২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১২:৪০/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ১২:৪০ অপরাহ্ণ

লামায় সাজা প্রাপ্ত আসামী ইউপি সদস্য প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে

     

লামা প্রতিনিধি 
লামায় তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য কুতুব উদ্দিন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা । জানাগেছে বিগত ২০০৯ সালে ১০ জনকে আসামী করে লামা থানায় একটি জিআর মামলা- ১৩১/২০০৯, নং-১৬, তরিখ ৩১/১/২০০৯ দায়ের হয়। ওই মামলায় রাষ্ট্র বনাম কুতুব উদ্দিন গং এর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে প্যানেল কোড ১৮৬০ এর ১৪৩/৪৪৭/৩৪১/৩২৫ ধারায় গঠিত অভিযোগের মধ্যে ৩২৫ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন কুতুব উদ্দিনকে। এ মামলার অপরাপর আরো ২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে বান্দরবান চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালত বিভিন্ন ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সাজার আদেশের রায় প্রদান করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলানিবাসী আসামী আবুল কালাম, পিতা- আলী আহম্মদ চৌধুরীকে ৩২৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোছন, পিতা আ: করিমকে ৩২৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরো সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।

এছাড়া উক্ত মামলার অন্যান্য আরো ৭জন আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে বেখসুর খালাস প্রদান করেন। খালাস প্রাপ্তরা হলো, নেজাম উদ্দিন, পিতা- মো: হাছন আলী, মো: রফিকুল ইসলাম প্রকাশ সোনা মিয়া, পিতা- মৃত ছৈয়দ আহম্মদ টুনু মিয়া, জাহেদা বেগম, স্বামী- মো: রফিকুল ইসলাম প্রকাশ সোনা মিয়া, ছেয়দ হোছন, পিতা- মৃত ছৈয়দ কাছিম আলী, সর্বসাং লামা ফাঁসিয়াখালী লামা উপজেলা, সোনা মিয়া প্রকাশ লম্বা সোনা, পিতা- মো: সিরাজ প্রকাশ ভিলেজার সিরাজ সাং কালাকাটা, কুটাখালী চকরিয়া, মো: ফরিদ, পিতা- আহম্মদ হোছেন প্রকাশ আহম্মদ সওদাগর ও বুলবুল আক্তার, স্বামী- আবুল কালাম চৌধুরী-উভয় সাং ফাঁসিয়াখালী, লামা উপজেলা। গত ২৩/১১/২০১৭ তারিখে বান্দরবান চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত এই আদেশ জারি করেন।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, কুতুব উদ্দিন, পিতা-উলা মিয়া ২০১৬ সালে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ডে সদস্য নির্বাচিত হন। বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক ২৩/১১/২০১৭ সালে তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েও সে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হিসেবে বহালতবিওতে রয়েছেন। তার ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে পত্র ইস্যু করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। বিধিমতে কোন জনপ্রতিনিধি আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হলে তার প্রতিনিধিত্ব খারিজ হয়ে, ওই আসনে উপ-নির্বাচন দিয়ে প্রতিনিধি করা অথবা নিকটতম ওয়ার্ডের সদস্যদ্বারা কার্যক্রম পরিচালনা করা। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত আসামী কুতুব উদ্দিন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডকায়! এবং ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভাগুলোতে অংশ নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি আইন সচেতন সমাজকে বিস্ময়ে হতবাক করছে। জানাযায়, লামা থানার ভুতপূর্ব অফিসার ইনচার্জকে মোটাংকের উপরি দিয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইউপি সদস্য কুতুব উদ্দিন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর চুক্তি করে। সম্প্রতি লামা থানায় নতুন ওসি যোগদানের পর কুতুব উদ্দিন নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে রাখলেও প্রায় সময় উপজেলা সদর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন জায়গায় ও পাশ্ববর্তী চকরিয়ায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়(!)।

স্থানীয় সরকার বিভাগের স্মারক নং ৪৬.০০.০৩০০.০১৭.২৭.০০১.১৮-২৯৬, তারিখ ২/৪/২০১৮ মূলে এক পত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় স্মারক নং- ০৫.৪২.০৩০০.২১০.০৩.০০১.১৬.১৮৬, তারিখ ৩০ এপ্রিল/১৮ মূলে এক পত্রে লামা উপজেলার সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনকে ‘ সদস্য কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেন। জানাগেছে, কোন মহলই এব্যাপারে এখন পর্যন্ত প্রতিবেদন দেননি।
এ ব্যাপারে ২৬ জুন লামা উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করা হলে, লামা থানা অফিসার ইনচার্জ বলেন, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে। লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর- জান্নাত রুমি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের পত্র সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply