২৮ এপ্রিল ২০২৪ / ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৪:৩৮/ রবিবার
এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ৪:৩৮ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় উন্নয়নে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর ভূমিকা

     

মাহমুদুল হক আনসারী
অব্যাহত উন্নয়ন অগ্রগতি সাফল্য বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশের অর্জন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথেষ্ট আলোচনা হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মসংস্থান শ্রমবাজার রেমিটেন্স প্রাপ্তি স্বাস্থ্যখাত বয়ষ্ক ও বিধবাভাতা, শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার হ্রাস সহ বাংলাদেশ এখন দুনিয়াব্যাপী আলোচনার একটি কেন্দ্র। শিক্ষা স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়ন গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত জনগণের নাগালের মধ্যে সব সেব প্রতিষ্ঠান হাতের মুঠোই। ভূমি ব্যবস্থাপনা কর ট্যাক্স আদায় নানাক্ষেত্রে সাফল্য এখন উল্লেখযোগ্য হারে দৃশ্যমান। এই সফলতা ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকার অন্যতম কারণ।
সরকারের দীর্ঘমেয়াদী সুচিন্তিত দক্ষ কর্মসূচী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ইত্যাদি পরিকল্পনা যথাসময়ে বাস্তবায়ন হওয়াতে দেশের জনগণ নানা ক্ষেত্রে তার সফলতা ভোগ করছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংসদ ভবন পর্যন্ত ই সেবার মাধ্যমে সাধারণ জনগণ কৃষক শ্রমিক পিছিয়ে থাকা মানুষগুলো এগিয়ে আসছে। শিক্ষা দিক্ষায় গাঁ গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রযুক্তির সমস্ত সেবা ভোগ করতে পারছে। দিন মজুর কৃষক শ্রমিকের ছেলে সন্তানরা উচ্চ শিক্ষা অর্জন করছে। তারা কঠোর সাধনা পরিশ্রমের মাধ্যমে সরকারী বেসরকারী নানা ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান পেয়ে যাচ্ছে। সারা দেশে বিভিন্ন জেলাতে শিল্পাঞ্চল শিল্পজোন তৈরি হচ্ছে। সেই সব শিল্পজোন গুলো যদি নির্দিষ্ট সময়ে উৎপাদনে যেতে পারে তাহলে সেই জায়গায় দেশের লাখ লাখ শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত যুবক যুবতীরা কর্মসংস্থান পাবে।
তবে চট্টগ্রামের মিরশ^রাই শিল্পজোন ঘোষণা হয়েছে অনেক সময় পার হল। বহু শিল্প মালিক দেশী বিদেশী সংস্থা প্রতিষ্ঠান সেখানে জমি বরাদ্দ পেয়েছে। সরে জমিনে দেখা গেছে কয়েকশত একর জমি সেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে আছে। সেই জমিগুলো যেসব প্রতিষ্টান বরাদ্দ নিয়েছে তারা পাচ ভাগ ও এখনও পর্যন্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কার্যক্রম হাতে নিতে দেখা যাচ্ছেনা। কবে নাগাদ এই শিল্পজোন পুরোপুরিভাবে চালু হবে সেই কথা এখনও বলতে পারছিনা। ফলে শত শত একর জমি বর্তমানে অনাবাদি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এটা মোটেও ভাল কথা নয়। যেহেতু শিল্প প্রতিষ্ঠান এখনো গড়ে ওঠেনি কিন্ত সেই জায়গায় অন্যকোনো ফসল উৎপাদনও যদি করা যেতো জাতীয়ভাবে দেশ উপকৃত হতো। পরিকল্পনা বিদ শিল্প মন্ত্রণালয় শিল্প মন্ত্রী এই জোনের সাথে যারাই সম্পৃক্ত আছেন তারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে আমাদের কথা হলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই জোনটি চালু করতে পারলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সফলতা আরো বৃদ্ধি পাবে। কর্মসংস্থানের তৈরি হবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিন মার্চ ডিসি সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নানা বিষয়ের ওপর ভাষণ রেখেছেন। মাননীয় জেলা প্রশাসকদের সেই সম্মেলনে তিনি কর্মসংস্থান প্রকল্প গ্রহণ অপব্যয় নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা অর্থের অপচয় রোধ করা, কিশোর অপরাধ সহ নানা জাতীয় বিষয়ে তিনি অত্যন্ত ভাষণ রেখেছেন জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে। তিনি সেই ভাষণে জেলা প্রশাসকদেরকে জনগণের সেবক হিসেবে জনগণের সুখ দুঃখে তাদের পাশে থেকে উন্নত সেবা দেয়ার জন্য বলেছেন। আমাদের ক্ষমতা ভোগ করার জন্য নয়। জাতিকে সেবা দিয়ে দেশকে আরো সফলতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য স্মার্ট জনগণ স্মার্ট জাতি তৈরি করে ভিশন-৪১ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কাজ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
একটি কথা এখানে না বললে হয় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত আন্তরিক হৃদ্যতাপূর্ণ। তিনি যেভাবে দেশ জাতি জনগণকে ভালবেসে আন্তরিক ভাবে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করে দেশকে এগিয়ে নিতে চান সেই চিন্তা চেতনা প্রজাতন্ত্রের সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে থাকা চাই। জনগণের অনেক অভিযোগ সচিবালয় থেকে ইউপি পরিষদ পর্যন্ত সেবা সংস্থা সমূহের কাছে গেলে তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরা ভালো ব্যবহার দেন না। হয়রানী ভোগান্তি দিনের পর দিন ঘোরাঘোরি করা এই টেবিল সেই টেবিল দৌড়াতে দৌড়াতে পায়ের স্যান্ডেল শেষ হয়ে যায়। কেনো এরকম হবে? প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা নিশ্চয়ই জনগণের ট্যাক্সে তাদের বেতন ভাতা হয়ে থাকে। কিন্তু সেই জনগণ সরকারী দপ্তরগুলোতে গেলে বিড়ম্বনার স্বীকার হয়।
অর্থ ছাড়া ফাইল নড়া চড়া করেনা। চাকরী পেতে বৈধভাবে পদোন্নতি ট্রান্সফার হতেও বড় অঙ্কের দিতে হয় বলে জানা যায়। এই ধরনের ভোগান্তি আমরা চাই না। এইসব অন্যায় আবদার ক্ষমতার চেয়ারের পদ পদবীর অপব্যবহার বন্ধ করা দরকার। অনেক সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট অফিস টাইমে চেয়ারে অনুপস্থিত না থাকতে দেখা যায়। চেয়ার খালি অফিস খালি। শুধু পিয়নরা অফিস পাহারা দিয়ে বসে থাকেন। জিজ্ঞেস করলে অফিসার কোথায় বলা হয় তিনি ছুটিতে আছেন। বিশেষ করে উপজেলা ও থানাতে সরকারী কর্মকর্তারা সাপ্তাহে মনে হয় দুই তিন দিনও অফিস করেন না। ডিসি সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেসব দিক নির্দেশনা পূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন সেই ভাষণের আলোকে মাননীয় জেলা প্রশাসকদের স্থানীয় পর্যায়ের সকল সরকারী কর্মচারী কর্মকর্তাদের কাজের জবাবদিহিতা জনগণের দায়বদ্ধতার প্রতি আরো দায়িত্বশীল হওয়ার প্রত্যাশা।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply