চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহে ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে দেশের লাখ লাখ ওলামা-মাশায়েখের উস্তাদ ও ধর্মীয় মুরব্বি শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা. বা.)-কে জড়িয়ে রাশেদ খান মেননের বক্তব্য সমগ্র ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখ ও মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য চরম অবমাননাকর। অবিলম্বে তার শিষ্টাচারবহির্ভূত, ধৃষ্টতা ও প্রলাপপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে ধর্মপ্রাণ জনগণ রাশেদ খান মেননকে উপযুক্ত জবাব দেবেন বলে হুশিয়ারি দেন পীর সাহেব চরমোনাই। আজ (শুক্রবার), জুমার পর জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত বিশাল ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপর্যুক্ত কথা বলেন।
জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ও জামিয়া দারুল মাআরিফ আল-ইসলামিয়া চট্টগ্রামের নির্বাহী পরিচালক ড. আল্লামা জসিম উদ্দীন নদভীর সভাপতিত্ব ও সদস্য সচিব মাওলানা শেখ আমজাদ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেন, মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাই উপমহাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। দুশো বছর ধরে যারা উপমহাদেশের মানুষকে গোলামির জিঞ্জিরে আবদ্ধ করেছিল আজকের মেননরা সেই ব্রিটিশ ও পশ্চিমা সভ্যতার উচ্ছিষ্টভোগী। মাদরাসা নয়, এই মেননরাই দেশ ও জাতির জন্য বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শায়খে চরমোনাই বলেন, বিগত সংসদে কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি হয়েছে, আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা. বা.)-এর নেতৃত্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংবর্ধিত হয়েছেন। তখন রাশেদ খান মেননরা মন্ত্রী, এমপি এমনকি শিক্ষাসম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হয়েও নিশ্চুপ ছিলেন। এখন তিনি মন্ত্রিত্ব হারিয়ে পাগল হয়ে গেছেন। মেননকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করে পাবনার পাগলাগারদে পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম।
সম্মেলনে বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবী আল্লামা ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন বলেছেন, বাংলাদেশকে অস্থিতশীল করে তোলতে উগ্র সেক্যুলারিজমের মাধ্যমে একটি চক্র সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রাশেদ খান মেনন কওমি মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থা ও আল্লামা আহমদ শফীকে নিয়ে নোংরা ভাষায় যে সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রেখেছেন তা সংবিধান পরিপন্থী। মহান সংসদে প্রদত্ত কোন বক্তব্যকে কোর্টের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করার বিধান নেই, অন্যথা রাশেদ খান মেননের বক্তব্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের দৃষ্টিতে অমার্জনীয় অপরাধ।
ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার প্রধান মুফতী ও হযরত হাফিজ্জী হুজুর (রহ.)-এর বিশিষ্ট খলীফা হযরতুল আল্লামা মুফতী হাফেজ আহমদুল্লাহ, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব হযরতুল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, নাজিরহাট জামিয়া নাসিরুল উলুমের ভাইস প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবিবুর রহমান কাসেমী, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. বেলাল নুর আজীজ, আরবি ম্যাগাজিন বালাগ আশ-শরকের সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা হাফেজ ওবাইদুল্লাহ হামজা, হালিশহর জামিয়া বায়তুল করীমের নির্বাহী পরিচালক আল্লামা ফরিদ আহমদ আনসারী, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণসংযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল হক, শায়খুল হাদীস আল্লামা মুহাম্মদ আলী উসমান, মাওলানা মুফতী দেলওয়ার হোসাইন সাকী, মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা হাবিবুর রহমান মিসবাহ, মাওলানা মুফতি হাসান মুরাদাবাদী, গোলাম কিবরিয়া শরীফী ও মাওলানা আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম।