২৮ এপ্রিল ২০২৪ / ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ২:১৮/ রবিবার
এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ২:১৮ অপরাহ্ণ

বিশ্বের দীর্ঘতম লবণের গুহা

     

ফ্যাকাশে ও লম্বা লবণের দণ্ডগুলো ঝুলছে গুহার ছাদ থেকে। কোথাও কোথাও কাকের চোখের মতো স্বচ্ছ লবণের স্ফটিকের দ্যুতিতে ঝলমল করছে গুহার দেয়াল। কোথাও আবার দণ্ডের গা বেয়ে চুইয়ে পড়ছে লবণপানি। ডেড সির কাছেই বিশ্বের দীর্ঘতম এ সল্ট কেভ বা লবণগুহা আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলের গুহাসন্ধানীরা। এত দিন ইরানের দখলে ছিল এ রেকর্ড। আকর্ষণীয় লবণের দণ্ডে ভরা গুহাটির নাম মালহাম।

১০ কিলোমিটারব্যাপী বিস্তৃত মালহাম ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় পাহাড় সোদমের বুক চিরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নিকটবর্তী মৃত সাগরে গিয়ে শেষ হয়েছে। মালহাম প্রথম গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমোস ফ্রামকিনের কাজের মাধ্যমে। হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের গুহা গবেষণাকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফ্রামকিন আশির দশকে গুহাটির প্রায় পাঁচ কিলোমিটার মানচিত্র তৈরি করেন। কিন্তু ২০০৬ সালে গবেষকেরা ইরানের কেশম দ্বীপে ছয় কিলোমিটারব্যাপী এন৩ গুহা আবিষ্কার করলে সারা বিশ্বে তা দীর্ঘতম লবণগুহার স্বীকৃতি পায়।

বছর দুয়েক আগে গুহাপ্রেমী ইসরায়েলি জোভ নেগেভ ফ্রামকিনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন। বুলগেরিয়ার গুহা সন্ধানীদের শীতের দিনে উষ্ণ অ্যাডভেঞ্চারের লোভ দেখিয়ে দলে-বলে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে রাজি করিয়ে ফেলেন তিনি। ইসরায়েলের গুহাসন্ধানী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা নেগেভ ইউরোপিয়ান ৮টি এবং স্থানীয় ২০টি গুহাপ্রেমী দল নিয়ে একটি টিম গঠন করেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বোয়াজ ল্যান্ডফোর্ড ও তাঁর দল। ২০১৮ সালে প্রায় ১০ দিন ধরে গুহার মানচিত্র তৈরি করেন তাঁরা।

এ বছর দ্বিতীয় দফা ১০ দিনের অভিযান চালিয়ে গুহাটির ১০ কিলোমিটারের বেশি এলাকা চিহ্নিত করেন তাঁরা। ৮০টি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গুহাপ্রেমী দল মিলে লেজারের সাহায্যে মাপ নেওয়া এবং মানচিত্র তৈরির কাজটি করে। তাদের চোখে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। সোদম পাহাড় নিজেই একটি বিশাল লবণের ব্লক, যার ওপরে রয়েছে পাথরের স্থিতিস্থাপক আস্তরণ। মরুভূমির দুর্লভ বৃষ্টি পাথরের ওই আস্তরণে আটকে থাকে। পানিতে লবণ গলে দীর্ঘদিন ধরে জমে জমে ডেড সি বা মৃত সাগরের দিকে গুহার রূপ নিয়েছে।

ফ্রামকিনের আঁকা মানচিত্রের পর গুহার পুরো কাঠামো বদলে যেতে খুব বেশি দিন সময় লাগেনি। লবণগুহার বৈশিষ্ট্য মেনে বর্তমান রূপও বেশি দিন স্থায়ী হবে না। মরুভূমি থেকে উড়ে আসা ধুলোর কারণে গুহার অভ্যন্তরে তৈরি হয়েছে বিচিত্র নকশা। বিশালাকার লবণ ফলক, আম্বার বর্ণের ধুলো আর খনিজ মিলে নাটকীয় সৌন্দর্য ধারণ করেছে। লবণ ব্লক থেকে ভেঙে পড়া পাতলা একটি ফলকের নাম রাখা হয়েছে ‘দ্য গিলোটিন’। অন্য একটি হলে যমজ ফলকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য টেন কমান্ডমেন্টস’।

গুহার সরু প্যাসেজের মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে কষ্ট করে ওয়েডিং হল বা ‘বিয়েবাড়ি’তে পৌঁছান সাংবাদিকেরা।সবটুকু খবর জানতে ক্লীক করুন

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply