২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৯:৪১/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

মৌলভীবাজার হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের দাবী পুরণের জন্য ডিসি বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে

     

মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্ট ২৩০৫-এর পক্ষ থেকে মহান মে দিবসে স্ববেতনে ছুটি, সরকার ঘোষিত নুন্যতম মজুরি কার্যকর ও ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রমআইন বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। আজ দুপুরে জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়ার স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রদানের পাশাপাশি স্মারকলিপির অনুলিপি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি হোটেল মালিক সমিতি, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি বরাবর প্রেরণ করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণী ছুটি ভোগ করে থাকেন। বাংলাদেশেরও সর্বস্তরের সরকারীÑবেসরকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীরা ১ মে ছুটি ভোগ করলেও আমরা হোটেল শ্রমিকরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। মে দিবসে ছুটি প্রদানের জন্য আমরা দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছি। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নিরবতা পালন করে আসছেন। মে দিবসে ছুটি প্রদানের প্রেক্ষিতে কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এমন কি শ্রমিক সংহতি দিবস পালনেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বাঁধা নিষেধ ও অনুষ্ঠানে যোগদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকেন। এছাড়া শ্রমিকদের ধারাবাহিক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের পর সরকার নতুন করে গত ১ মার্চ ২০১৭ তারিখে হোটেল সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য নি¤œতম মজুরির গেজেট(এসআরও নং ৩৮-আইন/২০১৭) প্রকাশ করেন, বর্তমান ঊর্দ্ধগতির বাজারদরে সরকার ঘোষিত মজুরিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে একজন শ্রমিক ১০ দিনও চলতে পারবে না। তারপরও মালিকরা সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি কার্যকর না করে বে-আইনীভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ শ্রম আইন-এর ৫ ধারায় নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, ৬ ধারায় সার্ভিস বই, ২(১০) ধারায় চাকুরীচ্যূতি জনিত ৪ মাসের নোটিশ পে, প্রতিবছর চাকুরীর জন্য ৪৫ দিনের গ্রাচ্যুয়েটি, ১০৩ ধারায় সপ্তাহে দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটি, ১০৮ ধারায় দৈনিক ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরি প্রদান, ১১৫ ধারায় বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি, ১১৬ ধারায় ১৪ দিন অসুস্থাতার ছুটি, ১১৭ ধারায় প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি, ১১৮ ধারায় ১১ দিন উৎসব ছুটি ও উৎসব বোনাস প্রদানের আইন থাকলেও হোটেল শ্রমিকদেরকে এই সকল আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শ্রম আইনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ ও বাসস্থানের বিধান থাকলেও শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে ও থাকতে বাধ্য হন। গত ২ জুলাই ২০১৫ মৌলভীবাজার হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সাথে শ্রমআইন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে লিখিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও অদ্যাবধি সেই চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়নি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের আবেদনে কোন পক্ষই কোন উদ্যোগ নেননি। হোটেল শ্রমিকরা দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন, যার কারণে হোটেল শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply