লাখ লাখ কচি কাঁচা শিশুরা এসব আইসক্রীম খেয়ে নানান রোগে ভোগে দেখার কেউ নেই ?
গনচিনি, চ্যাকারাইন, লোংরা পানি ও বিষক্ত ক্যামিক্যাল ব্যবহার
নিজস্ব প্রতিনিধি
পতেঙ্গা চরপাড়ায় অধিক লাভের আশায় অনুমোদনহীন আইসক্রীম ফ্যাক্টরী তৈরি করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিচ্ছে জনৈক প্লাস্টিক ফ্যাক্টরী মালিক শাহাদাত হোসেন। বর্জ্য পদার্থ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরীর কর্মীরা এখানে আইসক্রীম তৈরির কাজেও লিপ্ত। ১৮ বছরের নিচে শিশুরাই এই আইসক্রীম ফ্যাক্টরী ও প্লাস্টিক ফ্যাক্টরীর কর্মী।
জানা গেছে, ‘কিউ আই প্লাস্টিক’ ফ্যাক্টরীর আড়ালে কোন ট্রেড মার্ক ছাড়াই বিভিন্ন উন্নত ব্যাণ্ডের লেভেল লাগিয়ে প্রতিদিন ভ্যানগাড়ি যোগে আইসক্রীম সরবরাহ করা হয়। সরকারি প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র নেই তার। নেই পরিবেশ, ফায়ার সার্ভিস, বিএসটিআই ও ট্রেড লাইসেন্সও। এইসবের তোয়াক্কা করেন না মালিক দাবীদার শাহাদাত হোসেন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, গণচিনি, চ্যাকারাইন, নোংরা পানি, বিষাক্ত ক্যামিকেল ও হরেক রকম রং ব্যবহার করা হয় এখানে। পলিথিনের প্যাকেটগুলো রেডিমেইড ক্রয় করে বিভিন্ন ব্যান্ডের আইসক্রীম বানিয়ে বাজারজাত করা হয়। লেভেলসহ আইসক্রীম ফ্যাক্টরীর যাবতীয় মালামাল মুরাদপুর এলাকার নাহার এটারপ্রাইজ থেকে কেনা হয় বলে শাহাদত হোসেন এই প্রতিবেদককে জানায়।
জানা গেছে, ২০টি ভ্যান গাড়িযোগে প্রতিদিন ২ লাখ পীচ আইসক্রীম তৈরি হয় ও সরবরাহ করা হয় এখানে। ‘স্পেশাল ব্রাঞ্চি সব মালাই আইসক্রীম’ স্টেবেরী আইসক্রীম, স্বাদ ললি আইসক্রীম ও স্বাদ চকবার আইসক্রীম-এর পলিথিন প্যাকেট পাওয়া যায় সরেজমিন পরিদর্শন কালে। এসব আইসক্রীম ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। প্রতিদিন এই ফ্যাক্টরী থেকে বিপুল অংক কামিয়ে নিলেও সরকারি কাগজপত্র নিতে রাজি নয় মালিক দাবীদার শাহাদত হোসেন।
কাগজপত্র কেন নেননি এই বিষয়ে জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন বলেন বিএসটিআই, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তরের সবাই ঘুষখোর। থানা পুলিশ মোটা অংকের প্রতিদিন চাঁদা পায় বলে তার কোন সমস্যা হবে না বলে দম্ভোক্তি করেন তিনি।
সরজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ‘কিউ আই প্লাষ্টিক বর্জ্য ফ্যাক্টরী লাগানো এই আইসক্রীম ফ্যাক্টরী। পার্শ্বে রয়েছে আইসক্রীম সংরক্ষণের বিশাল গুদাম। এটি সহজে কারো চোখে পড়বে না। একটু গভীরভাবে অনুসন্ধান চালালে গুদামটি পাওয়া যাবে। কাঠগড় থেকে মেইনরোড হয়ে তেনা’ ফ্যাক্টরী সংলগ্নটি এটি অবস্থিত। সাধারণ জনগণের চোখ এড়িয়ে প্রশাসন ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এই অনুমোদনহীন আইক্রীম ফ্যাক্টরী চালাচ্ছে খুলনার নির্বাহী শাহাদত হোসেন।

এদিকে বন্দর থানাধীন ঈশান মিস্ত্রী হাটের উত্তরে খালপাড় সংলগ্ন ২টি আইসক্রীম ফ্যাক্টরী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ও অনুমোদন ছাড়াই নোংরা ময়লা পানি, বিষাক্ত ক্যামিকেল, গণচিনি ও রং ব্যবহার করে আইস বানিয়ে বিভিন্ন দোকান, স্কুল কলেজ ও মাদ্রসার গেইটে শিশুদের ঠকিয়ে আসছেন । হারুন ও মিজান নামক দুই ব্যাক্তি এই দুই ফ্যাক্টরীর মালিক । ফ্যাক্টরী দুইটি একটির সাথে একটি লাগোয়া। শিশুরাই এই দুই ফ্যাক্টরীর কর্মচারী। শিশু আইনও এখানে কার্যকর নেই।তবে শ্রম অধিদপ্তরের লোকজন এখানে মিজান ও হারুন থেকে টাকা নিয়ে যায়।
এক কিলোমিটারে পশ্চিম এলাকায় একই রকম ‘সারা আইসক্রীম ফ্যাক্টরী ‘ হুমায়ন কবীর এটির মালিক । ৩ সহোদর মিলে এই ফ্যাক্টরী চালায়। ৩ মাস পূর্বে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর এই ফ্যাক্টরীর মালিককে ১ লাখ জরিমানা করে । বহদ্দারহাট ও পতেঙ্গা থানার স্থানীয় সাবেক কমিশনারের বাড়ীর পাশে কোনার দোকান এলাকায় অবৈধ ও অনুমোদনহীন আইসক্রীম ফ্যাক্টরী রয়েছে।