মৌলভীবাজারের কালেঙ্গায় রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভা
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণগত্যা ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চালানো গণহত্যা ও বর্বর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৪৫৩। গত ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির কর্মীসভা থেকে এই আহবান জানানো হয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চালানো গণহত্যা ও বর্বর নির্যাতনের প্রতিবাদে সভায় আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর কালেঙ্গায় প্রতিবাদ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির মোঃ শাহজাহান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস ও ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ দুলাল মিয়া, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহমুদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মালু মিয়া, প্রচার সম্পাদক মোঃ মোস্তফা মিয়া, সদস্য মোঃ জসিমউদ্দিন, আব্দুল জব্বর প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির উপর চলতি বছর কয়েক দফা বন্যায় চাল-পিয়াজসহ নিত্যপণ্যের মূল্যও সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তারউপর সরকার আবারও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব সর্বক্ষেক্ষে পড়বে। এমতবস্থায় বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছি। সেই সাথে যথাযথ ভাড়া নির্ধারণ না করায় যাত্রী সাধারণের সাথে ভাড়া নিয়ে বাদানুবাদ লেগেই থাকে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের শাররিক লাঞ্চনারও শিকার হতে হয়। তাছাড়া কোন কোন যাত্রী যাত্রা পথে এক মিনিটের কথা বলে রিকশা থামিয়ে সময় ক্ষেপন করলেও সেই অনুপাতে ন্যায্য ভাড়া পরিশোধ করেন না। একশ্রেণীর যাত্রীর জোরপূর্বক রিকশায় উঠা, এক জায়গার কথা বলে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত যাত্রী বহনে বাধ্য করা ইত্যাদি সহ্য করে আমাদের চলতে হয়। ট্রাফিক পুলিশ কর্র্তৃক অন্যায়ভাবে মারধোর, হাওয়া ছেড়ে দেওয়াসহ অন্যান্য পরিবহণের শ্রমিক, দোকানদার, পথচারীদের সাথে কোন ঘটনা ঘটলেই ন্যায়-অন্যায় বিচার না করে রিকশা শ্রমিকদের উপর জুলুম নির্যাতন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বক্তারা শ্রমিকদের হয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সকল অন্যায় অত্যাচার বন্ধ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সভা থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ন্যায্য ভাড়ার তালিকা প্রদান, শহরের সুবিধাজনক স্থানে স্থায়ী স্ট্যান্ড স্থাপন, রিকশা শ্রমিকদের উপর জুলুম অত্যাচার বন্ধ, স্বল্পমূল্যে রেশনিং চালু, বন্যা কবলিত হাওর এলাকাকে দূর্গত এলাকা ঘোষণা ও পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রদান, শ্রীমঙ্গলে স্থায়ী শ্রম আদালত ও যুগ্ম-শ্রম পরিচালকের কার্যালয় স্থাপন করার দাবি জানানো হয়।
সভায় সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বর্বর নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর কালেঙ্গায় প্রতিবাদ সমাবেশ, ১০ অক্টোবর জননেতা মফিজ আলীর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী পালন, আগামী নভেম্বরে রুশ বিপ্লবের শততম বার্ষিকী পালনসহ মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সম্মেলনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।