২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:১০/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৮:১০ অপরাহ্ণ

করোনা ভাইরাস: শার্শায় জ্বর ও সর্দি-কাশির রোগীদের হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে

     

বেনাপোল প্রতিনিধি
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে যশোরের শার্শা উপজেলা বিভিন্ন হাসপাতালে জ্বর-সর্দি ও কাশি নিয়ে আসা রোগীদের ফিরিয়ে দিয়ে মোবাইল ফোনে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। এর কারণ হিসেবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট নেই জানান চিকিৎসকরা। পাশাপাশি জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হলেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে নিরুৎসাহিত করছেন তারা।
উপজেলার টেংরা গ্রামের মহব্বত আলির ছেলে চান মিয়া (৫০) বলেন, “ঢাকা থেকে ফেরার সময় ঠান্ডা লেগেছে। এ নিয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডাক্তাররা কেউ দেখেনি। তাই ঠান্ডা জ্বরের ওষুধ কিনে বাড়ি এসে হোম কোয়ারেন্টিনে আছি।”
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ ইউসুফ আলি বলেন, “আমাদের কাছে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কিট নেই। তাই তাকে চলে যেতে বলা হয়েছে।”
এদিকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘ফ্লু-কর্নার’ তৈরি করে সেখানে একটি ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়ে সর্দি, জ্বর বা গলা ব্যথার উপসর্গ হলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেবা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ও বাগআঁচড়া জোহরা মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক নাজমুন নাহার রানী বলেন, “সামান্য সর্দি, কাশি ও জ্বর হলেও মানুষজন হাসপাতালে ছুটে আসছেন। এতে করোনাভাইরাস আতঙ্কে অন্য রোগীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। এ সব বিবেচনা করে রোগীদের মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। “এতে একদিকে রোগীদের যেমন সময় বাঁচবে, তেমনই করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকিও কম থাকবে।” তাই যে কোনো স্বাস্থ্যগত পরামর্শের জন্য ০১৭১৪-৫৭২১৪৩ নম্বরে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানান তিনি।
বাগআঁচড়া জোহরা মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডাঃ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “আমাদের কাছে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কিট না থাকায় সর্দি, জ্বর বা গলা ব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও যশোর সদর  হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। ”
নাভারন পল্লি ক্লিনিকের পরিচালক আব্দুল হামিদ বলেন, “সামান্য সর্দি, জ্বর বা গলা ব্যথার উপসর্গ দেখা দিলেই গ্রামের সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করছে। কিন্তু তাদের এটা প্রয়োজন নেই। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও ৮০ শতাংশের বেশি রোগীরই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। “যাদের শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া বা আগে থেকে বিভিন্ন রোগের জটিলতা রয়েছে কেবল তাদের হাসপাতালে যাওয়া জরুরি।”
বেনাপোল রজনী ক্লিনিকের চিকিৎসক আমজেদ হোসেন বলেন, “নিজেদের ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রোগীদের পাশে থাকতে চেষ্টা করছি। তবে সর্দি, জ্বর বা গলা ব্যথার উপসর্গ থাকলে তাদেরকে সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলছি। ”
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডাঃ ইউসুফ আলি বলেন, “এখন পর্যন্ত উপজেলা ২৪২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এছাড়া উপজেলায় কোন করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) রোগে আক্রান্ত রুগি পাওয়া যায়নি।”
নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টা আইসোলেশন বেড, ৫০টি কোয়ারেন্টিন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply