঃ সোহাগ, মোঃ মহিবুল্লাহ, লিটন দাশ, মুহাম্মদ সোলায়মান প্রমুখ। অবৈধ ব্যাটারী রিকশা বন্ধ না করে প্যাডেল রিকশা বন্ধ করার গভীর ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে চট্টগ্রাম মহানগরী রিক্সা মালিক চালক ঐক্য পরিষদের এক সভা আজ সন্ধ্যা ৭ টায় লালখান বাজারস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে সংগঠনের আহŸায়ক আব্দুল কাদের মজুমদারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা আমজাদ হোসেন হাজারী। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা বাবু টিটু মহাজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা আব্দুল জাহেদ জসিম, রিকশা মালিক পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম। সভায় বক্তারা বলেন, প্রশাসন উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য করে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ না করে প্যাডেল রিকশা বন্ধ করার যে পাঁয়তারা চালাচ্ছে তা আগামী দিনে চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে রিকশা উচ্ছেদের এক গভীর ষড়যন্ত্র। তাই আগামী দিনে চট্টগ্রাম মহানগরীর রিকশা মালিকদের এক প্রতিনিধি সভার ডাক দিয়ে পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করে এ ধরণের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, প্রশাসন উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য করে চট্টগ্রাম মহানগরীতে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিকশা চলাচলে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। আগামীতে এধরণের কর্মকাÐ রুখে দিতে আমরা আবারও উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব। তাই সময় থাকতে এ ধরণের অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের নিকট উদাত্ত আহŸান জানাচ্ছি। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-মহানগরী রিকশা মালিক পরিষদের সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিম কোম্পানী, মোঃ করিম কোম্পানী, মোখলেচুর রহমান, সিটি রিকশা মালিক পরিষদের সদস্য মোঃ সোহাগ, মোঃ মহিবুল্লাহ, লিটন দাশ, মুহাম্মদ সোলায়মান প্রমুখ।

Leave a Reply