জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ও বন্দর ডিসির নাম ভাঙিয়ে ২ ব্যক্তির চাঁদাবাজির অভিযোগ
অনুসন্ধানী প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানা বন্দরটিলা মাদ্রাজী শাহ্ রোডে ডেপুটি স্পীকার ও ডিসির নাম ভাঙিয়ে সাধারণ মানুষকে হুমকি ধমকি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবীর অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রিয়াজ ও ফারুক। বন্দরটিলা মাদ্রাজী শাহ্ রোডে বসবাসরত দুই ব্যক্তির একজন ডেপুটি স্পীকার ও অন্যজন ডিসি বন্দরের আত্নীয় পরিচয়ে নাজমুল এবং মোয়াজ্জেমনামক এ দুই ব্যক্তি চাঁদা দাবী করেন বলেন বলে প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় যে, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট থেকে জুয়া ও গরু চোরের অপবাদ নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে পালিয়ে আসা নাজমুল ও মোয়াজ্জেম চট্টগ্রাম শহরে চাকুরীর সন্ধান করলেও ৫ম শ্রেণীর সনদপত্র যোগাড় করতে না পারায় নাজমুল ফিরে যায় পুরনো জুয়া ও চুরির পেশায় আর মোয়াজ্জেম গড়ে তুলেন ইপিজেড থানাধীন রেলবিটে অবৈধ স্থাপনায় একটি টং চায়ের একটি বেচাবিক্রির দোকান।
বেচাবিক্রি তেমন না হওয়াতে নিজ চলতে দ্বায় হওয়াতে ডেপুটি স্পীকারের ছবি প্রদর্শন করে নাম ভাঙিয়ে ইপিজেডে নানান ধরনের অবৈধ অপকর্মসহ সাধারণ মানুষকে হুমকি ধমকি দিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। অপরদিকে, নাজমুল শুরু করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক ও জুয়ার আসর। বেশ ভালোই চলছিল নাজমুলের। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করতে প্রশাসনকে নির্দেশনা দিলে দেশব্যাপী মাদক ও জুয়ার বিরোধী অভিযানে নামে প্রশাসন। তখনই নাজমুলের আকাশে নেমে আসে কালো মেঘের ছাঁয়া।
নাজমুল ও মোয়াজ্জেম দুই বন্ধু মিলে শুরু করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণাসহ নানান রকমের অপরাধ ও চাঁদাবাজি। অস্ত্র হিসাবে মোয়াজ্জেম ব্যবহার করে ডেপুটি স্পীকারের ছবি ও নাম এবং নাজমুল ব্যবহার করে সাবেক বন্দর ডিসি হামিদুল্লাহ্’র নাম। এক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানায়, গায়ে ধাক্কা লাগার কারণে নাজমুল ও মোয়াজ্জেম আমাকে অনেক মারধর করে এবং জোরপূর্বক জরিমানা আদায়ও করেন। জরিমানা আদায় করার পর বলে যে, আমার বিরুদ্ধে থানায় বা অন্য কোথাও অভিযোগ করে কোন লাভ হবে না।
আমরা ডেপুটি স্পীকার ও ডিসির লোক। আমাদের কেউ কিছু করতে পারবে না। আমরা ইচ্ছা করলে যে কোন থানার ওসিকে এক ফোনে অন্যত্রে বদলী করতে পারি! ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ইয়াছিন নামক আরেক ব্যক্তি জানান, তাদের হাতে এলাকার সাধারণ মানুষসহ ক্ষুদ্র ভাসমান ব্যবসায়ীরা জিম্মি। কথায় কথায় মানুষকে স্পীকার ও ডিসির ভয় দেখায়। ওসির চেয়ার রাখবে না বলে হুমকি ধমকি দিয়ে আসে। তাই সাধারণ ভুক্তভোগী তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলার সাহস ও আইনগত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না। এলাকায় মাদক কারবারী, মাদক সেবক ও ইপিজেডের চোর চক্রের সদস্য ও টোকাইদের সাথে রয়েছে তাদের সখ্যতা।
তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে নাজমুলের বিরুদ্ধে ডিসি বন্দরের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে একটি দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালের সংবাদ প্রকাশিত হলে কিছুদিন তাদের এ অপকর্ম নিরব ছিল এবং ডিবি পুলিশও গ্রেফতার করেছিল তাদের। আকমল আলী রোডে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে গণধোলাইয়ের স্বীকার হয় একবার। তাতে কি লাভ? চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। তারা নিরবে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অপরাধ কর্মকান্ড।
ডিসি ও ডেপুটি স্পীকারের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করার বিষয়টি সম্পর্কে বর্তমান ডিসির সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ অনতিবিলম্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান।