দুদকে অভিযোগ: পটিয়ায় অটো টেম্পু শ্রমিক সমবায় সমিতির ৫৪ লক্ষ টাকা আত্মসাত
চট্টগ্রামের পটিয়া অটোটেম্পু শ্রমিক সমবায় সমিতি নেতৃবৃন্দর বিরুদ্ধে সমিতির সদস্যদের ৫৪ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকে লিখিত অভিযোগ করেছেন লোকমান হোসেন পাপ্পু নামের এক শ্রমিক। সমিতির আয় ব্যায়ের হিসাব চাইতে গেলে সদস্যদের উপর নির্মম নির্যাতন, মারধর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পটিয়া অটো টেম্পু শ্রমিক সমবায় সমিতির নিয়ম ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রতি বছর সমিতির সদস্যদের বার্ষিক আয় ব্যায় হিসাব দেয়া বাধ্যতামূলক থাকলেও সমিতির বর্তমান নেতৃবৃন্দ সমিতির সদস্যদের আয় ব্যায়ের কোন হিসাব না দিয়ে সভাপতি বদিউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম ও অর্থ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সেকু মিলে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। অভিযোগ উঠেছে সমিতির অর্থ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শেকু সমিতির টাকা আত্মসাৎ করে প্রায় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছে, সমিতির অর্থ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার আগে সামান্য একজন সিএনজি চালক ছিলেন। গত ২/৩ টার্ম এই পদে নির্বাচিত হওয়ার পর সদস্যদের জামানতের টাকা ও মাসিক চাঁদার টাকা আত্মসাত করে অবৈধভাবে গড়ে তোলেন, গাড়ি, বাড়ি, গাড়ির গ্যারেজ, পার্টসের দোকান, বহু জায়গা-জমির মালিক। সমিতির সদস্যরা প্রতিমাসে ৬/৭ লক্ষ টাকা চাঁদা দিলেও টাকাগুলো রুপালী ব্যাংক পটিয়া শাখা-১৪৬১১৩৪০০৮৭০২ হিসাবে জমা রাখার কথা থাকলেও টাকাগুলো ব্যাংকে জমা না রেখে সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ মিলে নির্বাচিতরা ভাগ ভাটোয়ারা করে আত্মসাত করছেন। গত ২০১৮ সালে সমিতির অডিট রির্পোটে ৩ বছরে ৫৩ লক্ষ সমিতির হিসেবে ব্যায় দেখানো হলেও জমা এক টাকাও দেখানো হয়নি। সমিতির টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সদস্যদের মধ্যে জানাজানি হলে সমিতির অর্থ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শেকু রহস্যজনকভাবে আত্মগোপনে রয়েছে বলে সমিতির সদস্যরা জানান। করোনার মধ্যে পরিবহনে কোন ধরণের চাঁদা আদায় না করার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও পটিয়া অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের নামে পুলিশের নাম দিয়ে টোকেন বাণিজ্যসহ অবৈধভাবে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া উপজেলার শান্তির হাট এলাকায় পটিয়া-আনোয়ারা-চন্দনাইশ অটোটেম্পো অটোরিক্সা ও টেক্সিকার শ্রমিক ইউনিয়নের নামে দৈনিক ৩০ টাকা করে প্রতিদিন প্রায় ৩০/ ৪০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে সংগঠনের সভাপতি নাছির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী, সহ সভাপতি মো. সোলায়মান, দপ্তর সম্পাদক আলী আকবর, অর্থ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম সেকু। উক্ত সমিতির টাকাও আত্মসাত করে আত্মগোপনে রয়েছে সমিতির অর্থ সম্পাদক শেকু। সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম রেজা জানান, পটিয়ার সাথে আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক আবার কিছুকিছু ক্ষেত্রে এক না, চাঁদাবাজির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করে থাকলে বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
এছাড়া শ্রমিকদের কাছ থেকে সমিতির নামে জোর পূর্বক চাঁদাবাজি ও সমিতির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২৮ জুন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট সাধারণ শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতা খোরশেদ আলম সমিতির সভাপতি বদিউল আলম, সহ সভাপতি লোকমান বাচা, সাধারণ সম্পাদক মো. বদিউল আলম, অর্থ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শেকুসহ মিলে ২১০০ শ্রমিক থেকে দৈনিক ১০ টাকা করে প্রতিদিন ২১ হাজার টাকা মাসে ৬লক্ষ ৩০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। টাকাগুলো একটি অংশ থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে তোলা হচ্ছে বলেও পটিয়া পৌরসভা জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি আব্দুল মজিদ, শ্রমিক নেতা আকতার হোসেন ও মোহাম্মদ ছগীর লিখিতভাবে জানান। এ বিষয়ে সমিতির সভাপতি বদিউল আলম বলেন, অর্থ সম্পাদক শেকু সমিতির টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, সমিতির টাকা ফেরত দেয়ার কথা ছিল, টাকা দেয়ার সময় হলে টাকা না দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যায় এই ঘটনায় সমিতির পক্ষ থেকে তিনি নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেছেন বলে জানান।