২৯ এপ্রিল ২০২৪ / ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:৪২/ সোমবার
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ৮:৪২ অপরাহ্ণ

ঈদের এক সপ্তাহ পূর্বেই মজুরি ও বোনাস প্রদান এবং অপ্রতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কাজ, খাদ্য ও চিকিৎসা নিশ্চয়তা এবং রেশনিং চালু করুন

     

আসন্ন ঈদুল আজহার কমপক্ষে এক সপ্তাহ পূর্বে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও মাসিক মজুরির সমপরিমান বোনাস (উৎসব ভাতা) প্রদানের করেছেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের মৌলভবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন এবং সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস। ১৪ জুলাই এক যুক্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন গত রমজানের ঈদ শ্রমিকরা প্রচণ্ড কষ্টে অতিবাহিত করেছেন। মালিকদের দুরভিসন্ধি ও অবহেলার কারণে শ্রমিকেরা বেতন-মজুরি, বোনাস নিয়ে দুর্ভোগের পাশাপাশি ছাঁটাই এবং লে অফের যন্ত্রণা ভোগ করেছেন। এই পরিস্থিতি যেন কোরবানি ঈদের সময় না করে সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন করোনা দূর্যোগে হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এবং এখনও অনেক অপ্রতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের কর্মজীবী অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সম্প্রতি কিছু সংখ্যক হোটেল রেস্টুরেন্ট খুললেও অধিকাংশ শ্রমিককে এখনও কাজে নেওয়া হয়নি। শ্রমিকদের এই দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে না কোন মালিক তাদের সহায়তা করছে না , তারা পাচ্ছে না সরকারি সহায়তাও। এই সকল শ্রমিক ও কর্মজীবী নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন নির্বাহ করার জন্য ঈদের আগেই পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করারও দাবি জানান তারা। মালিকদের অবহেলার কারণে ঈদ যেন শ্রমিকদের জন্য আশংকা ও উত্তেজনার বিষয় না হয় সে বিষয়ে নজর রাখার জন্য সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর, শ্রমঅধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন নেতৃবৃন্দ। বেতন বোনাস নিয়ে যে কোন জটিলতা সৃষ্টি হলে তার দায় মালিক ও সরকারকে বহন করতে হবে বলে নেতৃবৃন্দ হুশিয়ারি প্রদান করেন।
নেতৃৃবৃন্দ করোনার দূর্যোগকালে চা ও রাবার শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা না করা এবং দীর্ঘ ১৯ মাস অতিবাহিত হতে চললেও মজুরি বৃদ্ধি না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। করোনাজনিত পরিস্থিতিতে চা ও রাবার শ্রমিকদের ছুটির দাবি উপেক্ষা করে কাজ করতে বাধ্য করা হলেও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রেক্ষিতে মালিকপক্ষ কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। করোনা দূর্যোগে সরকারি ত্রাণ সহায়তা ও নগদ আর্থিক সহযোগিতাও চা ও রাবার শ্রমিক জোটেনি। এরকম পরিস্থিতিতে মালিকপক্ষ ২০১৮ সালে বর্তমান মজুরির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার দীর্ঘ ১৯ মাস অতিবাহিত হতে চললেও চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করছেন না। বর্তমান দ্রব্যমুল্যের ঊদ্ধগতির বাজারে চা-শ্রমিকদের সর্বোচ্চ দৈনিক
মজুরি মাত্র ১০২ টাকা। উপরন্তু এই দুর্যোগকালেও শ্রমিকদের কাজের নিরিখ(পরিমান) বৃদ্ধি করায় মতো অমানবিক ও বেআইনী পদক্ষেপ নিতেই মালিকপক্ষ পিছ পা হচ্ছেন না। মালিকদের স্বার্থরক্ষাকারী চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারাও মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে নিরব। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে ৬/৭ জনের একটি শ্রমিক পরিবার সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৬৭০ টাকার নির্ধারণ করার দাবি জানান। একই সাথে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সকল ধরনের ছাঁটাই ও লে-অফ বন্ধ, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, নৌযানসহ সকল ধরনের পরিরহন, স’মিল, রিকশা, পাদুকা, বারকি, দর্জি, নির্মাণসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সকল শ্রমিকদের কাজ, খাদ্য, চিকিৎসার নিশ্চয়তা ও পূর্ণাঙ্গ রেশনিং চালুর দাবি জানান।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply