২৮ এপ্রিল ২০২৪ / ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১০:৫৫/ রবিবার
এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

স্বরণ : জননেতা মরহুম সাবেক এম, পি ইদ্রিস বি,কম

     

ছাবের আহমদ চৌধুরী

২২ জুলাই মরহুম ইদ্রিস বি,কমের ২১তম মৃত্যু বার্ষিকী। ১৯৩৫ সালে চট্টগ্রামের আনোয়ারার হাইলধর গ্রামে সৈয়দ বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন ।তার পিতার নাম ছিলেন মরহুম মৌলানা ফয়েজ আহমেদ তার মাতার নাম মোমেনা খাতুন।১৯৫০ সালে গাছবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রাস পাশ করেন। ১৯৫০ দশকের দিকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জ্বীবিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ছাত্র জীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ইদ্রিস বি,কম ১৯৫৩ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে আই. কম ও ১৯৫৬ সালে একই কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে বি,কম ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনে ইদ্রিস বি,কম অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন । সেই সময় জননেতা জহুর আহম্মদ চৌধুরী নিজের দলের একজন তরুন কর্মী বি,কম পাশ করার আনন্দে খুশী হয়ে ইদ্রিস বি,কম সম্বোধন করে।সেই থেকে তিনি ইদ্রিস বি,কম হিসাবে পরিচিত। ১৯৫৪-৫৫ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ছাত্র সংসদের জি, এস নির্বাচিত হন ।১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামীলীগের সদস্য পদ লাভ করনে, এর পর থেকে আওয়ামী লীগ তথা জাতীয় রাজনীতির ধারক বাহক জহুর আহম্মদ চৌধুরীর আস্থাভাজন হিসাবে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা রাজনীতে আবির্ভাব হন । ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের আনোয়ারা নির্বাচনী এলাকা থেকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট জাতির জনকের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন, তিনি এরশাদের স্বৈরশাসন আমলে জীবনের ঝুকি নিয়ে বিপুল ভোটে আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । ১৯৯৬ সালে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে প্রথম সহ-সভাপতি নির্বাচন হন । ১৯৯৯ সালে দলের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ঐ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ইদ্রিস বি, কম ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রামস্থ একটি বিদেশি ব্যংকে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসাবে চাকুরিতে যোগদান করেন। প্রায় তিন বছরের অধিক সময় চাকুরি করার পর জহুর আহম্মদ চৌধুরীর ডাকে সারাদিয়ে আবার রাজনীতে ফিরে আসেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতে গিয়ে ট্রেনিং শেষ করে, দেশে এসে জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে এবং মুক্তিযুদ্ধাদের সংগঠিত করে । জাতির পিতার হত্যার পর দলের দুঃসময়েও তিনি আদর্শচ্যুত হননি বরং দুর্দিনে দলের নেতাকর্মীদের নিজের ছেলের মত করে আগলে রেখেছিলেন। ইদ্রিস বি,কম ছাত্র জীবন থেকে অক্লান্ত পরিশ্রমী ছিলেন। তাই সংসারের বোঝা টানতে গিয়ে নিজে সংসার করতে পারলেন না। তিনি ছিলেন চিরকুমার । ইদ্রিস বি,কমের অর্থবিত্তছিল না, গাড়ী-বাড়ীর মালিক ছিলেন না, যার কারণে যারা অর্থবিত্তের মালিক না সেই নেতাদের স্বরণ সভা অথবা শোক সভা ও তেমন হয়না। ২০০১ সালের দিকে ইদ্রিস বি,কমের হাটুতে আথ্রোইটিস রোগ হয়েছিল, কিন্তু অর্থাভাবে ঠিক ভাবে চিকিৎসা করতে পারে নাই, কিন্তু কাহারো কাছে সাহায্যও চান নাই। ইদ্রিস বি,কমের ফিরিঙ্গি বাজারের বাসাটি ছিল রাজনৈতিক নেতাদের মিলন মেলা। ২০০২সালের ২২ জুলাই ফিরিঙ্গিবাজারস্থ নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আমি ইদ্রিস বি,কমের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকিতে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি তিনি যেন বেহস্থবাসী হন ।লেখক : ছাবের আহমদ চৌধুরী
সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রিয় কমিটি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply