২৮ এপ্রিল ২০২৪ / ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১১:৪৩/ রবিবার
এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু ও শিশু দিবস

     

মাহমুদুল হক আনসারী
বিশ্ব সম্মোহনীদের নামের তালিকায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বাগ্রে। তিনি সগৌরবে সম্মোহনীতার আসনে সমাসীন আছেন। তবে হ্যাঁ, সম্মোহনীতা হচ্ছে অত্যাকর্ষনজনিত সম্মোহনী শক্তি যা যুগে যুগে কোন না কোন ব্যক্তিত্বের প্রকাশ পায়। আর এমন ধরনের ব্যাক্তির আঙুলের ইশারায় দুনিয়ার জমিনে মহা বিপ্লব সংঘটিত হয়। ফলে গোটা মানব জাতির মুক্তি অর্জিত হয়। ইহা বস্তুত ব্যাক্তিত্ব নেতৃত্বের সর্বোচ্চ গুণাবলির সমন্বিত একটি রুপ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ সাবেক ফরিদপুর আর বর্তমান গোপালগন্জ জেলার টুঙিপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন । তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান মাতার নাম সায়েরা খাতুন । দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি পিতামাতার তৃতিয় সন্তান। ১৯২৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বয়স ৭ বছর হয় , তখন তাঁকে স্থানীয় গিমাডাঙা বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় । নয় বছর বয়সে ১৯২৯ সালে তাঁকে গোপালগন্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হয় । এরপর তিনি মিশনারি স্কুলে পড়ালেখা করেন । হঠাৎ ১৯৩৪ সালে তিনি বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে চার বছর পর্যন্ত তাঁর পড়ালেখা বন্ধ থাকে। ১৯৩৭ সালে আবারও তিনি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হোন । এই স্কুল থেকেই ১৯৪২ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করেন । এরপর তিনি ভর্তি হন কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে । হোস্টেলে থেকে তিনি পড়ালেখা করেন । ১৯৪৪ সালে কলকাতা ইসলামিয় কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন । ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করেন । ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন । কিন্তু ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিদের আন্দোলনে সমর্থন ও নেতৃত্ব দান কে কেন্দ্র করে বৈরী অবস্থার সৃষ্টি হলে । আইন বিভাগে অধ্যায়নরত অবস্থাতেই বঙবন্ধুর ছাত্র জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
বিশ্ব রাজনীতির অবিসংবাদিত কিংবদন্তি তথা বাংলা ও বাঙালী জাতির অমর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান রাজনৈতিক জীবন শুরু করার আগেই গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ দেখে নিজের ভিতর এক প্রকার কষ্ট অনুভব করতেন । অনাহারীর মুখে তুলে দিয়েছেন নিজের খাবার । এমন ঘটনা একটি দুটি নয়, অনেক শীতার্ত মানুষকে নিজের চাদর দিয়ে দিয়েছেন। তিনি তখন থেকেই ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন তিনি । অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে তিনি পিছপা হতেন না । তিনি ছিলেন মানব দরদী একজন বিশ্ব নেতা । তিনি রাজনৈতিক জীবনে পদারপণ করেই দেশ ও জাতির অঘোষিত বন্ধুর ভূমিকায় অবর্তীন হন। তাঁর স্বপ্ন ছিল বাঙালী জাতির মুক্তির সংগ্রাম । ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনৈতিক সচেতন ছিলেন । ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দির মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামীলিগের আলোচনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার নাম করন করেন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষক দরিদ্র মেহনতি মানুষের অঘোষিত নেতা। দু:খী মানুষের পরম বন্ধু। শিশু থেকে সকল বয়সের মানুষ তাকে ভালোবাসত। ছাত্রজীবন থেকে তাঁর তী² মেধা ও নেতৃত্বের প্রকাশ ঘটে।
অবিসংবাদিত জাতির জনককে ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপদগামী একটি অংশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নং রোড়ে ঐতিহাসিক ঘরটিতে এক জঘন্যতম হামলা চালিয়ে হত্যা কান্ডটি ঘটায়। সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ব্যতিত নিকটাত্মীয় স্বজনসহ সপরিবারে শহিদ হন তিনি। ইতিহাসের জঘন্যতম একটি অধ্যায় ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট। সে কালো রাতকে কেউ ভুলতে পারবে না। জঘন্যতম এ হত্যাকান্ডের ইতিহ্সা পৃথিবীর ইতিহাসে লিপিবদ্ধ।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন মন্ত্রিসভা ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনকে জাতীয় শশিু দবিস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ থেকে দিনটি সরকারিভাবে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বঙ্গবন্ধুর ১০৪ তম জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস সর্বাত্মক সফল হোক। প্রতিটি শিক্ষা স্কুল, কলজে, বশ্বিবদ্যিালয়ে পালিত হোক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বাষির্কী এবং শিশু দিবস। সকল শিশুর আত্মার সাথে বঙ্গবন্ধুর আত্মার যোগসূত্র পাওয়া যায়। সাধারণ পরিবারের অসাধারণ প্রতিভার প্রতিফলন বঙ্গবন্ধু। সকল শিশুর মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিফলন গড়ে উঠুক। জাতির পিতার আদর্শ চিন্তা ও চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ আগামী দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হোক।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply